শনিবার, ২৭ মে ২০১৭
এসি বিস্ফোরণে ঘটনা বেড়েই চলেছে
Home Page » এক্সক্লুসিভ » এসি বিস্ফোরণে ঘটনা বেড়েই চলেছেবঙ্গ-নিউজঃ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। একইসঙ্গে বেড়ে চলেছে এসি বিস্ফোরণে হতাহতের সংখ্যাও। এসি বিক্রেতা ও মেরামতকারীরা বলছেন, নিম্নমানের এসি হওয়ার কারণে এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কম্প্রেসার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে।
২০১৬ সালের ৫ জুলাই রাজধানীর গুলশানের নর্দা এলাকায় একটি সেলুনে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে দগ্ধ হন ১৪ জন। এর মধ্যে ৯ জন গুরুতর দগ্ধ হন। দীর্ঘদিনে চিকিৎসায় তারা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল এলিফ্যান্ট রোডে এক ভবনে এসি বিস্ফোরণে দগ্ধ হন প্রকৌশলী উৎপল চক্রবর্তী। এরপর বার্ন ও পরে সিটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায়ী উৎপল ২০ মে সন্ধ্যায় মারা যান।
একই বছরের ১৮ জুলাই রাজধানীর খামারবাড়িতে একটি অফিসের এসি মেরামতের সময় বিস্ফোরণে দগ্ধ হন নাদিম ও হাসান নামের দুই টেকনেশিয়ান। ঘটনার পরপরই তাদেরকে ঢামেকে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘদিন অচল থাকা এসি মেরামত করে চালুর সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে তারা আহত হন।
পরের মাসের ২৭ তারিখে টিপু সুলতান রোডের অবস্থিত নিজ বাড়িতে এসি বিস্ফোরণে আহত হন শিশু নাতি ফাহিমসহ পারুল বেগম। ওই ঘটনার পরপরই দুইজনকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। ওইদিনই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাহিম মারা যায়। এরপর ২ সেপ্টেম্বর পারুল বেগম মারা যান।
এসি বিক্রেতারা জানান, অনেক সময় কম্প্রেসারের ভেতরে জ্যাম লেগে থাকে, গ্যাস লিক হয়ে যায়। সময়মতো সার্ভিসিং না করালে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এ ছাড়া ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারণেও এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তারা জানান, বৈদ্যুতিক হাই ভোল্টেজের কারণেও এসব ঘটনা ঘটে। হাইভোল্টেজের কারণে যেকোনো ইলেক্ট্রিক মেশিনের ওপর চাপ সৃষ্টি হলেই সেখানে সমস্যা হয়। এ জন্য প্রতিটি ভবনে সার্কিট ব্রেকার, ভালো মানের আর্থিং লাইন থাকার কথা জানান তারা।
এলজি বাটারফ্লাই কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, এসির প্রেসার বেড়ে গেলে কম্প্রেসার বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। অনেক সময় বার্নেবল গ্যাসের কারণেও ঘটতে পারে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা। নিয়ম করে ভালো মানের টেকনেশিয়ান দিয়ে এসির সার্ভিসিং করানো উচিত। রক্ষণাবেক্ষণ না করলেও অনেক সময় সংযোগস্থলে ধুলোবালি জমে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যেটা সবসময় চেকআপে রাখতে হয়। আবার বজ্রপাতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াও এসি বিস্ফোরণের একটি কারণ। এ জন্য ভবনগুলোর ছাদে বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা রাখা উচিত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিদেশ থেকে এসির যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয়। এসব মানহীন যন্ত্রাংশই শহরের বিভিন্ন অনুমোদনহীন কারখানায় দামি ব্র্যান্ডের নাম লাগিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। তিনি জানান, শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রায়ই নকল এয়ারকন্ডিশন আটক করে। আটকের পর দেখা যায়, সেগুলোতে নামি ব্র্যান্ডের নাম ব্যবহার করা হলেও মূলত সেগুলো নিম্নমানের। এসব নিম্নমানের এসিতেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৫২:১৫ ৫০২ বার পঠিত