শুক্রবার, ১৬ জুন ২০১৭
সারা রাত অপেক্ষা, তবুও মেলেনি সবার টিকেট
Home Page » প্রথমপাতা » সারা রাত অপেক্ষা, তবুও মেলেনি সবার টিকেটবঙ্গ-নিউজঃ রোজা শেষের ঈদ নিকটজনের সঙ্গে উদযাপনের জন্য রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীদের জন্য আগাম টিকেট বিক্রি শেষ হওয়ার একদিন বাকি থাকতে কমলাপুর স্টেশনে ভিড় ব্যাপক বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার অগ্রিম টিকেট বিক্রির চতুর্থ দিনে বিক্রি করা হচ্ছে ২৪ জুনের ঈদযাত্রার টিকেট। ট্রেনের আগাম টিকেট বিক্রি শেষ হবে শুক্রবার পর্যন্ত। দেওয়া হবে ২৫ জুনের টিকেট।
আগাম টিকেট নিতে যথারীতি বুধবার দুপুর থেকেই কমলাপুরে আসতে শুরু করেন টিকেটপ্রত্যাশীরা। স্টেশনের প্লাটফর্মে রাতভর মশার কামড় খেয়েও কাঙ্ক্ষিত টিকে পাননি অনেকে। যারা লাইনের একদম শুরুর দিকে ছিলেন, তারা পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিক্রি শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে শেষ হয়ে যায় সবগুলো ট্রেনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের টিকেট। লাইনের প্রথমদিকে থাকলেও দিনাজপুর যাওয়ার যাওয়ার এসি টিকেট পাননি ব্যবসায়ী আল আমিন।
“আমাদের লাইনে একতা, নীলসাগর ও দ্রুতযান ট্রেন চলে। প্রতিটি গাড়িতেই একাধিক এসি কামরা আছে। কিন্তু আমার আগে ৫ জনকে দেওয়ার পরই বলে এসি টিকেট নাই।”
দেওয়ানগঞ্জ রুটের তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেটও শেষ হয়েছে বিক্রি শুরুর কিছু্ক্ষণ পরই। বেশিরভাগ যাত্রী ওই ট্রেনের অগ্রিম টিকেট না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।
তবে দীর্ঘ অপেক্ষার পর টিকেট পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন অনেকে। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ যেতে গতকাল বিকাল ৩টায় কমলাপুরে এসেছেন ঢাকার একটি কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নাজমুল হোসেন। প্রায় ১৮ ঘণ্টা অপেক্ষার পর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় হাওর এক্সপ্রেসের টিকেট পান তিনি। নাজমুল জানান, নিরাপদে বাড়ি যেতেই এত কষ্ট সয়েছেন তিনি।
“আপা আর দুলাভাইয়ের সঙ্গে যাব, বাচ্চারাও আছে। তাদের নিয়ে বাসে যেতে ইচ্ছে করে না। তাছাড়া বাসে অনেকপথ ঘুরতে হয়। এজন্য ট্রেনে যাই।”
স্বস্তিতে বাড়ি যাবেন বলেই রাতভর মশার কামড় খেয়েও কমলাপুর স্টেশনে ছিলেন টেলিটকের কর্মী রেজাউল করিম। জামালপুরের অগ্নিবীণা ট্রেনের চারটি টিকেট পেয়েছেন তিনি।
“আমাদের ওই এলাকায় বাসেও যাওয়া যায়। কিন্তু বাসে রাস্তাঘাটের অবস্থা ভালো না। ট্রেন জার্নি অনেক আরামের। কষ্ট করে টিকেট কেটে উঠে বসতে পারলেই হলো। গন্তব্যে চলে যাওয়া যায়।”
গতকাল দুপুর ১২টা থেকে কমলাপুরে এসেছেন মাসুদুর রহমান। তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মানুষের পছন্দের বাহন ট্রেন।
“ঈদের আগে বাসে উত্তরবঙ্গের যাত্রা বিভীষিকাময়। কারণ সড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজট লেগে থাকে। বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে গেলেও অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। এ কারণে ট্রেনেই যাই। টিকেটের এই কষ্টটুকু সবাইকে নিয়ে জ্যামে বসে থাকার তুলনায় কিছুই না।”
কিছু ট্রেনের টিকেট শুরুতে শেষ হলেও কেউ ফেরত যায়নি বলে দাবি করলেন কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্ত্তী।
“একটি রুটে একাধিক ট্রেন থাকায় সবাই টিকেট পায়। যদি কেউ তিস্তার টিকেট না পায় সে ওই রুটের দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল বা ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেসের টিকেট পাচ্ছে। তাকে ফেরত যেতে হচ্ছে না।”
এদিকে নারীদের জন্য স্টেশনে দুটি কাউন্টার থাকলেও এর একটি থেকে রেলওয়ের কর্মকর্ম-কর্মচারীদের সংরক্ষিত টিকেট দেওয়া হচ্ছে। স্টেশনে নারী কাউন্টারেই ভিড় বেশি, একটি কাউন্টার থেকে টিকেট দেওয়ায় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।
নারীদের অনেকে সেই কাউন্টার থেকে টিকেট দেওয়ার অনুরোধ করলেও দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন রেবেকা সুলতানা নামে এক টিকেটপ্রত্যাশী।
“আমাদের এই লাইনে ভিড় সবচেয়ে বেশি। টিকেট দিতেও অনেক দেরি করে। এ কারণে আমরা অনুরোধ করছিলাম যেই পাশের কাউন্টার থেকে টিকেট দেয়। কিন্তু আমাদের কোনো অনুরোধই শোনে না। অথচ গতকাল, পরশু নাকি এই কাউন্টার থেকে টিকেট দিছিল।”
ওই কাউন্টারের টিকেট বিক্রেতার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাউন্টারে নারীদের টিকেট দিলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসে ফেরত যায়। এছাড়া আজ এখান থেকে নারীদের টিকেট দেওয়ার ‘অর্ডার’ তিনি পাননি।
বাংলাদেশ সময়: ৯:৫৪:১৭ ৪৩৯ বার পঠিত