মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০১৭
জাতিসংঘের তদন্তের বিরুদ্ধে মিয়ানমার!?
Home Page » প্রথমপাতা » জাতিসংঘের তদন্তের বিরুদ্ধে মিয়ানমার!?
বঙ্গ-নিউজঃ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠী নিপীড়নের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে চায় মিয়ানমান। এর আগে জাতিসংঘে পাস হওয়া তদন্ত প্রস্তাব কয়েক দিন আগে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রত্যাখান করার পর এবার এবার দেশটির সেনাপ্রধান ওই তদন্ত প্রস্তাবের বিরোধিতার ঘোষণা দিয়েছেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী বলছে, ‘এই তদন্ত প্রস্তাব আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি।’ রাখাইন রাজ্যে দীর্ঘ দিন ধরে বসবাস করা ১০ লাখেরও অধিক রোহিঙ্গাকে ‘বাঙালি’ অনুপ্রবেশকারী দাবি করে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
২৭ মার্চ সোমবার মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবসের প্যারেডে সেনাপ্রধান মিন অং বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে বিশ্বকে জানিয়েছি যে আমাদের দেশে কোন রোহিঙ্গা নেই। আমাদের রাখাইন রাজ্যে থাকা বাঙালি রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয়। তারা অবৈধভাবে এদেশে থাকতে এসেছে।’
মিয়ানমার সেনাপ্রধান বলেন, ‘অবৈধদের বিষয়ে আমরা আমাদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি। মিয়ানমারের সার্বভৌমত্বকে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও বর্ণবৈষম্য জনিত সংকট থেকে সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব আমাদের। আমরা তা পালন করে চলেছি।’
গত ২৪ মার্চ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করার একটি প্রস্তাব জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে পাশ হয়। ওই প্রস্তাব অনুযায়ী রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তের জন্য দেশটিতে একটি অনুসন্ধানকারী দল পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছিল জাতিসংঘ।
প্রস্তাবে বলা হয়, দোষীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ওই তদন্ত চালানো হবে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের এই প্রস্তাব থেকে চীন, ভারত ও কিউবাসহ কয়েকটি দেশ নিজেদের বিচ্যুত রেখেছিল।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে মিয়ানমার সরকারের মদদপুষ্ট উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধদের তাণ্ডবে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা নিহত হন। ঘর ছাড়তে বাধ্য হন ১ লাখেরও বেশি মানুষ। আর গত বছরের অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তার দায় রোহিঙ্গাদের ওপর চাপিয়ে রাখাইন রাজ্যে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ চালানো শুরু করে সেনাবাহিনী। জাতিসংঘ এরইমধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করার অভিযোগ এনে তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডেরও অভিযোগ তোলে দুই বার। জাতিসংঘের হিসাব মতে, এখন পর্যন্ত ঘরহারা হয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৪০:০২ ৩৩৬ বার পঠিত