বুধবার, ১০ মে ২০১৭
হাতীবান্ধায় বাধ নির্মাণ বন্ধ হওয়ায় ঝুকির মুখে ৪টি ইউনিয়নের ২০ হাজার পরিবার!
Home Page » সারাদেশ » হাতীবান্ধায় বাধ নির্মাণ বন্ধ হওয়ায় ঝুকির মুখে ৪টি ইউনিয়নের ২০ হাজার পরিবার!
বঙ্গ-নিউজঃ মিজানুর রহমান লালমনিরহাট প্রতিনিধি:লালমনির-হাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ব্যক্তি উদ্যোগে বাধ নির্মাণ কাজ হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নদী ভাঙ্গনের ঝুকির মুখে রয়েছেন ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার পরিবার।মঙ্গলবার বিকালে এ নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করায় বাধ নির্মাণ বন্ধ রেখেছেন বলে দাবি করেন গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান।
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে ঐ উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তালেব মোড় এলাকায় গুচ্ছগ্রামের সামনে একটি শক্তিশালী বাধ না থাকায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে তিস্তা নদীর কড়াল গ্রাসে নদী ভাঙ্গনের মুখে পড়েন গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সিন্দুর্না ও পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার পরিবার।
এতে শতশত হেক্টর জমির আবাদি ফসল নদীগর্ভে তলিয়ে যায় এবং পুকুরের মাছ ভেসে যায়। শতশত ঘরবাড়ি বসতভিটা হাড়িয়ে হাজার হাজার লোক মানবেতর জীবন যাপন করেন।
ঐ ইউপির ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য সোলেমান মিয়া জানান, জনগনের দুঃখ দুর্দশার কথা চিন্তা করে গতবছর ঐ গুচ্ছগ্রামের সামনে দেড় কিঃমিঃ বাধ নির্মান করেন গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান। এতে তার প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। এরপরেও প্রবল বর্ষার কারনে ঐ বাধ ভেঙ্গে গিয়ে ৪টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন প্রায় শতাধিক পরিবারের জনগণ।
এরপরেও জনগণের দুঃখ দুর্দশার কথা চিন্তা করে এবারে পুনঃরায় বাধ নির্মাণের উদ্যোগ নেন ঐ ইউপি চেয়ারম্যান। এসময় তিনি দুটি স্যালোমেশিন দিয়ে প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে শক্তিশালী ও মজবুত বাধ নির্মান করছিলেন। একটি মহল চেয়ারম্যানের জনবান্ধব সেই কাজে ইর্শ্বান্বীত হয়ে মিথ্যা সংবাদ ছড়াচ্ছেন। ফলে চেয়ারম্যান মনের দুঃখে সেই বাধ নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেন।
এছাড়াও জনগণের দুঃখ দুর্দশার কথা চিন্তা করে ঐ বাধ নির্মানে তিনি সবার সার্বিক সহযোগীতা চান।
এবিষয়ে কথা হয় ঐ গুচ্ছ গ্রামের জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী রহিমা বেগমের সাথে। তিনি জানান, হামাগুলার জীবনের কি কোন দাম নাই। চেয়ারম্যান সাব হামার কথা চিন্তা করে এই বাধ তৈয়ার করছিলো আর কায়বা তা বন্ধ করে দিলো।
এবারত যদি আবার মোদের বাড়ি বানত ভাসি যায়, তালে মোরা যামু কোটে আর থাকমু কোথায়।
একই গুচ্ছ গ্রামের বৃদ্ধ হযরত আলী জানান, বাহে সাংবাদিকের বেটা! হামার এই বাধ কি বান্ধা হবে না। এবারেও এই বাধ ভাঙ্গলে মোদের মরা ছাড়া বাঁচার উপায় নাই।
একই কথা বলেন ঐ এলাকার অহেদুজ্জামান (৫৫), মকবুল হোসেন (৭০), জাহাঙ্গীর আলম (৩০), জিয়ারুল (৪৫), আব্দুল মোতালেব (৫০), আব্বাস আলী (৬৭), আনসার আলী (৬৫), জাকারিয়া (৮০), কেতাবুল (৫৫), মোমেনা বেগম (৫০), রহিমা বেগম (৬০), নার্গিস বেগম(৩৫)। তারা সকলেই একটি কথা বারবার বলেন, গরিব বানভাসি মানুষের কি জীবনের কোন মুল্য নাই। বাধ এলাকায় একটি পাথরও না উঠে কিভাবে তারা মিথ্যা বদনাম করলো। তাদের কাছে কি হাজার হাজার অসহায় মানুষের জীবনের কোন মুল্য নাই। এমনিতে বারবার নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে তারা সব কিছুই হাড়িয়েছে। আর এবারে যদি শেষ আশ্রয় স্থল এই গুচ্ছগ্রামটিও নদী গর্ভে তলিয়ে যায়। তাহলে মরা ছাড়া তাদের আর কোন উপায় নায়। তবে চলমান বাধ নির্মাণের সময় ঐ দুটি স্যালোমেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনের কথা কেউ বলতে পারেন নি।
এবিষয়ে কথা হয় গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমানের সাথে, তিনি জানান, বারবার যখন নদী ভাঙ্গনের কবলে ৪টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের দুঃখ দুর্দশার শেষ থাকে না। তখন ঐ সমস্থ কিরমিনাল শয়তানেরা থাকে কোথায়। আমি জনগনের দুঃখ দুর্দশার কথা চিন্তা করে ব্যক্তিগত খরচ করে বাধ নির্মাণ করছি আর তার জনগণের তামাসা দেখার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করার জন্য প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে গতবারে ঐ বাধ নির্মাণ করি। প্রবল বর্ষায় তা ভেঙ্গে যাওয়াএ কারনে এবারেও লক্ষলক্ষ টাকা খরচ করে দুটি বালু তোলার মেশিন দিয়ে বাধ নির্মাণ করছিলাম। যেখানে একটি পাথরও সেই মেশিন দিয়ে উঠে নাই। অথচ তারা আমার ও এলাকার সাংসদের নামে মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করছে। এখন জনগণেই সিদ্ধান্ত নিবেন বাধ নির্মাণ সম্পর্কে।
তবে কোন বাধাই ঐ বাধ নির্মাণ বন্ধ রাখতে পারবেন না এবং জনগণকে সাথে নিয়ে তিনি বাধ নির্মাণ করবেন বলে ঐ চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২২:২৫:৩২ ২৯৯ বার পঠিত