সোমবার, ৯ অক্টোবর ২০১৭

ওলামা-মাশায়েখ ও পেশাজীবী-বুদ্ধিজীবী সম্মেলন

Home Page » এক্সক্লুসিভ » ওলামা-মাশায়েখ ও পেশাজীবী-বুদ্ধিজীবী সম্মেলন
সোমবার, ৯ অক্টোবর ২০১৭



ফাইল ছবি। বঙ্গ-নিউজঃ নিপীড়ক সুচি ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত সমন্বয় কমিটি

আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত সমন্বয় কমিটির আয়োজনে ওলামা-মাশায়েখ, পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবী সমাবেশ  ৮ অক্টোবর রোববার বিকেলে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা এম এ মতিন এতে সভাপতিত্ব করেন। সম্মেলনে ওলামা-মাশায়েখ, পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবীরা বলেছেন, মিয়ানমার ও ইসরাইল এ দুটি রাষ্ট্রই আজ সন্ত্রাসবাদী চেহারায় আবির্ভূত হয়েছে। শান্তিতে নোবেলজয়ী সুচির দেশ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানরা জঘন্য নিপীড়ন ও জুলুমের শিকার হলেও সুচি সরকারের নির্মমতা থামাতে জাতিসংঘ এবং শক্তিধর দেশগুলো পর্যন্ত আজ বড় অসহায়। রোহিঙ্গা মুসলিমরা মিয়ানমারের আদি বাসিন্দা। অথচ তাদেরকে যুগ যুগ ধরে নাগরিক স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে না। সকল মৌলিক অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত। বক্তারা সুচি ও বর্মী সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করাসহ অবিলম্বে রোহিঙ্গা নিপীড়ন থামাতে জাতিসংঘের সক্রিয় পদক্ষেপ কামনা করেন। রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে সসম্মানে পূর্ণ নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার এবং তাদেরকে রাখাইন (আরাকান) রাজ্যে ফিরিয়ে নেয়াসহ আহলে সুন্নাতের ৯ দফা দাবি সমর্থন ও সংহতি জানিয়ে ওলামা-মাশায়েখ ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ বলেন, এ মজলুম মানুষগুলো যতক্ষণ আমাদের দেশে আশ্রয়ে আছেন ততক্ষণ পরিপূর্ণ নিরাপত্তাসহ নূন্যতম নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে সরকার ও জনগণকে আন্তরিক নজর রাখতে হবে। বক্তারা মিয়ানমারের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোকে ‘সেইফ জোন’ ঘোষণা করে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তজার্তিক শান্তিরক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। বক্তারা বলেন, জঙ্গিবাদ আজ বিশ্বশান্তির জন্য বড় হুমকি। দল মতের উর্ধ্বে ওঠে জঙ্গিবাদ, নাস্তিক্যবাদ, ওহাবিবাদ, মওদূদিবাদ ও শিয়াবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত। আহলে সুন্নাত নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান বিশ্বে ইহুদিবাদের নীল নকশা অনুযায়ী জঙ্গিবাদ প্রজনন করে যাচ্ছে সৌদি আরব ও ইরান। এই দুটি দেশের টাকার খেলায় বিশ্বের দেশে দেশে সুন্নিয়ত ও সুফিবাদে বিশ্বাসী সরল মুসলমানরা হার মেনে ওহাবিবাদ ও শিয়াবাদের উগ্রবাদী আক্বিদা ও জঙ্গিবাদের দীক্ষা নিচ্ছে। ফলে বিশ্বজুড়ে সৌদি পৃষ্ঠপোষকতায় ওহাবি রাষ্ট্র কায়েমের জন্য এবং ইরানি পৃষ্ঠপোষকতায় শিয়ারাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে পরষ্পর বিরোধী দুই জঙ্গি গোষ্ঠীর জন্ম হচ্ছে। এরাই বিশ্বের নানা দেশে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে। দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশে সৌদি পৃষ্টপোষকতায় সৃষ্ট ওহাবি জঙ্গি দেখা গেলেও এখন ইরানি টাকায় শিয়া জঙ্গি দৃশ্যমান হচ্ছে বলে আহলে সুন্নাত নেতৃবৃন্দ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশসহ দেশে দেশে ইরানের অপতৎপরতায় সূফিবাদী-সুন্নিদের মধ্যে শিয়াবাদী উগ্রবাদ আক্বিদার চটা শুরু হয়েছে উল্লেখ করে ওলামা-মাশায়েখগণ বলেন, কোটি কোটি টাকা খরচ করে এরা আমাদের সরলপ্রাণ আলেম ও সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিয়ে দলে বেড়াচ্ছে- যা খুবই উদ্বেগজনক। সৌদি আরব ও ইরান সৃষ্ট উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের মোকাবিলায় সুন্নি সূফিবাদী ওলামা-মাশায়েখদের মজবুত ঐক্য স্থাপন এবং সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে সুন্নিয়ত ভিত্তিক রাষ্ট্র ও সংসদ প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যেতে হবে বলে বক্তারা মতপ্রকাশ করেন। বক্তারা জঙ্গিবাদী হিসেবে প্রমাণিত কওমি শিক্ষার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স সমমান দেয়ার সরকারি পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ওরা স্বীকৃতি পেয়ে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করবে এই দেশকে। তাই কওমি সনদের স্বীকৃতি প্রত্যাহারের দাবি জানান আহলে সুন্নাত নেতৃবৃন্দ। বক্তারা মজলুম নিপীড়িত রোহিঙ্গা মুসিলমদের পাশে দাঁড়াতে সর্বস্তরের মানুষ এবং বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানান। কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বৈশ্বিক মতৈক্য গড়ে তুলতে সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান ওলামা-মাশায়েখ ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ। আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব এডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা এম এ মতিন বলেন, বৈশ্বিক চক্রান্ত রুখতে সূফিবাদী সুন্নি জনতাকে একই প্লাটফরমে এসে সোচ্চার ভূমিকা রাখতে হবে। ইহুদিদের এজেন্ট জঙ্গিবাদ, নাস্তিক্যবাদ, ওহাবিবাদসহ বাতিল মতাদর্শীদের বিরুদ্ধে হকপন্থি সুন্নি ওলামা-ছাত্র-জনতার বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। এতে দেশের বরেণ্য উলামা-মাশায়েখ, পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবী নেতৃবৃন্দ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০:০৯:২২   ১৪৫৭ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #