রবিবার, ২৭ আগস্ট ২০১৭

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪১ তম মৃত্যুবার্ষিকী

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪১ তম মৃত্যুবার্ষিকী
রবিবার, ২৭ আগস্ট ২০১৭



কাজী নজরুল ইসলাম
বঙ্গ-নিউজঃ  ‘যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে!

অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে

বুঝবে সেদিন বুঝবে।

…. গাইতে বসে কণ্ঠ ছিড়ে আসবে যখন কান্না

বলবে সবাই- সেই যে পথিক তার শোনানো গান না?’ (কাজী নজরুল ইসলাম; অভিশাপ)।

আজ ১২ ভাদ্র, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪১ তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের এদিনে মৃত্যুবরণ করেন চির তারুণ্যের প্রতীক এই কবি। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। সেখানেই চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন তিনি। তুরস্কে কামাল পাশার নেতৃত্বে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা, রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব আর ভারতবর্ষে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের তরঙ্গকে নজরুল তাঁর সাহিত্যে বিপুলভাবে ধারণ করেছেন। সেই সময়ে ধর্মান্ধ মুসলমানদের তিনি পুনর্জাগরণের ডাক দিয়েছেন এবং এক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল একজন বলিষ্ঠ নেতার মতো। কাজী নজরুল ইসলাম প্রেমের কবি, বিরহ-বেদনা ও সাম্যের কবি। বাংলা সাহিত্য-সঙ্গীত তথা সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান পুরুষ। তবে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে তার লেখনী ধূমকেতুর মত আঘাত হেনে জাগিয়ে দিয়েছিল ভারতবাসীকে। তিনি পরিণত হন বিদ্রোহের কবিতে। আজও তার নানা ধরনের লেখার মাঝ থেকে বিদ্রোহের পংক্তিমালা বাঙালির হূদয়ে অনাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের দুন্দুভি বাজিয়ে চলে। তার কবিতা ‘চ্ল চল্ চল’ বাংলাদেশের রণসঙ্গীত।

বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উত্স। নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃত্ লেখক। তাঁর লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে।

কর্মসূচি:জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে।

আওয়ামী লীগ: কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে কবির সমাধিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: বাদ ফজর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে কোরানখানি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া সকাল ৭টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ জমায়েত হবেন। সেখান থেকে তারা সকাল সোয়া ৭টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা সহকারে কবির সমাধিতে গিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। পরে কবির সমাধি প্রাঙ্গণে উপাচার্যের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করবেন বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ভীষ্মদেব চৌধুরী।

বাংলা একাডেমি: দিবসটি উপলক্ষে বিকেল চারটায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে একক বক্তৃতা ও সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সভাপতিত্ব করবেন। অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর নজরুল বিষয়ে একক বক্তৃতা প্রদান করবেন। সন্ধ্যায় থাকবে নজরুল সঙ্গীতের পরিবেশনা।

নজরুল ইন্সটিটিউট: নজরুল ইনস্টিটিউট ‘নজরুল পদক-২০১৬’ প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৪৬:২১   ২৩৩০ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #