শনিবার, ২২ এপ্রিল ২০১৭
ইলিশের নামে বিষাক্ত শ্যাড ফিস
Home Page » প্রথমপাতা » ইলিশের নামে বিষাক্ত শ্যাড ফিস
বঙ্গ-নিউজ: দেশে প্রতিবছরই ইলিশের উৎপাদন বেড়ে চলেছে। গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে ইলিশের আমদানি বেড়েছে আড়াই গুণের বেশি। বিপুল আমদানি থাকা সত্ত্বেও বিদেশি ইলিশের পাশাপাশি ওমান থেকে শ্যাড ফিশ নামের এক ধরণের ইলিশসদৃশ মাছ আমদানি করা হচ্ছে। জন স্বাস্থ্যের জন্য যা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
মৎস অধিদপ্তরের তথ্য মতে, স্থানীয় বাজারে চন্দনী ও কলম্বো নামে পরিচিত শ্যাড ফিশে রয়েছে সিসা ও ক্যাডমিয়াম যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ইলিশ হিসেবে ক্রেতাদের কাছে এই মাছ বিক্রি করে প্রতারণার ঘটনা ঘটছে অহরহ। চলতি অর্থবছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ওমান থেকে ৭ হাজার ৭২৯ মেট্রিক টন শ্যাড ফিস দেশে আমদানি হয়েছে।
মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জানায়, ২০১৪ সালে শ্যাড ফিশের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা যায়, এতে সিসা ও ক্যাডমিয়ামের উপস্থিতি রয়েছে। তাছাড়াও হিমায়িত এসব মাছ প্যাকেটজাত হওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বাজারে পৌঁছাতে কয়েক মাস সময় লাগে। ফলে সাধারণ দৃষ্টিতেও এই মাছ স্বাস্থ্যকর নয়।
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফ আজাদ বলেন, ‘শ্যাড ফিসের নমুনায় ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। আমরা গত বছরের শুরুতে এই বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি। পরে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এই বিষয়টি সম্পর্কে জানানো হয়েছে। তবে এখনো কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আমদানি নিষেধাজ্ঞা না থাকায় বিদেশি ইলিশের পাশাপাশি ইলিশসদৃশ শ্যাড ফিশ আমদানি অব্যাহত রয়েছে।
গোয়ালন্দের মাছ ব্যবসায়ী মো. বাদল বিশ্বাস বলেন, ‘আমদানিকারকদের কাছ থেকে আমরা হিমায়িত ইলিশ কিনি। বছরের মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত দেশে ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ থাকায় দেশি ইলিশের বিকল্প হিসেবে এসব বিক্রি হয়।’
তিনি জানান, প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম আকারের ইলিশের প্রতিটি প্যাকেট ৩০০ টাকা কেজি দরে আমদানিকারকের কাছ থেকে কিনতে হয়। এসব মাছ তারা বিক্রি করেন ৩৩০ টাকায়। হিমায়িত দেশি ইলিশের ক্ষেত্রে একই মৌসুমে প্রতি কেজি ৪০০ টাকায় কিনে বিক্রি করেন ৪২০ টাকায়।
তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলে ইলিশের নামে শ্যাড ফিস বিক্রি করা হয়। এই প্রবণতা উত্তরবঙ্গে সবচেয়ে বেশি। এই মাছের দাম কম হওয়ায় ক্রেতারা সহজেই কিনে নেন। মাছগুলো কেটে লবন দিয়ে বরিশালের লোনা ইলিশ হিসেবে সাধারণ ক্রেতাদের ঠকানোর ঘটনা স্বীকার করেন তিনি। বাদল জানান, স্থানীয়ভাবে চন্দনী ও কলম্বো নামে পরিচিত ওমানের শ্যাড ফিশ প্রতি কেজি ৯০ টাকা করে দরে বিক্রি করা হয়
বাংলাদেশ সময়: ২২:১৪:৪০ ৫১৩ বার পঠিত