রবিবার, ১৪ মে ২০১৭
লালমনিরহাটে চরাঞ্চলে ব্যক্তি উদ্যোগে বাধ নির্মাণ শুরু
Home Page » সারাদেশ » লালমনিরহাটে চরাঞ্চলে ব্যক্তি উদ্যোগে বাধ নির্মাণ শুরু
বঙ্গ-নিউজঃমিজানুর রহমান লালমনিরহাট প্রতিনিধি: নদী ভাঙ্গনের ঝুকির মুখে ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার পরিবারের কথা চিন্তা করে, পুনরায় ব্যক্তি উদ্যোগে বাধ নির্মাণের কাজ শুরু করলেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান। বাধ নির্মাণ শুরু হওয়ায় উপকৃত হবেন হাজার হাজার পরিবার। রবিবার সকাল ১০ টার সময় ঐ ইউনিয়নের তালেব মোড় এলাকার গুচ্ছগ্রামের সামনে বাধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু উত্তোন করে বাধ নির্মাণে এতে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা খরচ হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য সোলেমান মিয়া।এসময় উপস্থিত ছিলেন, গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও নদী ভাঙ্গনের ঝুকির মুখে পতিত শতশত নারী ও পুরুষ। এর আগে ঐ এলাকায় পুনরায় বাধ নির্মাণের দাবিতে শতশত নারীপুরুষ মানববন্ধন করেন এবং তারা বাধ নির্মাণে বাধাদানকারীকে প্রতিহত করার ওয়াদা করে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
উল্লেখ্য, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের তালেব মোড় এলাকায় গুচ্ছগ্রামের সামনে একটি শক্তিশালী বাধ না থাকায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে তিস্তা নদীর কড়াল গ্রাসে নদী ভাঙ্গনের মুখে পড়েন গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সিন্দুর্না ও পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার পরিবার। এতে শতশত হেক্টর জমির আবাদি ফসল নদীগর্ভে তলিয়ে যায় এবং পুকুরের মাছ ভেসে যায়। শতশত ঘরবাড়ি বসতভিটা হাড়িয়ে হাজার হাজার লোক মানবেতর জীবন যাপন করেন।
এবিষয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা ঐ ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমানকে বাধ নির্মাণের জন্য অনুরোধ করেন। ৪টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের দুঃখ দুর্দশার কথা চিন্তা করেন এবং নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে গতবারে ঐ এলাকায় বাধ নির্মাণ করেন চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান। এরপরেও প্রবল বর্ষায় তা ভেঙ্গে যাওয়ায় পুনরায় একটি বালু তোলার মেশিন দিয়ে বাধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল ঐ চেয়ারম্যান ও এলাকার সাংসদের নামে মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করলে মনের দুঃখে বাধ নির্মাণ বন্ধ করে দেন তিনি। ফলে আবারো নদী ভাঙ্গনের ঝুকির মুখে পড়েন ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার পরিবার।
“বাধ নির্মাণ বন্ধ হওয়ায় ঝুকির মুখে ৪টি ইউনিয়নের ২০ হাজার পরিবার” শিরনামে বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে ফলাও করে লেখালেখি হয়। স্থানীয়রা এর জন্য মানববন্ধ করেন এবং পুনরায় বাধ নির্মাণের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে জোড়ালো দাবি জানান। ফলে রবিবার সকালে পুনরায় বাধ নির্মাণের জন্য নির্দেশ দেন ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান। ঐ ইউপির ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য সোলেমান মিয়া জানান, জনগনের দুঃখ দুর্দশার কথা চিন্তা করে পুনরায় বাধ নির্মাণ শুরু হওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। এছাড়াও জনগণের দুঃখ দুর্দশার কথা চিন্তা করে ঐ বাধ নির্মানে তিনি সবার সার্বিক সহযোগীতা চান। এবিষয়ে কথা হয় ঐ এলাকার রহিমা বেগম, হযরত আলী, অহেদুজ্জামান (৫৫), মকবুল হোসেন (৭০), জাহাঙ্গীর আলম (৩০), জিয়ারুল (৪৫), আব্দুল মোতালেব (৫০), আব্বাস আলী (৬৭), আনসার আলী (৬৫), জাকারিয়া (৮০), কেতাবুল (৫৫), মোমেনা বেগম (৫০), রহিমা বেগম (৬০), নার্গিস বেগম(৩৫) এর সাথে। তারা সকলেই একটি কথা বারবার বলেন, গরিব বানভাসি মানুষের কথা চিন্তা করে পুনরায় বাধ নির্মাজের কাজ শুরু হওয়ায় আমরা চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানাই। এর ফলে আমাদের শেষ আশ্রয় স্থল এই গুচ্ছগ্রামটিও নদী গর্ভে তলিয়ে যায় থেকে রক্ষা পাবে আর হাজারহাজার মানুষের উপকার হবে।
এবিষয়ে কথা হয় গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমানের সাথে। তিনি জানান, আমি জনগনের দুঃখ দুর্দশার কথা চিন্তা করে ব্যক্তিগত খরচ করে বাধ নির্মাণ করছি আর কিছু লোক জনগণের তামাসা দেখার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। তবে কোন বাধাই ঐ বাধ নির্মাণ বন্ধ রাখতে পারবেন না এবং জনগণকে সাথে নিয়ে তিনি এ বাধ নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাবেন বলে জানান ঐ চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৭:২২ ৪০৭ বার পঠিত