শনিবার, ১৭ জুন ২০১৭
লন্ডনে ব্যাপক বিক্ষোভ, টাউন হলে হামলা, থেরেসার পদত্যাগ দাবি
Home Page » প্রথমপাতা » লন্ডনে ব্যাপক বিক্ষোভ, টাউন হলে হামলা, থেরেসার পদত্যাগ দাবিবঙ্গ-নিউজ: লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার দাবিতে বিক্ষোভকারীরা কেনসিংটন ও চেলসির টাউন হলে হামলা চালিয়েছে। অগ্নিকা-ের ঘটনায় ন্যায় বিচারের দাবিতে আয়োজিত মিছিল থেকে প্রায় ৫০-৬০ জন বিক্ষোভকারী কাউন্সিল ভবনে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভ দেখান। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ঠেলাধাক্কার ঘটনাও ঘটে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করতে একটি গির্জায় গেলে বিক্ষুব্ধ মানুষ তার বিরুদ্ধে কাপুরুষ এবং শেম শেম বলে ধ্বনি দেয় এবং তার পদত্যাগ দাবি করে। হোয়াইটহল ও লন্ডনের কেন্দ্রস্থলেও শত শত মানুষের আলাদা বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিবিসিসহ প্রায় সব ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।
টাউন হলে প্রবেশকারী এক ব্যক্তি বলেন, অনেক মানুষ ঘরহীন হয়ে পড়েছেন। তাদের এখনই সহযোগিতা দরকার। কেউ জানে না কী ঘটছে। মানুষ ক্ষুব্ধ। এসব মানুষের রাস্তায় ঘুমানোর কথা না।
টাউন হলে বিক্ষোভ শুরু হয় লন্ডনের স্থানীয় সময় বিকাল তিনটার দিকে। বেশ কিছু মানুষ এতে যোগ দেন। সাড়ে চারটার দিকে ক্ষুব্ধ লোকজন মারমুখি হয়ে ওঠে এবং ভবনটিতে ঢুকতে শুরু করে।
বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজকরা জানান, কাউন্সিল নেতারা তাদের সামনে এসে কথা বলতে রাজি হননি। কিন্তু তারা একটি বিবৃতি দিয়েছেন যাতে ঘরহারা মানুষদের আবাসনের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
যদিও কাউন্সিলের পক্ষ থেকে গ্রেনফেল টাওয়ারে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা জানানো হচ্ছে না। বিক্ষোভকারীদের অনেকগুলো দাবির মধ্যে ছিল বসবাসরত মানুষের সংখ্যা জানানো।
বিক্ষোভের আয়োজকদের একজন মুস্তাফা আল মনসুর জানান, কাউন্সিলের প্রতিক্রিয়া ছিল যুক্তিহীন এবং তারা কোনও নির্দিষ্ট জবাব দেননি। তিনি বলেন, তাদের জবাবে মানুষ সন্তুষ্ট ছিলো না। কাউন্সিলের ভূমিকায় হতাশাগ্রস্ত মানুষ ভবনটিতে ঢুকতে শুরু করে। তাদের কেউ জোর করে টাউন হলে প্রবেশ করেনি। তারা শুধু কথা বলতে ভেতরে ঢুকেছে।
মনসুর জানান, ভবনের ভেতরে প্রবেশের কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ উপস্থিত হয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে। উভয় পক্ষে কিছুক্ষণ ধস্তাধস্তি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৩ জুন) মধ্যরাতে গ্রেনফেল টাওয়ারের অগ্নিকা-ে এখন পর্যন্ত ৩০ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। ভবনের বিভিন্ন কক্ষে পুড়ে যাওয়া সামগ্রী। সেখানে শনাক্ত করতে না পারা মরদেহ থাকার শঙ্কাও রয়েছে। তবে ভবনের অভ্যন্তরে কারও জীবিত থাকার আশা নেই আর। পুলিশের পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়েছে, নিহতদের সবাইকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে না। এই অবস্থায় শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা করছে লন্ডনবাসী। হাসপাতালে থাকা অন্তত ৩০ জনের মধ্যে বেশকিছু মানুষ রয়েছেন মৃত্যুশঙ্কায়। তাই সবমিলে এ ঘটনায় শতাধিক প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করছে লন্ডনবাসী।
ভয়াবহ এ আগুনের ঘটনাকে স্বাভাবিক দুর্ঘটনা বলে মানতে পারছেন না লন্ডনের নাগরিকেরা। দুর্গত ও আহতদের দেখতে না যাওয়ায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকাও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে তাদের। চতুর্থ তলায় লাগা আগুন কী করে এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারল, তার জবাব চাইছেন তারা। লন্ডনবাসীর দাবি, এ বিপর্যয়ে যাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ৯:১২:১৮ ৪১৬ বার পঠিত