মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০১৭
কিশোরগঞ্জে পানির নিচে ২৫০ কোটি টাকার ধান
Home Page » এক্সক্লুসিভ » কিশোরগঞ্জে পানির নিচে ২৫০ কোটি টাকার ধানবঙ্গ-নিউজঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সোনার তরী কবিতায় লিখেছেন, ‘কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা’। বাংলার প্রকৃতির সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো কৃষকের ধান কাটার পর আসে বর্ষা। আর ধান কাটার সময় কৃষকের রোদে পোড়া চামড়ার ভাজের নিচে থাকা ছোট চোখ দুটো জ্বল জ্বল করে ওঠে। স্বপ্নময় সোনালী ধান ঘরে তুলে কৃষক সন্তুষ্টির হাসি হাসে।
চিরচেনা সে দৃশ্য এবার বদলে গেছে। অকাল বর্ষণ আর উজানের ঢলে ভেসে গেছে কৃষকের বোরো ক্ষেত। কৃষকের কান্নার নোনা জল মিশে যাচ্ছে অসময়ের স্রোতে। বাঁধ ভেঙ্গে একের পর এক ক্ষেত প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে। কিশোরগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওরে এখন শস্য ক্ষেতে কৃষকের হাসি নেই, আছে কান্না আর হাহাকার। পাহাড়ি ঢল আর অবিরাম বর্ষণের কারণে কোন ভাবেই বাঁচানো যাচ্ছে না শস্য ক্ষেত।
গত এক সপ্তাহে হাওর এলাকার অন্তত ৩০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। কিশোরগঞ্জ জেলার তিনটি হাওর উপজেলা ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম এবং আংশিক হাওর নিকলী ও করিমগঞ্জ উপজেলার অন্তত তিনভাগের একভাগ জমি এরই মধ্যে পানিতে ডুবে গেছে।
সরকারি হিসেব মতে ১০ এপিল সোমবার পর্যন্ত প্লাবিত জমির পরিমাণ হচ্ছে ২৪ হাজার ৭৬০ হেক্টর। প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে আরও অন্তত ৫০ হাজার হেক্টর জমির ফসল। পানিতে ডুবে বিনষ্ট হয়ে গেছে এক লাখ মেট্রিক টন চাল। নতুন চালের উৎপাদনকালীন খরচ প্রতি কেজি ২২ টাকা ধরলেও এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৫০ হেক্টর বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এসব জমিতে আনুমানিক ৬ লাখ মে. টন চাল উৎপাদন হতো।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এই উপ-পরিচালক আরো জানান, ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী, বাজিতপূর ও করিমগঞ্জে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ২৪ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের নাম তালিকা করছি। সরকার ক্ষতিপূরণ দিলে তালিকা দেখে তাদেরকে সাহায্য করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ৯:৩৯:৫৪ ৪৪৪ বার পঠিত