মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৭

বর্মি সেনাদের পৈশাচিকতা ও রাজুমার মর্মস্পর্শী আত্মকথন

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » বর্মি সেনাদের পৈশাচিকতা ও রাজুমার মর্মস্পর্শী আত্মকথন
মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৭



বর্মি সেনাদের পৈশাচিকতা ও একজন রাজুমা
বঙ্গ-নিউজঃ রাজুমার বয়স ২০। তবে হালকা পাতলা শারীরিক গঠনের কারণে তাকে ১৪ বছর বয়সী বলেও চালিয়ে দেয়া যায়। রাজুমার কোল থেকে তার ১৮ মাস বয়সী শিশুকে কেড়ে নিয়ে আগুনে নিক্ষেপ করে পুড়িয়ে মেরেছে বর্মি সেনারা। এরপর গণধর্ষণ করা হয় তাকে। রাজুমার চোখের সামনে গণধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে তার দুই বোনকে। হত্যা করা হয়েছে তার মা ও ১০ বছর বয়সী ছোট ভাইকেও। প্রাণ নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রাজুমা আশ্রয় নিয়েছেন কক্সবাজারে কুতুপালং ক্যাম্পে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় গত ১১ অক্টোবর প্রকাশিত হয় রাজুমার ওপর সাক্ষাৎকারভিত্তিক দীর্ঘ প্রতিবেদন। সেখানে উঠে আসে রাজুমাসহ রোহিঙ্গা নারীদের প্রতি বর্মি সেনাদের পৈশাচিকতার চিত্র। পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী জেফরি জেটলম্যান রাজুমার ওপর এ সাক্ষাৎকার প্রতিবেদনটি তৈরি করেন। এরপর রাজুমাকে নিয়ে গত ১৪ অক্টোবর আলজাজিরা টেলিভিশনে রিপোর্ট প্রচারিত হয়। এভাবে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে রাজুমা ও তার পরিবারের ওপর বর্মি সেনাদের লোমহর্ষক বর্বরতার কথা। রাজুমার ওপর ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনায় তীব্র রক্তক্ষরণ হয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিক জেফরি জেটলম্যানের মনে। রাজুমার কষ্টে ভীষণ ভারাক্রান্ত তিনি। তার সে মনোবেদনার এবং রাজুমার প্রতি তার উপলব্ধির কথা তিনি মর্মস্পর্শী ভাষায় তুলে ধরেন, যা নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত হয়েছে। সারা বিশ্বের গণমাধ্যম জগতে সাড়া ফেলে জেফরি জেটলম্যানের হৃদয়ক্ষরা এ প্রতিবেদন। শুধু জেফরি জেটলম্যান নন এখন তার মতো আরো অনেকের রক্ষক্ষরণ হচ্ছে রাজুমাদের কথা জেনে।

১১ অক্টোবর রাজুমাকে নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি জেফরি জেটলম্যান শুরু করেছেন এভাবে : কয়েক শ’ নারী দাঁড়ানো নদীর মধ্যে। সেনাদের বন্দুক তাক করা তাদের দিকে। কোনো ধরনের নড়াচড়া করা যাবে না। নির্দেশ তাদের প্রতি। একদল সৈন্য এগিয়ে এল আকর্ষণীয় এক যুবতীর দিকে। তার নাম রাজুমা। বয়স ২০। বুক সমান পানিতে দাঁড়িয়ে আছে রাজুমা। আঁকড়ে ধরে আছে তার শিশুপুত্র। এ সময় রাজুমার পেছনে জ্বলছিল তাদের বাড়িঘর। রাজুমার দিকে নির্দেশ করে এক সৈনিক বলে উঠল ‘তুই’।

ভয়ে রাজুমা জমে গেল। আবার তারা বলল ‘তুই’। রাজুমা তার শিশুকে এ সময় বুকের কাছে জোরে আঁকড়ে ধরে। রাজুমার ওপর এরপর যে নির্মমতা নেমে আসে তার শুরু হয় সৈন্যদের কর্তৃক তার গালে লাঠির একটি আঘাতের মাধ্যমে। এরপর কোল থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয় ক্রন্দনরত ভয়ার্ত শিশুটিকে। নিক্ষেপ করা হলো আগুনে। রাজুমাকে টেনে নিয়ে যাওয়া হলো একটি ঘরে। এরপর তারওপর চলল সৈন্যদের গণধর্ষণ।

এক সময় অবসান হয় দিনের। রাজুমা মাঠের মধ্য দিয়ে দৌড়াতে লাগল। বিবস্ত্র, রক্তাক্ত, একা। সে হারিয়েছে তার ছেলে, মা, দুই বোন, ছোট ভাইকে। সবাইকে হত্যা করা হয়েছে তার চোখের সামনে।

