শনিবার, ১৭ জুন ২০১৭
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুইডিশ উদ্যোক্তাদেরকে বিনিয়োগের আহ্বান জানালেন
Home Page » জাতীয় » প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুইডিশ উদ্যোক্তাদেরকে বিনিয়োগের আহ্বান জানালেন
বঙ্গ-নিউজঃ বাংলাদেশে ব্যবসাবান্ধব নীতির সুযোগ নিয়ে তৈরি পোশাক, ওষুধ, জাহাজ নির্মাণ ও তথ্যপ্রযুক্তির মতো দ্রুত বিকাশমান খাতে বিনিয়োগের জন্য সুইডেনের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সুইডেন সফরের দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার স্টকহোমে বাংলাদেশ-সুইডেন বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের আয়োজনে ‘বাণিজ্য সংলাপে’ এই আহ্বান জানান তিনি।
উন্নয়নের নানা লক্ষ্যের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “যৌথ সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও উদ্ভাবনী ব্যবসার ক্ষেত্রে অংশীদার হতে আমি সুইডেনের ব্যবসায় ও শিল্প খাতের নেতাদেরকে জোরালো উৎসাহ দিতে চাই।
“একসঙ্গে কাজ করে আমরা উভয় দেশের লাখ লাখ মানুষের জীবন বদলে দিতে পারি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে বাংলাদেশ বিশ্বের সামনে সাফল্যের উদাহরণ। পাশাপাশি অন্য খাতেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ৮৩টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে।
“আমরা উচ্চমানের, কম দামের জেনেরিক ওষুধের দ্রুত বর্ধণশীল বৈশ্বিক বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছি।”
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাপানসহ বিভিন্ন বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আমাদের বিনিয়োগ নীতিমালা সবচেয়ে উদার। ব্যবসা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে খরচ তুলনামূলক কম।
“আমাদের জ্ঞান শিল্প, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ও সংশ্লিষ্ট খাতগুলো দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। জাহাজভাঙা শিল্পও বাংলাদেশে দ্রুত বর্ধনশীল; সমুদ্রগামী হালকা থেকে মাঝারি আকারের বিশ্বমানের নৌযান তৈরি হচ্ছে।”
দেশজুড়ে স্থাপনাধীন ১০০ ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (এসইজেড) মধ্যে চীন, ভারত ও জাপানকে সরকারিভাবে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি।
“আমরা বেশ কয়েকটি হাইটেক পার্কও নির্মাণ করছি। আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সুইডেনের কোম্পানিগুলোকে অংশীদার হতে আহ্বান জানাই।”
অনুষ্ঠানে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদারে সুইডেন-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল (স্টকহোম) এবং নরডিক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ঢাকা) মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক সই হয়।
এই চুক্তির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, এটা আমাদের দুই দেশের ব্যবসায় সহযোগিতা গভীরতর করবে।”
সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্তেফান লোফভেনের সঙ্গে ‘অত্যন্ত সফল’ দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হয়েছে বলে সংলাপে জানান শেখ হাসিনা।
“সম্পর্ক গভীর ও বিস্তৃত করার ক্ষেত্রে , বিশেষ করে উভয় দিকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উন্নয়নে আমরা একমত হয়েছি।”
সুইডেনের সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজকের এই আয়োজন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কে নতুন উদ্দীপনা যোগাবে, আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।”
স্টকহোমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই সংলাপে সুইডেনের উদ্যোগ ও উদ্ভাবন বিষয়কমন্ত্রী মিকাইল ড্যামবার্গ বক্তব্য দেন।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম আলাদা উপস্থাপনা দেন।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব সুরাইয়া বেগম ও শ্রম সচিব মিকাইল শিপারও আলোচনায় অংশ নেন।
এছাড়া দুই দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরাও সংলাপে অংশ নেন।
তিন দিনের সরকারি সফরে মঙ্গলবার রাতে লন্ডন হয়ে স্টকহোমে আসেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের কোনো প্রধানমন্ত্রীর সুইডেনে এটাই প্রথম সরকারি সফর। ছোট বোন শেখ রেহানাও তার সঙ্গে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে সুইডিশ পার্লামেন্ট ঘুরে দেখেন শেখ হাসিনা। পরে সুইডেনের রাজপ্রাসাদে রাজা কার্ল ষষ্ঠদশ গুস্তাভের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এরপর সুইডেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়।
পরে স্টকহোমের সিটি কনফারেন্স সেন্টারে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সংবর্ধনা সভায় যোগ দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হাসিনা।
বাংলাদেশ সময়: ৮:৩৪:৫৩ ৩৮১ বার পঠিত