মঙ্গলবার, ১ আগস্ট ২০১৭
ষোড়শ সংশোধনী বাতিল প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য
Home Page » জাতীয় » ষোড়শ সংশোধনী বাতিল প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যবঙ্গ-নিউজ: অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। হাইকোর্ট শুনানি করে অবৈধ ঘোষণা করেছে। তার বিরুদ্ধে আমরা আপিল করেছিলাম। আপিলের শুনানি হয়েছে। পরে রায় ঘোষণা করা হয়েছিল। আজকে আমরা ওয়েব সাইটে পুরো রায়ের কপি পেয়েছি।আপিল শুনানি সাতজন বিচারপতি শুনেছিলেন। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সবাই ঐক্যমত হয়েছেন। আলাদা কেউ রায় দেননি। রায়ে শেষ অংশে যেটা বলা হয়েছে, সেটা হলো সর্ব সম্মতিক্রমে আপিলটাকে ডিসমিস করেছেন। সংবিধানের ৯৬ এর (২) থেকে ৭ অনুচ্ছেদ পুন:স্থাপন করেছেন। এবং রায়ে বিচারপতিদের কোড অব কন্ডাক্ট সম্পর্কে যে বিস্তারিত বর্ণনা আছে তার সঙ্গেও তারা একমত করেছেন। অর্থাৎ যদিও প্রধান বিচারপতি রায়ের এক জায়গায় অনুচ্ছেদ ১১৬ সম্পর্কে বলেছেন, এটা সংবিধান পরিপন্থী। কিন্তু রায়ের শেষাংশে যেখানে সবাই একমত হয়েছেন সেখানে এটা পেলাম না।
টোটাল বিষয়টি দাড়ালো যে মার্শাল আমলে সংবিধানের ৯৬ ধারা সংশোধন করে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের যে বিধান অন্তভূর্ক্ত করে সংশোধন করা হয়েছিল সেটিকে আবার পুন:স্থাপন করা হলো। রায়ের পরবর্তী বিষয়ে সরকার নিশ্চয়ে আমাকে যে পরামর্শ দেবেন বা আদেশ দেবেন সে মতে আমি কাজ করবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রায়ের ভিতরে যাই বলা থাকুক না কেন রায়ের সমাপনিতে কি বলা আছে সেটি দেখতে হবে। অর্ডার অব দ্যা কোর্ট কোনটা সেখানে কিন্তু ১১৬ সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।
আমি বলবো এটা একজন জাজের অভিমত হতে পারে কিন্তু যেহেতু রায়ের শেষাংশে,যেটাকে অর্ডার অব দ্যা কোর্ট আমরা বলি। সেখানে ১১৬ সম্পর্কে বলা হয়নি।তাহলে ১১৬ বাতিল হয়েছে বলে ধরা যায় না। ১১৬ ধারাকে যদি বাতিল করতে হতো তাহলে সবাইকে সেখানে সই করতে হতো। অর্ডার অব দি কোর্ড তাই হতো।
এখন ওনারা রেস্টর করেছেন। কিন্তু আমার বক্তব্য হলো সংবিধানের যে কোন ধারা। যেটা সংশোধন করা, বাদ দেয়া সবটাই সংসদের ব্যাপার। কোর্ট যদি নিজেই রেস্টর (পুন:স্থাপন)করে দেন। তাহলে সংসদের থাকার কোন দরকার হয় না তাই না। আমার কথা হলো যে কোন সংবিধানের যে কোন সংশোধনকে অবৈধ ঘোষণা করতে পারেন। কিন্ত সংবিধানের কোন ধারা পুন:স্থাপন বা রেস্টর করা আমার বিবেচনায় এটা সংসদের কাজ।
সুপ্রিমজুডিশিয়াল কাউন্সিল কার্যকর করতে এখন আইন করতে হবে কি না বা আইন না করতে এটা কার্যকর হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,এটা এই মূর্হতে বলা কঠিন ব্যাপার। এটা নিয়ে এই মূর্হতে কোন কমেন্টস আমি করবো না। রিভিউ বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে ।
বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা অবসরের আগে বা পরে স্বাক্ষর করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমি বলতে পারবো না। এটা প্রধান বিচারপতি বলতে পারবেন। অবসরের পর স্বাক্ষরের বিষয়টি আমাদের বহু দিনের ট্রাডিশন। অবসরের পর সই করতে পারবে না এই মর্মে বর্তমান প্রধান বিচারপতি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। রায়ের শেষাংশে যেটা অর্ডার অব দি কোর্ট সেখানে ১১৬ সম্পর্কে কিছু বলা নেই।
সার্বিক কমেন্টস করতে হলে পুরো রায়টা পড়ে কমেন্টস করতে হবে। তবে আমার একটি দু:খ রয়ে গেছে । সেই দু:খ হলো সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদটি সংযুক্ত হয়েছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে। যখন আমাদের সংবিধান প্রণেতারা বসেছিলেন তারা এটা প্রণয়ন করেছিলেন। আর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল কন্সেপ্টটা (ধারণা)এটা হলো সেনা শাসকদের কন্সেপ্ট, পাকিস্তানের কন্সেপ্ট, জিয়াউর রহমানের কন্সেপ্ট কাজেই এটা পুন:স্থাপনে নিশ্চয় আমি ব্যথিত।
১১৬ অনুচ্ছেদকে বেআইনী বললেন প্রধান বিচারপতি। এটার সঙ্গে ষোড়শ সংশোধনীর কোন কন্ডাডিক্টরি ছিল না কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১১৬ তো কোন ইস্যু ছিল না। ইস্যু ছিল ৯৬ অনুচ্ছেদ। ইস্যু না থাকলেও এটা পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,এটা উচিত না।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪৪:০৯ ৪৭৩ বার পঠিত