বুধবার, ১০ মে ২০১৭
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় ইইউ
Home Page » প্রথমপাতা » অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় ইইউবঙ্গ-নিউজঃ বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আশা করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৷ তাদের আশা, ২০১৪ সালের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে৷বাংলাদেশের প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দলও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে৷
৯ মে ‘ইউরোপ দিবসের’ আগে ঢাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইইউ রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদোন বলেন, ‘‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন বৈশ্বিক এজেন্ডা হিসেবে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনকে উৎসাহিত করে৷”
তিনি বলেন, ‘‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ কাম্য৷ আর এজন্য আগামীতে সব ধরণের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া অংশগ্রহণমূলক হবে বলে আশা করি৷” তিনি আশা করেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনকে উৎসাহিত করতে ইইউ’র যে এজেন্ডা তাতে বাংলাদেশ সাড়া দেবে৷”
তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে ২০০১ সালে ইইউ’র চুক্তির উল্লেখ করে বলেন, ‘‘চুক্তির প্রথম অনুচ্ছেদে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভিত্তি বলে অভিহিত করা হয়েছে৷”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বের যে কোনো দেশেই গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে সমস্যা থাকে৷ আমি যদি বলি- এখানকার পরিস্থিতিতে আমি খুবই খুশি, তবে আপনারা হয়তো কেউ আমার কথা বিশ্বাস করবেন না৷”
হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সরকারের এখনকার সম্পর্ককে ইতিবাচক উল্লেখ করে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘‘অংশগ্রহণমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া উচিত৷ সমাজের কোনো অংশকে বিচ্ছিন্ন রাখা উচিত নয়৷”
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে ইইউ দূতের আগ্রহের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা ২০১৪ সালের ৫ জানুযারির নির্বাচনের আগে থেকেই সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কথা বলে আসছি৷ সেটা তখন হয়নি বলেই আমরা নির্বাচনে যাইনি৷ এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে যে, এ দেশে নির্বাচনে অংশ নেয়ার মতো পরিবেশ পরিস্থিতি নেই৷” দুদু বলেন, ‘‘বিএনপি একটি নির্বাচনমুখী দল৷ বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারে ছিল, বিরোধী দলেও ছিল৷ বিএনপি চায় সব দলের অংশগ্রহণে একটি স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন৷ আর তার জন্য বিএনপি একটি নির্বাচনকালীন সরকারের কথা বলছে৷ কারণ, দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়৷”
বিএনপি’র এই নেতা আরো বলেন, ‘‘চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে এখন অসংখ্য মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে হয়৷ এই একই ধরণের মামলা কিন্তু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও আছে৷ কিন্তু তা প্রত্যাহার করা হয়েছে৷ সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলেও মন্ত্রীত্ব যায় না৷ এটা তো সমতা নয়৷ নির্বাচনের জন্য তাই সমতা প্রয়োজন৷”
তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘‘আমরা সব সময়ই চাই দেশে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন৷ আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বিশ্বাসী৷ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ( ২০১৪ সালের ৫ জানুযারি ) দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল যাতে অংশ নেয়, আমরা সে চেষ্টা করেছিলাম৷ আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, নিজে টেলিফোন করেছিলেন নির্বাচন নিয়ে আলাপ আলোচনার জন্য৷ কিন্তু তারা নির্বাচনে আসেননি৷ ভুল পথে পা বাড়িয়েছিলেন৷ ভুল সিদ্ধান্তের কারণে নির্বাচন থেকে সরে গিয়েছিলেন৷ আর এই ভুল সিদ্ধান্ত জাস্টিফাই করার জন্য তারা সহিংসতা চালিয়েছে৷”
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘‘আমরা দেশে গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা চাই৷ আর এজন্যই চাই সব দল নির্বাচনে অংশ নিক৷ আমরা আশা করি, বিএনপি তার অতীতের ভুল বুঝতে পেরে সামনের নির্বাচনে অংশ নেবে৷”
বাংলাদেশ সময়: ১৩:২০:২৩ ৪৮৫ বার পঠিত