রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০১৭

তিন শতাব্দী দেখে মারা গেলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি

Home Page » এক্সক্লুসিভ » তিন শতাব্দী দেখে মারা গেলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি
রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০১৭



বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি মারা গেছেন। তিনি ১১৭ বছর বয়সে ইতালিতে মারা যান। তাকে তিন শতাব্দীর সাক্ষী বলা হয়। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৯৯ সালের ২৯ নভেম্বর ইটালির পিডমন্ট অঞ্চলে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পেরিয়ে তিনি একবিংশ শতাব্দির ২০১৭ পর্যন্ত দেখে গেছেন। তিনি ৯০ বার ইটালির সরকার পরিবর্তন হতে দেখেছেন। এই মহিলার নাম এমা মোরানো।

Oldest person emamorano

১৯০০ সালের আগে জন্ম নেয়া জীবিত মানুষদের মধ্যে তিনিই ছিলেন শেষ ব্যক্তি। ২০১৬ সালের ২৯ নভেম্বর তিনি তার ১১৭তম জন্মদিনে বলেছিলেন, তার এই দীর্ঘ জীবনের জন্য তিনি দীর্ঘ দিন ধরে নিয়ম করে তিনটি অভ্যাস চর্চা করে আসছেন। এছাড়া জ্বীনগত ভাবেও তিনি দীর্ঘায়ুর আধিকারী। মিজ মোরানো বংশগত ভাবে দীর্ঘায়ুর অধিকারী হয়েছিলেন। তার মাও ৯১ বছর পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন এবং তার কয়েকজন বোনও ১০০ বছর পর্যন্ত আয়ু পেয়েছিলেন।

তিনি জানিয়েছিলেন, প্রতিদিন সকালের নাস্তায় তিনি দুটি কাঁচা ডিম ও বিকালে একটি করে ডিম খেতেন। আর রাতে খেতেন মুরগীর মাংস। ৯০ বছরের বেশি সময় যাবত প্রতিদিন তিনি এই খাবার খেয়ে আসছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর এক চিকিৎসক তার শরীরে অ্যানিমিয়া শণাক্ত করেন। চিকিৎসক তখন তাকে ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি এই খাদ্যাভ্যাস শুরু করেন। তবে সম্প্রতি তিনি ডিম খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দুটো ডিম খাচ্ছিলেন। আর খাদ্য তালিকায় যুক্ত করেছেন বিস্কুট।

২৭ বছর ধরে মিজ মোরানোর চিকিৎসা করেছেন চিকিৎসক কার্লো বাভা। তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘মিজ মোরানো সবজি বা ফল খুবই কম খেতেন।আমি যখন প্রথম তাকে দেখি তখন তিনি দিনে তিনটি ডিম খেতেন, দুটি কাঁচা এবং বিকেলে একটি অমলেট। আর রাতে খেতেন মুরগির মাংস।’

মিজ মোরানো ছিলেন তার আট ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়। তার থেকে বয়সে ছোট ভাই-বোন সবাই তার অনেক আগেই মারা গেছেন। তার বিবাহ হয়েছিল জোর পূর্বক। তার প্রেমিককে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হত্যা করা হয়েছিল। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন জীবনে আর কখনো বিবাহ করবেন না। পরে তাকে অন্য একজন অস্ত্র ঠেকিয়ে বলেন, ‘তার সাথে বিবাহে রাজি না হলে মোরানোকে মেরে ফেলা হবে। পরে অস্ত্রের মুখে তিনি বিবাহে রাজি হন।’ ১৯৩৭ সালে তার ৬ মাস বয়সী শিশু পুত্র মারা গেলে তিনি আরো হতাশ হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে ১৯৩৮ সালে তিনি বিবাহ বিচ্ছেদ করেন। ১৯৭৮ সালের দিকে তার স্বামী মারা যান।

১১২ বছর বয়সে ইটালির লা স্টাম্পা পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, ‘তার বিবাহিত জীবন কখনোই ভালো ছিল না। বিবাহ বিচ্ছেদও আমার দীর্ঘায়ুর অন্যতম কারণ। কারণ আমি এটা ভেবে তৃপ্ত ছিলাম যে, আমি কারো আধিপত্য মেনে নেইনি।’

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৫৪:৫৪   ৩৭২ বার পঠিত