শনিবার, ১০ জুন ২০১৭
মুন্সিগঞ্জে আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে যুবক নিহত
Home Page » জাতীয় » মুন্সিগঞ্জে আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে যুবক নিহতবঙ্গ-নিউজঃ মুন্সিগঞ্জ সদরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মো. মাসুদ (২২) নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এ ছাড়া এ ঘটনায় আরো চারজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার ভোর ৪টার দিকে চরকেওয়ার ইউনিয়নের দক্ষিণ চর মশুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- আরিফ (২০), ইরফান (২৩) ও সাইফুল খান (২০)।
এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ আরিফকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ইরফান ও সাইফুল খানকে স্থানীয় স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দির্ঘদিন যাবৎ এলাকায় আধিপত্ত বিস্তার ও গেল ইউপি নির্বাচনে জেলা সদরের চরকেওয়ার ইউনিয়ানের ৮নং ওয়ার্ড চরমশুরা গ্রামের মন্টু দেওয়ান বাহিনী এবং হারুন ফকির বাহিনীর বিরোধ বাধে। তারা দু’জনই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা এবং দু’জনই ইউপি নির্বাচনে চরকেওয়ার ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী ছিলেন। তাদের একজন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আফসার হোসেন ভূইয়া আফসু চেয়ারম্যন গ্রুপের এবং অপর জন আওয়ামী লীগ নেতা আকতার হোসেন জীবন চেয়ারম্যান গ্রুপের বলে জানা গেছে।
তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ একাধিক মামলা মোকদ্দমা চলে তার একটি মামলায় মন্টু বাহিনীর লোকজন আদালত থেকে জামিনে এসেই বৃহস্পতিবার রাতে হারুন ফকিরের গ্রুপের লোকজনকে মারধর করে এরই জের ধরে শনিবার সকালে হারুন বাহিনীর লোকজন মন্টু বাহিনীর লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এতে মন্টু বাহিনীর লোকজন প্রতিরোধ করলে গোলাগুলি ও বোমা বিস্ফরণ শুরু হয়। এ সময় চরমশুরা গ্রাম রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ আহত হয় মন্টু দেওয়ানের সমর্থক মাসুদ, তারিদ ও ইরফান এবং বোমায় আহত হয় সাইফুল। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে গুলির আঘাতে আহত মাসুদকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এবং অপর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় আরো বড় ধরণের সহিংসতার আশংকা দেখা দিয়েছে।
এ দিকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার হোসেন ভূইয়া আফসু বলেন, মন্টু দেওয়ান তার লোক নয়। তিনি আরো জানান, মন্টু এর আগে বিএনপি দলের লোক ছিল কিছু দিন হলো মাত্র সে আওয়ামী লীগে যোগদান করলেও দলে তার তেমন কোনো অবস্থান নেই।
এ ঘটনার সত্যতা জানিয়ে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম বলেন, দির্ঘদিন যাবৎ ওই এলাকায় আধিপত্ত বিস্তারকে কেন্দ্র করে মন্টু দেওয়ান ও হারুন ফকিরের মধ্যে মামলা মোকদ্দমাসহ কিছু গোলমালের ঘটনা ঘটেছে। সেই সমস্ত মামলার একটিতে দু’দিন আগে মন্টু গ্রুপের লোকজন আদালত থেকে জামিনে আসে এবং শনিবারে আবারো গোলমাল করে। বর্তমানে ওই এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে এবং শান্ত আছে। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে। এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির বিধান করা হবে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।
সদর থানার ওসি মো. ইউনুচ আলি জানান, এ বিষয়ে সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলেও সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ রয়েছে। আর কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলার সুযোগ নাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:০৩:২৫ ৪৩৬ বার পঠিত