মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০১৭

লালমনিরহাটে নির্মাণ কৃত রাস্তার পিচ উঠে গেল পাঁচ দিনেই!

Home Page » বিবিধ » লালমনিরহাটে নির্মাণ কৃত রাস্তার পিচ উঠে গেল পাঁচ দিনেই!
মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০১৭



লালমনিরহাটে নির্মাণ কৃত  রাস্তার পিচ উঠে গেল

বঙ্গ নিউজঃ মোঃ শরিফুল ইসলাম। হাতীবান্ধা থানা প্রতিনিধি :বিটুমিনের পরিবর্তে পোড়া মবিল দিয়ে রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করার মাত্র ৫ দিনের মাথায় রাস্তার ওই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। কার্পেটিং এর শুরু থেকে কাজের মান নিয়ে এলাকাবাসী প্রশ্ন তুললেও ঠিকাদার কিংবা বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান তা আমলে নেয়নি।
উল্টো প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার আদিতমারী থানায় একটি চাঁদাবাজির অভিযোগ দায়ের করেন।এদিকে নিম্নমানের কাজের অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিন খোঁজ নিতে গতকাল রোববার আসেন লালমনিরহাট স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী। অভিযোগের সত্যতা পেলে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে ঠিকাদারকে এ কর্মকর্তার সামনে লাঞ্চিত করেন। পরে এলাকাবাসীর ধাওয়ায় ঠিকাদার ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে রক্ষা পান।
আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়নের বামনের বাসা- খালেক মোকতারের বাড়ী পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা পাকা করণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর লালমনিরহাট থেকে প্রায় ৫৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। আর এ কাজের বাস্তবায়ন করেন আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর। কাজটি কাগজে কলমে আলমগীর হোসেন নামের এক ঠিকাদারের থাকলেও তার পরিবর্তে কাজ করছেন স্থানীয় ঠিকাদার সহিদুল ইসলাম।
স্থানীয় একধিক মানুষের সাথে কথা হলে তারা জানান, ঠিকাদার উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে আতাত করে বিটুমিনের পরিবর্তে পোড়া মবিল দিয়ে রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করেন। প্রথম থেকেই স্থানীয় লোকজন কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুললেও কোন কর্ণপাত করেননি ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের কেউই। কাজ সমাপ্তির মাত্র ৫ দিনের মাথায় রাস্তার কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
এদিকে ঠিকাদার সহিদুল ইসলাম গা বাঁচাতে প্রতিবাদকারী স্থানীয় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে আদিতমারী থানায় ৩ লাখ টাকা চাঁদিবাজির অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি এলাকাবাসী জানার পর এলজিইডির উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেন।এরই প্রেক্ষিতে গত রোববার সরেজিমন রাস্তাটি পরিদর্শনে আসেন লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম জাকিউর রহমান।
এসময় এ কর্মকর্তার সামনেই এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সহিদুল ইসলামকে নিম্নমানের কাজের কারণে লাঞ্চিত করেন। পরে স্থানীয়দের তোপেড় মুখে নির্বাহী প্রকৌশলী।একাধিক এলাকাবাসী নির্বাহী প্রকৌশলী ও স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে পেয়ে এসময় আক্ষেপে ফেটে পড়েন। বামনের বাসা মোড়ের বাবলু মিয়া বলেন, এমন নিম্নমানের কাজ আমার জীবনেও আমি দেখিনি। নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদ করতে গিয়ে উল্টো চাঁদাবাজির মামলার স্বীকার হলাম।
আপনারই তো (সাংবাদিকদের) নিজ চোখে দেখলেন, কাজের মান কতটা খারাপ।
সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার সহিদুল ইসলাম এ বিষয়ে সংবাদকর্মীদের সাথে কোন কথা বলতে রাজি হননি।এলজিইডি’র আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী ফজলুল হক কাজের মান একটু নিম্ন হয়েছে স্বীকার করে বলেন, প্রতিদিন এত দৌড়ঝাপ করি তারপরও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মন পাইনা। কি আর করার ঠিক ঠাক করে দিবে ঠিকাদার।
লালমনিরহাট এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম জাকিউল রহমান বলেন, রাস্তায় বিটুমিনের পরিমাণ কম দেয়ায় এধরনের ঘটনা ঘটেছে। তিনি দোষীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, ওই রাস্তাটিতে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করার অভিযোগে এলাকাবাসী গত বছর কাজের শুরুতেই রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পরে ওই রাস্তা থেকে নিম্নমানের খোয়া ও রাবিস অপসারণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন ঠিকাদার।

বাংলাদেশ সময়: ২১:১৩:৪৮   ৪৩৪ বার পঠিত