রবিবার, ১৪ মে ২০১৭

তিনশ কেজি স্বর্ণালঙ্কার ‘আটক’-আপন জুয়েলার্সের

Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » তিনশ কেজি স্বর্ণালঙ্কার ‘আটক’-আপন জুয়েলার্সের
রবিবার, ১৪ মে ২০১৭



 

বঙ্গ-নিউজ: স্বর্ণ ও রত্ন সংগ্রহের তথ্যে অস্বচ্ছতা এবং মালিকের ‘অবৈধ সম্পদের’ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবেই রোববার এই অভিযান চালানো হয় বলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান জানান।

 

 

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ শাখার ভ্যাট কর্মকর্তারা ছাড়াও র‌্যাব সদস্যরা যোগ দেন এই অভিযানে।

অভিযান শেষে রাতে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক দীপা রানী হালদার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পাঁচটি শাখার চারটি থেকে মোট ২৮৬ কেজি স্বর্ণালঙ্কার এবং ৬১ গ্রাম হীরা ‘আটক’ করা হয়েছে। এর সর্বমোট মূল্য ৮৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

আটক স্বর্ণালঙ্কার শুল্ক আইনের বিধান অনুসারে প্রতিষ্ঠানগুলোর জিম্মায় রাখা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

শুল্ক গোয়েন্দারা জানান, এই সোনার গহনা এখন তাদের কাছে থাকবে, তবে তারা বিক্রি করতে পারবেন না।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এসব পণ্যের কাগজপত্র গভীরভাবে যাচাই করা হবে, অনুসন্ধানে কোনো অনিয়ম প্রমাণিত হলে প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠান মালিকের বিরুদ্ধে চোরাচালান ও মানি লন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অভিযানকারী দলের প্রাথমিক অনুসন্ধানে আপন জুয়েলার্সের সব শাখা কর্তৃক উপস্থাপিত দলিলাদির সঙ্গে পাওয়া সোনার গরমিল পাওয়া গেছে বলে শুল্ক গোয়েন্দারা জানান।

দুপুরে অভিযানের পর গুলশানের সুবাস্তু টাওয়ারে আপন জুয়েলার্সের শোরুমটি বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানান অধিদপ্তরের যুগ্ম কমিশনার শাফিউর রহমান।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এটা সিলগালা করেছি। এখন এটা খুলতে হলে তাদের প্রতিনিধি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।”

তখন বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মহাপরিচালক মইনুল খান বলেছিলেন, “দেশে তো স্বর্ণের আমদানি নেই। তারপরও তারা এগুলো কোথা থেকে কীভাবে এনেছে… বৈধ উপায়ে আনলে ভাল, না হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।”

সীমান্ত স্কয়ারে আপনের শোরুমে অভিযানে থাকা শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের উপ পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, “ওদের কাছে ডায়মন্ডের যে অর্নামেন্টসগুলো পেয়েছি সেগুলোর তথ্য উপাত্ত চেয়েছি। কিন্তু তারা পূর্ণাঙ্গভাবে দাখিল করতে পারেননি, সেখানে কিছুটা অস্বচ্ছতা রয়েছে।”

আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ বনানীতে দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের বাবা।

অভিযানের বিষয়ে দিলদার আহমেদ  বলেন, “আমরা ৪০ বছরের পুরানো প্রতিষ্ঠান। এখানে প্রায় পাঁচ লাখ লোক কাজ করে। শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ আমাদের কাছে যে যে কাগজপত্র চেয়েছে, তা আমরা আগেই দিয়েছি।”

দিলদারের বড় ছেলে সাফাত আহমেদের জন্মদিনের পার্টির কথা বলে গত ২৮ মার্চ ঢাকার বনানীর একটি বিলাসবহুল হোটেলে নিয়ে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয় বলে বনানী থানায় একটি মামলা হয় এক সপ্তাহ আগে। ওই মামলার অপর আসামিদের মধ্যে দুজন সাফাতের বন্ধু, বাকি দুজন তার দেহরক্ষী ও গাড়িচালক।

গত বৃহস্পতিবার সাফাত ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করার পর পুলিশ তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

ধর্ষণের শিকার এক ছাত্রী বলেছেন, “ধর্ষণের পর সাফাত তাকে বলেছিলেন, তারা সোনা চোরাচালান করেন। দুই একটা খুন বা ধর্ষণ করে পুলিশকে টাকা দিলে তাদের কেউ কিছু করতে পারবে না।”

বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৬:০৫   ৪৪২ বার পঠিত