শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

গোমতী নদীর ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » গোমতী নদীর ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে
শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৭



ফাইল ছবি     

বঙ্গ-নিউজঃ কুমিল্লার তিতাস উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের নারান্দিয়া পশ্চিমপাড়ে গোমতী নদীর ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে বেশ কিছু বসতবাড়ি ও গাছ-গাছালি। হুমকির মুখে রয়েছে আরও অনেক বসতবাড়ি, একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদ।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোমতীর ভাঙনে একের পর বিলীন হচ্ছে উপজেলার কলাকান্দি, ভিটিকান্দি নারান্দিয়া ও জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বসতবাড়ি, গাছপালা ও রাস্ত্মা-ঘাট। বিগত মৌসুমগুলোতে পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন স্থানে ইটের বস্নক, বালির বস্ত্মা ফেলা ও ডুবন্ত্ম বাঁশ নির্মাণ ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অতিনগন্য। স্থানীয়ভাবে লোকজনও বাঁশের বেড়া ও নানা কিছু ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে ভাঙন থামছে না।
এদিকে বর্ষার শুরম্নতেই আকস্মিক এ ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়ে এলাকাবাসী। দক্ষিণ নারান্দিয়ার পশ্চিমপাড় ছাড়াও আফজালকান্দি, খানেবাড়ী গৌবিন্দপুর, উত্তর ও দক্ষিণ মানিকনগর, ঘোষকান্দি, দাসকান্দি, হরিপুর বাজার, দুলারামপুর, দড়িকান্দি, নারায়ণপুর, হাইধরকান্দি, আসমানিয়া, নারান্দিয়া পূর্বপাড়, রসূলপুর, জিয়ারকান্দি, শোলাকান্দি ও লালপুর গ্রামের সংলগ্ন অংশেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে ভাঙন রোধে নূ্যনতম কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, কুমিলস্নার দুঃখ গোমতী নদী এখন তিতাসের দুঃখে পরিণত হয়েছে। গোমতীর এ ভয়ঙ্কর থাবায় ক্ষতবিক্ষত নদীর পশ্চিমপাড়ের তোফাজ্জল মাস্টার, জোহর আলী, মোকবুল আহমেদ, সাদেক হোসেন, রম্নহুল আমিন, ফজলু হক, নায়েব আলী সরকার, জাকির হোসেন, আবুল কাশেম, আবুল হাসেম, তোতা মিয়া, বিলস্নাল হোসেন, নাছির উদ্দিন, আব্দুল মালেক এবং নদীর পূর্বপাড়ের সিদ্দিকুর রহমান, কবির হোসেন, জাকির হোসেন, মহসিন ভূঁইয়া, রফিকুল ইসলাম, মাইনউদ্দিন সরকার, মোহাম্মদ আলী, দুলস্নাল মেম্বারের বাড়িসহ প্রায় ৫০টি পরিবার এবার ভাঙনের শিকার হয়েছে।
এলাকাবাসীর জানান, দক্ষিণ নারান্দিয়া পশ্চিম পাড়ের কয়েকটি বিদু্যৎ খুঁটি, দ. নারান্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একাধিক জামে মসজিদ নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটিতে উপস্থাপন করার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ইউএনও মহোদয় সরেজমিনে পরিদর্শনে আসেন। ভাঙনরোধ ও ক্ষতিগ্রস্ত্মদের পুনর্বাসনে আশ্বাস দিয়েছে। আমিও সার্বক্ষণিক পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশিস্নষ্ট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। শিগগিরই তারা ক্ষতিগ্রস্ত্ম এলাকাটি পরিদর্শনে আসবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আলমগীর হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। এ ব্যাপারে সংশিস্নষ্ট মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে অবহিত করা হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত্মদের তালিকা প্রস্তুত করে সহযোগিতার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।
কুমিলস্না-২ (তিতাস-হোমনা) আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য আমির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার বিকালে ক্ষতিগ্রস্ত্ম এলাকা পরিদর্শন করেছি। ইতোমধ্যে সংশিস্নষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে দ্রম্নত ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর যারা ক্ষতিগ্রস্ত্ম হয়েছে যাদের কোনো ভিটেমাটি নেই তাদের খাসজমিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮:৩৭:৩৩   ৫০৩ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #  #  #  #  #