বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০১৭

ফয়সাল হাবিব সানি’র ৫টি প্রতিবাদী কবিতা

Home Page » সাহিত্য » ফয়সাল হাবিব সানি’র ৫টি প্রতিবাদী কবিতা
বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০১৭



 Image may contain: 1 person

১. অামি

অামি নজরুল নই, সুকান্ত নই
অামি বিদ্রোহ জাগাই অামার পৃথিবীময়।
অামি রাতের অাঁধারে চুপি-চুপি
খুঁজি জীবনের কুঁপি,
অামি অবাধ্য, জুলুমের কাছে তাণ্ডব!
অামি অামার পৃথিবীতে তাজ্জ্বব!!
অামি কবিতা লিখতে নিয়েছি জন্ম
এ পৃথিবীতে অদ্য—
অামি অাগুনে ঝলসি, বিদ্রোহে জ্বলছি
`দাবানল’ অামার পদ্য।
(রচনাকালঃ ১৪/০৬/২০১৫ইং)

২. অামি বিদ্রোহী

অামি ন্যায়, অামি সত্য
অামি শত্রুদের জন্য খুঁড়েছি গর্ত।
অামি চাই অন্যায়ের প্রতিকার,
অামি সহ্য করব না কোনো অন্যায়-অবিচার।
হিংস্র হানাদারদের করে দেব ছারখার!
এই কথায় বলে দিচ্ছি প্রতিবার।
অামি বাংলার প্রাণ,
অামি বাংলার মান,
রাজাকারদের ধরিব দুই কান—
করে দেব দু’খান!
অামি দরকার হয় করিব রক্তের পানি পান।
যাহারা মানুষকে মানুষ ভাবে না,
তাহাদের কুকুরের সাথেও মানায় না।
তাহাদের পাঁজরে অামি লাথি দেব বারবার—
বন্ধ করে দেবো তাহাদের অপকর্মের কারবার।
অামি দুঃসাহসী, অামি নতুন প্রজন্মের অভিযাত্রী…
আমাকে পাড়ি দিতে হবে এক ভয়ংকর রাত্রি!
সেইজন্য অামি করি না’কো ভয়,
বাঙালির হবে না’কো ক্ষয়;
অামরাই একদিন করব জয়,
পাশে অাছে অদম্য বই।
অামি দুর্বার,
করে দেব ঘৃণ্য মনুষ্যত্বকে চুরমার!
অামি রণবীর চৌহান,
দেশের জন্য চাষীরা ফলাবে ধান;
অার দিতে হবে না তাজা প্রাণ—
পাকিস্তানিদের দিতে হবে রক্তের প্রতিদান।
অামি নই ঘুমন্ত; অামি দুরন্ত, অামি জ্যান্ত সানি!
পৃথিবীর বুকে নিঃসংকোচে অাজ মহাবিদ্রোহ হানি।
(রচনাকালঃ ২২/০৮/২০১১ইং)

৩. অাজকের অামি

অাকাশে উঠিয়াছে চন্দ্র;
অামি নই রবীন্দ্র,
অাম নই শূদ্র,
অামি নিজ প্রতিভায় অতন্দ্র।
অামার মস্তক শত্রুদের কাছে হইবে না নত,
মানবতাই অামার ব্রত।
তাই সময় যায় যতোই…
দেশকে নিয়ে ভাবি ততোই।
অামি অাকাশে অালোকিত তাঁরা;
অামি নই দিশেহারা,
অামি নই পথহারা,
অামি নতুন গাছের চারা।
অামি কৃষকের দেহের ঘাম,
অামার কাছে বড়ো অাল্লাহর কালাম।
অামি নদীর মতো বহমান…
বাংলার নাম লিখতে যেয়ে বীর সন্তানেরা দিয়েছে তাজা প্রাণ।
অামি অাবারও চাই তাঁদের—
দেশ কিনলাম রক্তের দামে যাঁদের।
সময়ের দাবিতে তাঁদের মতো অাজও অামার রক্তে ওঠে ঝাণ্ডা!
জীবনের সাথে অাজ মরণের পাণ্ডা।
(রচনাকালঃ ০৩/১১/২০১১ইং)

৪. মহাকাব্য

হে, মহাকাব্য!
অার কতোকাল নীরব থাকব?
কতোকাল অার সন্ত্রস্ততায়,
কালের নিঃসঙ্গতায়,
ধ্বংসখেলা হবে পক্ত!
অারও কতো মানুষ মরবে,
অকাতরে ঝরবে রক্ত!!
অারও কতো যুদ্ধ, অারও কতো
দানবের কালো নখড়ের হিংস্রতা;
হে, মহাকাব্য! উত্তর কি দেবে তা?

তবু, মহাকাব্য!
অাজ শুধু হাঁসব;
তুমি হয়ে উঠো অাজ এই বিশ্বমাঝ
বিদ্রোহী এক বর্ম,
`অাজ মৃত্যু, নয়তো জন্ম’।
(রচনাকালঃ ০৫/০৪/২০১৬ইং)

৫. জানান

মহাকাল! তুমি পৃথিবীকে জানান দাও অাজ—
অামি অাসছি…
মাতৃগর্ভ উন্মোচন করে অামি এসেছি, অামি এসেছিলাম, অামি অাসব…
সবিস্ময়ে এক অনাগত ভবিষ্যত দৃষ্টিপাত করে অামার দিকে;
অামি এসেছি ওদের জ্বালাতে, যারা এতোদিন জ্বালিয়েছে শুধু!
অামি এসেছি ওদের পোঁড়াতে, যারা পুড়িয়েছে শুধু!

অামি এসেছি এক বিক্ষুব্ধ রাত্রির দূত হয়ে, যে রাত্রি কখনো প্রভাত দেখেনি!
অামি এসেছি হাজারও মায়ের জঠরবদ্ধ শিশুর অভিযোগ নিয়ে যে শিশু অাজও পৃথিবীর মুখ দেখিনি!
অামি অাসছি… অামি এসেছি… অামি অাসব…

অামার বিবেকসত্তা লুণ্ঠিত করেছে ওরা!
অামার বোনকে ধর্ষিতা করেছে ওরা!
অামার বাবাকে চোখের সামনে জখম করেছে ওরা!
অামার মাকে বিধবা করেছে ওরা!
তাদের ধ্বংস না দেখে শান্ত হব না অামি; তাদের মরণ না দেখে অামার প্রতিশোধকে হেরে যেতে দেব না অামি।
অামি এসেছি… অামি এসেছিলাম… অামি অাসব…
তাই মহাকাল! অাজ জানান দাও পৃথিবীতে—
বিনিদ্র অামি অাজ যুগে যুগে রাতে;
ওদের মরণ না দেখে অামি ঘুমোবো না, অামি ঘুমোতে পারি না, অামার দু’চোখে ঘুম অাসে না!

চোখজুড়ে ভীষণ অগ্নিদহন অাজ দাউ দাউ করে জ্বলে!
অার অামার অতৃপ্ত মরণক্ষুধা কাতরায় নতুন যুদ্ধের কোলাহলে…
(রচনাকালঃ ০৬/০২/২০১৭ইং)

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩০:২৪   ৫২৬ বার পঠিত