শনিবার, ২৪ জুন ২০১৭
জন্মদিনে ভালোবাসায় সিক্ত হলেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী SIC SIR
Home Page » এক্সক্লুসিভ » জন্মদিনে ভালোবাসায় সিক্ত হলেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী SIC SIR
বঙ্গ-নিউজঃ তাঁর জন্ম হওয়ায় সমাজের কোনো লাভ হয়েছে বলে মনে করেন না সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। সে জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে তিনি আগ্রহী নন। তা ছাড়া অন্তরালে থাকতে ভালোবাসেন বলে দীর্ঘদিন কলাম লিখেছেন ছদ্মনামে।
গতকাল শুক্রবার ছিল ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ৮১তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে বিকেলে রাজধানীর উচ্চতর মানবিক শিক্ষাকেন্দ্র অডিটরিয়ামে দিনটি উদ্যাপনের আয়োজন করেন তাঁর বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলেন তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু, সহকর্মী, ছাত্রছাত্রী, রাজনীতিক, সাংস্কৃতিক অঙ্গন, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও সংগঠন। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁকে নিয়ে কথা বলেন বিশিষ্টজনেরা। ক্ষয়ে যাওয়া একটি সমাজে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রজ্ঞাবান, সৎ ও সমাজসচেতন বিরল মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধা জানান সবাই।
গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘এই সময়ে তাঁর মতো আদর্শবান মানুষ এই জাতি আর একজনও পায়নি। এটা জাতির দুর্ভাগ্য। তাঁর জন্মদিন এমন সংক্ষিপ্তভাবে পালন করতে হচ্ছে, এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য। বরং জাতীয়ভাবে তাঁর জন্মদিন পালন করা উচিত ছিল। যদিও জাতির কাছে তাঁর মর্যাদা অমলিন।’
উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি শফি উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তিনি আমার শিক্ষক। তাঁকে অনুসরণ করেই আমরা প্রগতিশীল, বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় যুক্ত হয়েছি।’ ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর বলেন, ‘প্রজ্ঞায়, সততায় স্যারের ছাত্রদের কেউই তাঁকে অতিক্রম করতে পারেননি।’ বাসদ (মার্ক্সবাদ) নেতা সুধাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘আমার পঁচাত্তর বছর বয়সে আমি তাঁর মতো কাউকে পাইনি। নীতি ও আদর্শে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।’ বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘তিনি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নন। জাতির শিক্ষক হিসেবে নিরলসভাবে তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। আমরা গভীর আগ্রহ ও আনুগত্যের সঙ্গে তাঁর ছাত্রত্ব গ্রহণ করেছিলাম।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সমকাল-এর উপসম্পাদক আবু সাঈদ খান, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাংবাদিক সোহরাব হাসান, সংগঠক কাজী মদিনা, আবদুস সাত্তার, মোশরেফা মিশু, সদরুল আমিন, জোনায়েদ সাকি, ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ।
এ আয়োজনে উপস্থিত হয়ে অনুভূতি ব্যক্ত করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাদ নৃশংস রূপ ধারণ করেছে। আমরাও এর শিকার হচ্ছি। কিন্তু পুঁজিবাদই শেষ কথা নয়। এর বিরুদ্ধে সংগ্রামে যে আমিও আছি, সেটাই আমার জন্য গৌরবের বিষয়।’ তাঁকে উৎসর্গ করে নিজের অনুবাদ করা তুরস্কের কবি নাজিম হিকমতের ‘বেঁচে থাকা’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন গবেষক আজফার হোসেন। এ ছাড়া উপস্থিত বেশ কজন তরুণের হাতে কমিউনিস্ট পার্টির ইশতেহার তুলে দেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
বাংলাদেশ সময়: ১০:০৬:১৫ ৪২৭ বার পঠিত