রাজুমা একজন রোহিঙ্গা মুসলিম নারী যারা পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে নির্যাতিত নৃগোষ্ঠী। রাজুমা বেড়ে উঠেছে তুলাতলির একটি মহল্লায় যা মূলত ধান উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে রাজুমা জানায়, বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই সে দেখেছে তাদের গ্রামে দিগন্তে আগুনের শিখা ও ধোঁয়া। সমগ্র তুলাতলি গ্রাম সৈন্যরা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে।
২৯ আগস্ট রাতে মসজিদ থেকে একজন এসে জানাল, বৌদ্ধরা বলেছে আমাদের নদীর কাছে যাওয়া উচিত নিরাপত্তার জন্য।

রাজুমা বলল কেউ বৌদ্ধদের বিশ্বাস করে না। তাই তাদের পরিবার সিদ্ধান্ত নিলো সেখানে না যাওয়ার।
পরের দিন সকালে রাজুমা রান্নায় ব্যস্ত ছিল। এমন সময় কিছু একটা টের পেয়ে থমকে গেল। সে জানালার কাছে গেল এবং বাইরে তাকাল। সৈন্য, অনেক সৈন্য। আসছে তাদের দিকে।
রাজুমারা পালাতে চেষ্টা করল, কিন্তু পারল না। তাদের সবাইকে ধরে নিয়ে যাওয়া হলো নদীর ধারে। সেখানে তাদের মতো আরো শত শত লোক জড়ো করা হয়েছে।

রাজুমা বলল, সৈন্যরা পুরুষদের আলাদা করল নারীদের থেকে। গ্রামবাসী সৈন্যদের পায়ে লুটিয়ে পড়ল। তাদের বুট জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করল জীবন বাঁচানোর জন্য, কিন্তু সৈন্যরা তাদের লাথি মারল এবং একের পর এক সবাইকে হত্যা করল। এরপর আমাদের ধর্ষণ করল। ধর্ষণ করে অনেককে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে গেল। রাজুমার মতো তুলাতলি গ্রামের যারা বেঁচে আছে তারাও বলল একই কথা।

দুই বোনকে ধর্ষণ এবং ধর্ষণ শেষে হত্যার বিবরণ দিয়ে রাজুমা জানায়, নদীর ধারে পুরুষদের হত্যা করার পর নারী এবং শিশুদের পানিতে নেমে অপেক্ষা করতে বলে সেনারা।
পানিতে নেমে রাজুমা তার দেড় বছর বয়সী শিশু সাদেককে সর্বশক্তি দিয়ে আকড়ে ধরে রাখল, কিন্তু একজন সৈন্য এসে তার হাত ধরল। আরেকজন তাকে জাপটে ধরল। আরেকজন তার মুখে লাঠি দিয়ে আঘাত করল। রাজুমার গালে এখনো রয়েছে লাঠির আঘাতের চিহ্ন।

দেড় বছর বয়সী শিশু সাদেককে ছিনিয়ে নেয়া হলো কোল থেকে। সাদেক তার হাত-পা ছুড়ে তীব্রস্বরে চিৎকার করছিল। তারা আমার সাদেককে আগুনে নিক্ষেপ করল। জাস্ট ছুড়ে মারল।
এরপর সৈন্যরা তাকে একটি ঘরে টেনে নিয়ে গেল। তার জামা ছিড়ে ফেলল। এরপর গণধর্ষণ করল। একই রুমে সৈন্যরা তার দুই বোনকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছে। পাশের রুমে তার মা এবং ১০ বছর বয়সী ছোট ভাইকে হত্যা করছে।

রাজুমা বলে, ধর্ষণের এক পর্যায়ে সে চেতনা হারায়। যখন তার জ্ঞান ফিরল তখনো ঘরে আগুন জ্বলছে। সৈন্যরা চলে গেছে। পাশে পড়ে আছে তার দুই বোন, মা আর ছোট ভাইয়ের লাশ। উলঙ্গ আর রক্তাক্ত অবস্থায়ই সে ঝড়ের বেগে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। আত্মগোপন করল জঙ্গলে। রাত নেমে আসল, কিন্তু সে ঘুমাল না। পরের দিন সকালে কুড়িয়ে পাওয়া একটি পুরনো গেঞ্জি পরে দৌড়াতে লাগল।

রাজুমার মতো অনেকেই বলেছে তাদের সামনে হত্যা করা হয়েছে তাদের অনেক নিকটজনকে। তারা তখন এতটাই নিষ্ঠুরতার মুখোমুখি যে, আপনজনের নির্মম এ হত্যায় তারা তখন কান্না বা অশ্রুপাতের কোনো অবকাশ পাননি। এখন অনেকে সেসব বর্বরতার কথা স্মরণ করে চোখের পানি ফেলছে। রাজুমার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল পানি। রাজুমা জানায় আমার ছেলে আর কখনো আমাকে মা বলে ডাকবে না। এরপর এমনভাবে কাঁদতে লাগল যে, তার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল।

জেফরি তার প্রতিবেদনে লিখেছেন, গত আগস্টের শেষে তুলাতুলি গ্রামে রাজুমার ওপর যে নির্মমতা ঘটে গেছে আমি তার সমর্থন পেয়েছি ওই গ্রাম থেকে পালিয়ে আসা আরো এক ডজনের বেশি রোহিঙ্গা নারীদের সাথে কথা বলে। তারাও একই ধরনের বর্বরতার বিবরণ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগীদের সাথে আমার বিস্তারিত আলাপ হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, তারা দেখেছেন সৈন্যরা শিশুদের গলাকেটে হত্যা করছে, বালকদের মাথা কাটছে, মেয়েদের গণধর্ষণ করছে, বাড়ি ঘরে ৪০ মিলিমিটার গ্রেনেড ছুড়ে মারছে, পুরো পরিবারকে পুড়িয়ে মারছে, গ্রাম থেকে যুবকদের ধরে নিয়ে হত্যা করছে। খ্যাতিমান তদন্তকারী পিটার বুকায়ের্তের মতে, রাজুমাদের মতো অনেকের ওপর সৈনিকদের সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধের প্রমাণ রয়েছে। তারা ঠাণ্ডা মাথায় শুধু একটি স্থানে শতাধিক মানুষকে গলা কেটে হত্যা করেছে। এটা মানবতাবিরোধী অপরাধ। জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার সংস্থা বলেছে সৈন্যরা বাড়িঘর, ফসলের মাঠ, শষ্য, খাদ্য গুদাম, গবাদি পশু এমনকি গাছপালাও নিধন করছে যাতে কোনো অবস্থাতেই রোহিঙ্গারা সেখানে ফিরে যেতে না পারে।

জেফরি জেটলম্যান তার প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতার আরো একটি ঘটনা তুলে ধরেছেন। সেটি মাহমুদুল হাসানের ঘটনা। মাহমুদুল হাসান জানান, গত ২৭ আগস্ট মনুপাড়ার কাছে একটি সেনা ক্যাম্প থেকে ২০ জন সেনা এসে আদেশ করল সব পুরুষ এমনকি ১০ বছরের ওপরে যত ছেলে শিশু আছে সবাইকে একজন পরিচিত রোহিঙ্গা গরু ব্যবসায়ীর বাড়িতে জড়ো হতে। প্রায় চার শ’ পুরুষ ও ছেলে শিশু তারা সেখানে জড়ো করল। সেখানে যাওয়ার পর সবার হাত পিছমোড়া করে বাঁধল। এরপর মাথা নিচু করে হাঁটু গেড়ে বসিয়ে রাখল। শিশুরা তাদের মা ও বাবাকে ডাকছিল কেঁদে কেঁদে। এরপর সৈন্যরা একের পর এক গুলি করে মারতে লাগল তাদেরকে। কারো কারো ধারালো তলোয়ার দিয়ে মাথা কেটে আলাদা করল। হাসান জানান, তাকে তিন বার গুলি করা হয়েছে। দু’টি পিঠের পেছন দিয়ে এবং একটি বুকে।

কক্সবাজারের একটি হাসপাতালে শায়িত হাসান সম্পর্কে সেখানকার ডাক্তাররা জানান, তার বেঁচে থাকাটা একটি অলৌকিক ঘটনা। তিনটি গুলি তাকে করা হয়েছে তবে তিনটি গুলিই দেহের প্রধান অঙ্গ পাশ কাটিয়ে গেছে।

আমার শোনা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনা
রাজুমার কষ্ট প্রচণ্ডভাবে আচ্ছন্ন করেছে জেফরির হুদয়। সাক্ষাৎকারের পর তার কষ্টের অনুভূতি নিয়ে ১৯ অক্টোবর একটি লেখা প্রকাশ করেন ‘যার শিশুকে আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছে সেই মহিলাকে আপনি কী বলবেন’ শিরোনামে।
ওই সাক্ষাৎকারকে তিনি তার জীবনের সবচেয়ে করুণ সাক্ষাৎকার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আর রাজুমার ওপর ঘটে যাওয়া বর্বরতাকে তার শোনা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

জেফরি লিখেছেন, আমি সুদানে গণহত্যা আর ইরাকে বোমা মেরে শিশুদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া নিয়ে রিপোর্ট করেছি সেসব জায়গায় গিয়ে। আমি ভূমিকম্প, হারিকেন, গৃহযুদ্ধ, বিভিন্ন দেশের মধ্যে পারস্পরিক যুদ্ধ, বিদ্রোহ এবং দুর্ভিক্ষপীড়িত স্থানে ছুটে গিয়েছি। একজন বৈদেশিক প্রতিনিধি হিসেবে এটাই আমাকে করতে হয়। বিশ্বের সব বড় বড় বিপর্যয়ে ছুটে যেতে হয়। গত ২০ বছর ধরে এটা করতে করতে এখন আমি পরিচিতি পেয়েছি একজন হতাশা বিশেষজ্ঞ সাংবাদিক হিসেবে, কিন্তু রাজুমার ঘটনা আমাকে থামিয়ে দিয়েছে। আমি, রাজুমা ও আর একজন অনুবাদক একটি খুপড়ি ঘরে বসা ছিলাম।
প্লাস্টিকের টুলে আমরা একে অপরের দিকে ঝুঁকে রয়েছি। রাজুমা বলল, তাকে ধর্ষণের আগে তার কোল থেকে শিশুকে কেড়ে নিয়ে আগুনে নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়েছে। রাজুমা কাঁদতে শুরু করল। আমার কপালে ভাঁজ পড়ল। আমার খুব রাগ হতে লাগল নিজের ওপর। আমি কেন তাকে এ অবস্থায় নিয়ে আসলাম আবার? কেউ কি এত দুঃখজনক ঘটনার রিপোর্ট পড়তে চাইবেন? এমনকি আমিও তো এ প্রতিবেদন তৈরি করতে চাই না।

একটি একটি করে দুঃখজনক ঘটনা আমি সংগ্রহ করেছি আর তার ফলে আমার মনে প্রতিটি ক্ষত আমি হজম করেছি। যে সহনীয় ক্ষমতা আমরা জন্মগতভাবে পেয়েছি তা ক্রমাগতভাবে ক্ষয়ে যাচ্ছে একটু একটু করে। বছরের পর বছর এ ধরনের ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে করতে আমার ভেতরের সেই সহনীয় ক্ষমতা এখন তেমন আর নেই। এখন আমি এ ধরনের ঘটনা সংগ্রহ করতে গেলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। এমনকি রাজুমার সাথে সাক্ষাতের আগেও আমাকে খুব বেগ পেতে হয়েছে নিজেকে সামলাতে। প্রথম দিন আমি যখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাই তখন দেখি একটি গ্লুকোজ বিস্কুটের প্যাকেটের জন্য পশুর মতো গাদাগাদি করে রাখা একটি জায়গায় পুরুষেরা তাদের মর্যাদা রক্ষার চেষ্টা করছে। এ দৃশ্য আমাকে দংশন করেছে। আমি খুব মর্মাহত হলাম, কিন্তু শীঘ্রই জানতে পারলাম রোহিঙ্গারা দশকের পর দশক এভাবে শিকারীর তাড়া খেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
যেমন বলির পাঠা হয়েছিল নাজিদের কর্তৃক ইহুদিরা। রুয়ান্ডা গণহত্যার সময় তুতসিদের যেমন পোকামাকড় বলা হত তেমনি বৌদ্ধদের দেশ বার্মায় মুসলমানদের পোকামাকড়ের স্তরে নামিয়ে সহজ শিকারে পরিণত করা হয়েছে। আজিম ইব্রাহীম নামে একজন স্কটিশ পণ্ডিত তার ‘এ বুক অন রোহিঙ্গা’ বইয়ে লিখেছেন, অনেক প্রভাবশালী বৌদ্ধ ভিক্ষু মনে করে রোহিঙ্গারা হলোÑ পুনরায় জন্ম নেয়া শাপ বা পোকামাকড়। তাই ক্ষতিকর পোকামাকড় যেমন মেরে ফেলা হয় রোহিঙ্গাদেরও তেমনি মেরে ফেলা উচিত।

জেফরি লিখেছেন, সাক্ষাৎকার শেষ করা আমার জন্য খুব কঠিন হয়ে পড়ল। তাকে শেষ কী কথা বলে আমি বিদায় নেব? আমি জানি সে আবার ওই খুপড়ি ঘরে ফিরে যাবে আর ভাবতে থাকবে তা যা আমি তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি।

আমার মন চাইল আমার পকেটে থাকা প্রতিটি ডলার তাকে দিয়ে দেই। অথবা তাকে আলিঙ্গন করি। এখন আমার খুবই অসহায় লাগছে। একজন সাংবাদিকের জীবনে এটাই খুব অসহায় অবস্থা। আমি উঠে দাঁড়ালাম এবং কোনোমতে তার সাথে হ্যান্ডশেক করলাম। এরপর আমি তাকে বাংলায় বললাম আমি দুঃখিত। আমি এ ধরনের কয়েকটি বাংলা শব্দ শিখেছিলাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:৪০:৪৫   ১৩৪২ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #  #  #  #  #