শুক্রবার, ২৩ জুন ২০১৭

ঘাতকরা এএসপি মিজানের মানিব্যাগ নিলেও মোবাইল নেয়নি-মলম পার্টির উপর সন্দেহ

Home Page » এক্সক্লুসিভ » ঘাতকরা এএসপি মিজানের মানিব্যাগ নিলেও মোবাইল নেয়নি-মলম পার্টির উপর সন্দেহ
শুক্রবার, ২৩ জুন ২০১৭



bongo-newsasp-mizan.jpg
বঙ্গ-নিউজঃ   হাইওয়ে পুলিশের এএসপি মিজানুর রহমানের দুটি মোবাইল ফোন ঘাতকরা নেয়নি। ঘাতকরা তার মানিব্যাগ ও পুলিশ পরিচয়পত্র (কার্ড) নিয়েছে। পুলিশ ধারণা করছে, মলম পার্টির সদস্যরা পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় জানার পর তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ ফেলে দেয়।

হত্যার ঘটনায় বুধবার রাতেই নিহতের ছোট ভাই মাসুম তালুকদার বাদী হয়ে রূপনগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি বৃহস্পতিবার তদন্তের জন্য ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে স্থানান্তর করা হয়।

অপরদিকে, এই হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ৩০ জুলাই দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর আদালত। রূপনগর থানা পুলিশকে বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম মাজহারুল হক। ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক নিজাম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বুধবার সকালে রাজধানীর রূপনগর থানার মিরপুর বেড়িবাঁধের বোটক্লাব এলাকার রাস্তার পাশে ১০/১২ ফুট গভীর খাদ থেকে এএসপি মিজানুর রহমান তালুকদারের লাশ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ধারণা করছে, উত্তরার বাসা থেকে বের হওয়ার পর দুর্বৃত্তরা এএসপি মিজানকে তুলে নিয়ে হত্যার পর লাশ বেড়িবাঁধে ফেলে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। কারা, কেন তাকে হত্যা করেছে তা জানার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবকটি সংস্থা মাঠে নেমেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এএসপি মিজানের নামে কোন গাড়ি ইস্যু করা ছিল না। একারণে তিনি সকালের ডিউটিতে যাওয়ার জন্য রাস্তায় ভাড়া করা মাইক্রোবাস অথবা প্রাইভেটকারে করে সাভারের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই গাড়িটিই ছিল মলম পার্টি চক্রের।

রূপনগর থানার ওসি সৈয়দ শহীদ আলম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে এএসপি মিজানুর রহমান রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ ভাড়া করা প্রাইভেটকার অথবা মাইক্রোবাসে উঠেছিলেন। গাড়িতে ওঠার পর মলম পার্টির সদস্যরা যখন এএসপি মিজানুরের মানিব্যাগ কেড়ে নেয়ার পর তার পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় জানতে পায়। এতে মলম পার্টির সদস্যরা চিন্তা করে যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা যখন তাদের চেহারা দেখে ফেলেছে-এ কারণে তাকে গাড়ির ভিতর হত্যা করে লাশ রাস্তায় ফেলে দেয়। লাশের পাশ থেকে তার দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। ঘাতকরা তার মানিব্যাগ ও পুলিশের পরিচয়পত্রটি নিয়ে গেছে।

এএসপি মিজানুর রহমানের মরদেহের ময়নাতদন্ত করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস। ময়নাতদন্তে মিজানের শরীরের অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর সড়কের ৩৮ নম্বর ছয়তলা বাড়ির নিচতলায় সপরিবারে ১২ হাজার টাকায় ভাড়া থাকতেন এএসপি মিজানুর রহমান। ওই বাড়িটি কেয়ারটেকার নুরুল হক বলেন, ‘আমি সাড়ে ১৭ বছর ধরে এই বাড়ির দায়িত্বে আছি। গত দুই বছর পাঁচ মাস ধরে এই বাড়িতে ভাড়া আছেন এএসপি মিজানুর রহমান। তিনি খুব ভালো মানুষ ছিলেন। বাসা ভাড়ার স্লিপ দেওয়ার পর ১০ তারিখের মধ্যে ভাড়া দিয়ে দিতেন। কখনও খারাপ ব্যবহার করতেন না।’

বাংলাদেশ সময়: ৯:৩৭:৩০   ৪৪৩ বার পঠিত