সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৭

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের দুই দশক

Home Page » প্রথমপাতা » মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের দুই দশক
সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৭



 

 

 বিবিসি

রয়েছে ভাস্কর্য আর ভবনের ওপরে তাকালে চোখে পড়বে যুদ্ধবিমান। সাধারণ দর্শকদের অনেকেই ঘুরে ঘুরে তা দেখছিলেন আর ছবি তুলছিলেন। কামরুল ইসলাম এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

  তিনি বলছিলেন, “এখানে একসাথে এত কিছু সংগ্রহ অন্য কোথাও নেই। এখানে আসার মাধ্যমে অনেকটাই জানা যায় কি হয়েছিলো”

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের যাত্রা শুরু হয়েছিলো ১৯৯৬ সালের ২২ শে মার্চ। রাজধানী ঢাকার সেগুন বাগিচায় সরু এক গলিতে দুই তলা ভবনে। আটজন ট্রাস্টির উদ্যোগে চালু হয়েছিলো সেই জাদুঘর। প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টিদের একজন আক্কু চৌধুরী।

তিনি বলছিলেন, “একাত্তরে এত শহীদ হলো, এত রক্ত দিলাম আমরা কিন্তু মুক্তিযুদ্ধকে সঠিকভাবে অনেকেই জানেনা। তখন মনের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক কাজ করেছিলো। তারপর শহীদ জননী জাহানারা ইমাম আমাদেরকে একটু ঝাঁকি দিলেন গন আদালতের মাধ্যমে। আমরাও আবার জেগে উঠলাম। এরপর আমরা এই যাদুঘরের স্বপ্ন দেখলাম। এরপর গ্রামে-গঞ্জে গেলাম, মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বললাম। বন্ধুদের মধ্যে যাদের একটু টাকা পয়সা ছিলো তাদের সাহায্য চাইলাম। তারা সবাই অনেক উৎসাহ দিয়েছিলো”

 
বিশ হাজারের বেশি স্মৃতি স্বারক রয়েছে এখানে। বধ্যভূমির কঙ্কাল থেকে শুরু করে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত সামগ্রী, অস্ত্র, ঐতিহাসিক ছবি, চিঠি ও মুক্তিযুদ্ধে নানা দলিল সহ আরো অনেক কিছু।
এভাবেই একটা দুটো করে সংগ্রহ হয়েছিলো মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত স্মৃতিস্বারক। যাতে রয়েছে বধ্যভূমির কঙ্কাল থেকে শুরু করে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত সামগ্রী, অস্ত্র, ঐতিহাসিক ছবি, চিঠি ও মুক্তিযুদ্ধে নানা দলিল সহ আরো অনেক কিছু। এই জাদুঘরটি এখন নয় তলা।বিশ হাজারের বেশি স্মৃতি স্বারক রয়েছে এখানে। ট্রাস্টিদের একজন প্রকাশক মফিদুল হক বলছিলেন প্রদর্শনীর জন্য স্মৃতিস্বারক সংগ্রহই ছিলো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।তিনি বলছেন, “শুরুতে মনে হয়েছিলো আমরা হয়তো প্রথমে যে ধরনের টাকা পয়সা লাগে তা তুলতে পারবো কিন্তু স্বারক কোথায় পাবো? যার কাছে সে স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে তা তো তিনি আগলে রেখেছেন। সেটা কি তিনি দেবেন? কিন্তু আমরা যখন আবেদন জানালাম তখন যে সাড়া মিলেছিলো ওটাই আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছিলো যে এটা সম্ভব। এখন আর সেটা স্বপ্ন নয় তা বাস্তব হয়ে উঠেছে”

 

মি হক বলছিলেন আলাদা করে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক একটি জাদুঘর তৈরি কেন প্রয়োজন বলে মনে করেছিলেন তিনি ও তার সহযোগীরা। “আমাদের মনে হয়েছিলো এরকম একটা বিশাল ঘটনা, জাতির এত বড় অর্জন, কত মানুষের কত আত্মদান, এই স্মৃতিগুলো কি কোথাও সংরক্ষিত হবে না? এসব করার জন্য আমরা সরকারের কাছেই দাবি করি। মুক্তিযুদ্ধের পর তখন ২৫ বছর পার হয়ে গেছে। দাবি তুললে আরো ২৫ বছর পার হবে। সব স্মৃতি মুছে যাবে। মুক্তিযুদ্ধ তো হয়েছিলো সমাজের শক্তিতে। তো সেই শক্তির উপর নির্ভর করে যদি এই উদ্যোগটা নেয়া যায় তাহলে তা সম্ভব। সেটাই ছিলো মুল ধারনা”স্মৃতিস্বারক ছাড়াও নতুন জাদুঘরে এখন রাখা হয়েছে পাঠাগার, অডিও-ভিজুয়াল প্রদর্শনী সহ অনেক আধুনিক ব্যবস্থা। শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনির চৌধুরীর ছেলে আসিফ মুনির বলছেন এটি তরুণ প্রজন্মকে আরো বেশি আকর্ষণ করবে।

বিবিসি

তিনি বলছেন, “যেটুকু উদ্বোধনের সময় দেখলাম মনে হলো বেশ সম্ভাবনাময়। বিশেষ করে এখানে যেভাবে মাল্টিমিডিয়া থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তাতে নতুন প্রজন্ম সেটা দেখে উপলব্ধির যায়গাটা পাবে”

সুত্রঃ বিবিসি বাংলা

 

 

বাংলাদেশ সময়: ৯:১৩:০১   ৩৮০ বার পঠিত