শনিবার, ২৫ মার্চ ২০১৭

চিকিৎসকদের অবহেলায় আর কত প্রান যাবে ?

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » চিকিৎসকদের অবহেলায় আর কত প্রান যাবে ?
শনিবার, ২৫ মার্চ ২০১৭



চাঁদপুরের সেই অভিযুক্ত চিকিৎসক এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে বঙ্গ-নিউজঃ থানায় মামলা হওয়ার দুই দিন পরও অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. মাহমুদা বেগম পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এই চিকিৎসক তার কর্মস্থলেও অনুপস্থিত।

প্রসঙ্গত, চিকিৎসকের অবহেলায় সদ্য নবজাত শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় প্রসূতিকে অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। এরপর থেকে গাঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক মাহমুদা বেগম।

ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহআলম জানান, মামলায় বাদী অভিযোগ করেন,  ফরিদগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপাতালে তার মেয়েকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মাহমুদা বেগম বলেন, “দ্রুত আপনার মেয়েকে অস্ত্রোপচার করে বাচ্চা বের করতে হবে। ” একপর্যায়ে জোর করে ডেলিভারি করা হয়। পরে তাদেরকে জানানো হয়, মৃত বাচ্চা হয়েছে। এ সময় তারা কারণ জানতে চাইলে বলা হয়, ‘নিয়ে যান নয়তো পাশের ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হবে। ‘ পরে তাদের কাছে কোনো কারণ ব্যাখ্যা না করে লাল রংয়ের একটি কার্টনে ভরে মৃত শিশুটি খাজিদা বেগমের শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ওসি আরো জানান, ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রসূতির মা সাজেদা বেগম থানায় মামলা করেন। তিনি জানান, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর প্রকৃত ঘটনা নিশ্চিত হওয়া যাবে। একই সঙ্গে হতভাগ্য শিশুর লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নিতে সহায়ক হবে।

এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একবছর আগেও ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মাহমুদা বেগম এমন এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে পরিস্থিতি আপসরফা করেন। তার দুই বছর আগে একই হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় পার্টটাইম অচেতনকারী চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম শিপন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তখন তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমের সহায়তা নিয়ে হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন তৈরি করাতে সাহায্য করেন।

অন্যদিকে, এ ঘটনার সংবাদ প্রকাশ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চিকিৎসকমহল বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানান। এ নিয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসকের পক্ষ নিয়ে তারা সাংবাদিকদের গালমন্দ করেন। এমনকি চাঁদপুর বেসরকারি মেডিক্যাল-ক্লিনিক প্র্যাকটিশনার অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) জেলা শাখার পরিচয় দিয়ে গণমাধ্যমকে হুমকি-ধমকি প্রদান করে। কিন্তু এ দুই সংগঠনের দেওয়া বিবৃতিতে কোনো নেতার নাম-পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।

ঘটনা সম্পর্কে চাঁদপুরের একজন বিশিষ্ট চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম ফয়সাল বলেন, “কোনো ধরনের অস্ত্রোপচারকালে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে রোগী ও তার সঙ্গে আসা স্বজনদের নিয়ে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাউন্সিলিং করে নিতে পারতেন। আরেক চিকিৎসক সফিকুল ইসলাম মন্টু বলেন, “চাঁদপুরে এখন পর্যন্ত কোনো সনোলজিস্ট নেই। এ কারণে পরিস্থিতি নির্ণয়ে আগাম কোনো তথ্য নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। ”

প্রসঙ্গত, ফরিদগঞ্জে সেন্ট্রাল হাসপাতাল নামের একটি বেসরকারি একটি ক্লিনিকে চিকিৎসকের ভুলে এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে গত বৃহস্পতিবার। এ নিয়ে ঘটনার শিকার পরিবারের লোকজন থানায় শিশুর লাশ নিয়ে বিচার দাবি করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:৫২:২৯   ২৯৯ বার পঠিত