মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট ২০১৭

মৃত্যুহীন যে বীর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-রিয়াদ

Home Page » এক্সক্লুসিভ » মৃত্যুহীন যে বীর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-রিয়াদ
মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট ২০১৭



 ---

বঙ্গ-নিউজঃ *আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সবাই জানেন এবং বুঝেন। আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে।

মৃত্যুহীন যে বীর প্রথমে গেয়েছেন জয় বাংলার গান,
তিনি ই বাঙ্গালি জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

কাদের জন্য দুঃখ ভারাক্রান্ত ছিলেন যাদের জন্য জীবনে দিয়ে চেষ্ঠা করেছেন - তারাই আপনার সাথে মীর জাফরী আচরন করলেন।

জীবন মৃত্যুর মাঝে দাঁড়িয়ে উচ্চারিত ধ্বনিঃ

*আমি বলেছি, কিসের বৈঠক বসবে, কার সঙ্গে বসবো? যারা মানুষের বুকের রক্ত নিয়ছে তাদের সঙ্গে বসবো? হঠাৎ আমার সঙ্গে পরামর্শ না করে পাঁচ ঘণ্টা গোপনে বৈঠক করে যে বক্তৃতা তিনি করেছেন, সমস্ত দোষ তিনি আমার উপরে দিয়েছেন, বাংলার মানুষের উপর দিয়েছেন।

সেই শত্রু খান সেনার আপনার কিছুই করতে পারলেন না, আপনি ছিলেন নির্ভিক পালোয়ান তাইতো কাপুরুষগন ২৫শে মার্চ রাতে নির-অস্ত্র বাঙ্গালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন যে ভাবে ঠিক তাদের উত্তরসূরি মীর জাফরের দল পিছন থেকে আপনার স্ব-পরিবারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিল। সত্যি আপনি জীবন যুদ্ধে জিতে গেছেন হে! মহান নেতা -হারিয়ে দিলেন সাত কোটি বাঙ্গালিদের, যারা খান সেনাদের প্রতিহত করেছেন স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

সেটা তারা,
শুধু পারেননি কিছু দেশ-দ্রোহী রাজাকারের পেত্ন-আত্নাদের হায়না থাবা হতে স্বাধীন বাংলার স্থপতি/এক ইতিহাসকে বাঁচাতে।

আপনার সেই বক্তব্যের লাইন গুলো আজো জ্বালাময়ী শক্তি প্রবাহিত করে-

*মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দিব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ্‌। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা। জয় বাংলা।

দেশ স্বাধীন হল, শত্রু মুক্ত হল কিন্তু কারা এরা?

স্বাধীন দেশে কোনো বাঙালি তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে না—এমন দৃঢ়বিশ্বাস ছিল বঙ্গবন্ধুর। সেজন্যই সরকারি বাসভবনের পরিবর্তে তিনি থাকতেন তাঁর প্রিয় ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর ধানমন্ডির অপরিসর নিজ বাসভবনেই। বাঙালির স্বাধিকার-স্বাধীনতা আন্দোলনের সূতিকাগার এ বাড়িটি অসম্ভব প্রিয় ছিল বঙ্গবন্ধুর। এখানে থেকেই বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিলেন।

সেদিন ঘাতকদের মেশিনগানের মুখেও বঙ্গবন্ধু ছিলেন অকুতোভয়। প্রশ্ন করেছিলেন, ‘তোরা কী চাস? কোথায় নিয়ে যাবি আমাকে?’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি নাম, একটি ইতিহাস। তার জীবন ছিল সংগ্রামমুখর। সংগ্রামের মধ্যেই তিনি বড় হয়েছিলেন। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তত্কালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ছাত্র অবস্থায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ৫২’র ভাষা আন্দোলনে তিনি ছিলেন সংগ্রামী নেতা। শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তি সনদ ৬ দফার প্রণেতাও ছিলেন। ৭০’র নির্বাচনে অংশ নিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে এদেশের গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীকে পরিণত করেন।
পাকিস্তানের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলে ষাটের দশক থেকেই তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের অগ্রনায়কে পরিণত হন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার তত্কালীন রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উত্তাল সমুদ্রে বঙ্গবন্ধু বজ্রদৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এই ঘোষণায় উদ্দীপ্ত, উজ্জীবিত জাতি স্বাধীনতার মূলমন্ত্র পাঠ করে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছিনিয়ে আনে দেশের স্বাধীনতা। জাতির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ পুরুষ বঙ্গবন্ধুর অমর কীর্তি এই স্বাধীন বাংলাদেশ

আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। ইতিহাসের বেদনাবিধুর ও বিভীষিকাময় এক দিন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২ তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এইদিন অতিপ্রত্যুষে ঘটেছিল ইতিহাসের সেই কলঙ্কজনক ঘটনা। সেনাবাহিনীর কিছু উচ্ছৃঙ্খল ও বিপথগামী সৈনিকের হাতে সপরিবারে প্রাণ দিয়েছিলেন বাঙালির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সন্তান, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই নৃশংস হামলার ঘটনায় আরো যারা প্রাণ হারিয়েছিলেন তারা হলেন : বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল, রোজী জামাল, ভাই শেখ নাসের ও কর্নেল জামিল, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, শহীদ সেরনিয়াবাত, শিশু বাবু, আরিফ রিন্টু খানসহ অনেকে।
১৫ই আগস্ট ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু পরিবারের শহীদ সকলের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও মাগফিরাত কামনা করি।

মুহাম্মদ সাজ্জাদ কামাল রিয়াদ ফাইল ছবি

বাংলাদেশ সময়: ০:০৫:৩৬   ২৯৩৪ বার পঠিত