শুক্রবার, ১০ নভেম্বর ২০১৭

নূর হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি

Home Page » সারাদেশ » নূর হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি
শুক্রবার, ১০ নভেম্বর ২০১৭



ফাইল ছবি

আল-আমিন আহম্মেদ, বঙ্গ-নিউজ:-আজ ১০নভেম্বর বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন-সংগ্রামে এক অবিস্মরণীয় দিন। শহীদ নূর হোসেন দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী, উন্নয়ন ও রাজনৈতিক অর্থনীতি বিষয়ক গবেষক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, কলাম লেখক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৯৪-৯৫ শিক্ষাবর্ষের যুগ্মআহবায়ক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও সুনামগঞ্জ জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদারের ফেসবুক টাইম লাইন থেকে নেওয়া।

১৯৮৭, ১০ নভেম্বর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শহীদ হন নূর হোসেন। শহীদ নূর হোসেনের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।
৭ ডিসেম্বর, ২০১৬ ভারতের সাবেক কূটনীতিক ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী মণি শঙ্কর আয়ারের সঙ্গে ‘স্থানীয় সুশাসন’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাংলাদেশ’ সম্পর্কিত আলোচনায় উপস্থিত আমরা সবাই ঐকমত্য পোষণ করি ‘উন্নয়ন’ ও ‘গণতন্ত্র’ পরস্পর সমার্থক। ‘একটি দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়লেও যদি সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা না হয়, সামাজিক বৈষম্য না কমে, তাহলে সেই সমাজকে উন্নত গণতান্ত্রিক সমাজ বলা চলে না’ -মণি শঙ্কর। এ মানদণ্ডে বাংলাদেশে ‘উন্নয়ন’ ও ‘গণতন্ত্র’ সমকেন্দ্রিক।
ইকোনমিস্টে (অক্টোবর ১৩, ২০১২) প্রকাশিত বিশ্ব অর্থনীতির ওপর একটি বিশেষ প্রতিবেদনে জেনি মিন্টোন ক্রমবর্ধমান ‘গিনি কোইফিচিয়েন্সি’ বা (আয় ও বণ্টন) ‘বৈষম্য’কে আমাদের সময়ে সবচেয়ে বড় সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন। এদিক থেকেও এটা প্রশংসনীয় যে, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই অনভিপ্রেত প্রবণতা বিদ্যমান নয়। বাংলাদেশ অবশ্য এক ধাপেই এ পর্যায়ে পৌঁছেনি। এ জন্য তাকে দীর্ঘ ও ক্রমগণতান্ত্রিক সংগ্রাম করতে হয়েছে। গণতন্ত্র ব্যতীত বৈষম্যমুক্ত, সামঞ্জস্যপূর্ণ ও টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।
ফলদায়ক হওয়া সত্ত্বেও বিবর্তনের পথে আমাদের গণতন্ত্র। এর অগ্রযাত্রা বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ১৯৯০ সালে স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে সর্বদলীয় গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা গণতন্ত্রের পথে উত্তরণ করি। কিন্তু ১৯৯৬ ও ২০০৬ সালের শেষ সময় থেকে ২০০৮ সালের শেষ সময় পর্যন্ত রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা ও সমঝোতার অভাব থেকে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয়। ২০০১-০৬ সময়কালে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে। সারাদেশে যেখানে-সেখানে বোমা হামলা ঘটতে থাকে। এমনকি গণতান্ত্রিক সময়ের সবচেয়ে বিতর্কিত ও নিন্দিত ঘটনা- তৎকালীন প্রধান বিরোধী দলের জনসভায় (২১ আগস্ট) গ্রেনেড হামলা এ সময়েই ঘটে। এটি গণতান্ত্রিক চেতনা ও গণতন্ত্রের জন্য বড় অশনিসংকেত ছিল। অতঃপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে টেলিফোন আলোচনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রধান বিরোধী দলের নেতাকে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা সম্পর্কিত সংক্ষুব্ধ প্রশ্নটি ছাড়াও ১৫ আগস্টে কৃত্রিম জন্মদিন পালনের নৈতিক দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং তৎপ্রেক্ষিতে প্রধান বিরোধীদলীয় নেতার অসহনশীল তীব্র প্রতিক্রিয়া (যা গণমাধ্যমে আমরা দেখতে পাই) আলোচনা ভেস্তে দেয়। গণতন্ত্র কিছুটা হোঁচট খায়।
২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি ও তৎপরবর্তী বিরোধী দলের দায়িত্বহীন রাজনৈতিক কর্মসূচি ও মানববিধ্বংসী হরতালে অসংখ্য সাধারণ মানুষের প্রাণ গেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দায়িত্বহীন আচরণ চুলকানির মতো, যখন করা হয় তখন বুঝা যায়না। পরে বুঝা যায় তার মজা কেমন। তদ্রূপ উপরোক্ত দায়িত্বহীন আচরণ বিএনপির মতো একটি যথেষ্ট শক্তিশালী ও তাৎপর্যপূর্ণ জনসমর্থন থাকা দলকে ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।
২৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত আমার এক লেখায় আমাদের গণতন্ত্রের সমসাময়িক অগ্রগতিও তুলে ধরি।

যা হোক, মানসম্মত গণতন্ত্রে উত্তরণে নেতাদের অবশ্যই পরস্পর আস্থা ও শ্রদ্ধা রাখতে হবে। রাজনীতিবিদরা নিজেরা নিজেদের প্রতি আস্থা না রাখলে জনগণ কীভাবে তাদের প্রতি আস্থা রাখবে? বিরোধী দলগুলোকে সংসদীয় শাসনব্যবস্থার বৈশ্বিক রীতি অনুযায়ী বিদ্যমান প্রধানমন্ত্রীকে আস্থায় রেখে তার নেতৃত্বাধীন নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনেই নির্বাচনে যেতে হবে। এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের রাজনীতিবিদদের উচিত হবে নিজেদের সংকট নিজেদেরই নিরসন করা। বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের দূতিয়ালি কোনোভাবেই এ ক্ষেত্রে কাম্য নয় এবং তা আমাদের জনগণ ও রাজনীতিবিদদের জন্য সম্মানজনকও নয়। শুভ কমনা।।

© মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদারঃ একজন গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক, এবং আহ্বায়ক, বঙ্গবন্ধু পরিষদ-সুনামগঞ্জ জেলা

ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার

বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৮:০৬   ৬৮০ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #