রবিবার, ৯ জুন ২০১৩

“বাজেটের টাকা নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের শঙ্কা”

Home Page » জাতীয় » “বাজেটের টাকা নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের শঙ্কা”
রবিবার, ৯ জুন ২০১৩



budget-sm-320130606071436.jpgবঙ্গ- নিউজ ডটকমঃ  ক্ষমতাসীন সরকার প্রস্তাবিত বাজেটের বিপুল অর্থ নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করতে পরে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান।তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে বাজেটে বিপুল অর্থ নির্বাচনী কাজে ক্ষমতাসীন সরকার ব্যবহার করতে পরে। এজন্য নির্বাচনী বছরে বাজেটের অর্থ যাতে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে বিধি-নিষেধ আরোপ করতে হবে।”

তিনি বলেন, “এটি নিশ্চিত করার দায়-দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। রাজনৈতিক সুবিধার জন্য অপ্রত্যাশিত ব্যয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশন থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। সংসদ যেসব ক্ষেত্রে ব্যয়ের অনুমোদন দেয়নি, সেসব খাতে অর্থ গেলে তা নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে।”

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বেসরকারি সংস্থা ‘সমুন্নয়’ আয়োজিত এক পর্যালোচনা সভায় ড. আকবর আলি খান এ শঙ্কা প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট সুপারিশমালা তুলে ধরেন।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ।

এ সময় সাবেক এ উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনের বছরে আমলারা বড় কোনো ব্যয়ে যেতে, সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পান। আবার মন্ত্রী, সাংসদরা নির্বাচনের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাই, ব্যয় নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। আবার আয় নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। তবে আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হয়ে গেলে ভারসাম্য থাকবে না। তাই, প্রতিমাসে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি প্রতিবেদন করতে পারে, যাতে করে আয় ও ব্যয় তদারকি করা যায়।”

পদ্ম সেতু:

আকবর আলি খান বলেন, “২৫ হাজার কোটি টাকার যোগান হয়ত দেওয়া যাবে। কিন্তু দেখতে হবে, এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা আমাদের আছে কিনা। তবে ৩ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা) প্রকল্প যদি ৫ বিলিয়নে নিয়ে যাই, তবে সেটি ভিন্ন কথা। তারপরও কতদিনে, কত টাকায় পদ্মা সেতু হবে, তা কেউ জানে না।”

উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “হাতির ঝিল প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় থেকে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ব্যয় বেশি হয়েছে। আবার সময়ও লেগেছে কয়েক বছর বেশি।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নৈরাজ্যজনক! কিন্তু, তাতে অশোভন আশাবাদের অবকাশ রয়েছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন খাত আমরা সামাল দিয়েছি। তবে, পুরোপুরি সফল হইনি। তাই, সতর্কতামূলক আশাবাদ অবলম্বন করতে হবে।”

বিবিএসকে স্বাধীন করতে হবে:

সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান বলেন, “সংখ্যাতত্ত্বের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। বর্তমানে সমস্ত তত্ত্ব রাজনৈতিক উপাত্ত। কিন্তু, সংখ্যাতত্ত্বের রাজনীতিকরণ একটি দেশের জন্য মারাত্মক প্রতিক্রিয়া নিয়ে আসবে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) স্বাধীন ও নিরপেক্ষ করতে হবে। বিবিএস-এর পরিসংখ্যান অর্থমন্ত্রী ফেলে দেন। এর ফলে তার ওপর চাপ তৈরি হয়। তবে, সেন্টার ফর পলিসি ডায়গল (সিপিডি) অর্থমন্ত্রীর হিসাব না মানলে সমস্যা কোথায়?”

প্রত্যক্ষ কর:

বাজেট প্রস্তাবনায় কর প্রস্তাব বিস্তারিত বিশ্লেষণ করে উপস্থাপন করার তাগিদ দিয়ে আকবর আলি খান বলেন, “এটা বাজেটের স্বচ্ছতার জন্য অপরিহার্য।”

তার মতে, বাজেটে চটের ব্যাগে এত কাগজ দেওয়া হয়, কিন্তু তাতে এ সব তথ্য থাকে না। কার পকেট কেটে এত বেশি কর আদায় হবে, তা জানা যায় না।

তিনি বলেন, “গতবারের থেকে ২৮ হাজার কোটি টাকা বেশি আয় হবে। কিন্তু, এ টাকা আসবে কোথা থেকে? আসমান থেকে নিশ্চয়ই নয়! হয়, পুরনো করদাতা, না হলে নতুন করদাতা। কেউ তা জানেন না।”

বাংলাদেশ সময়: ১৮:২২:০৮   ৪৫৮ বার পঠিত