বুধবার, ১৫ মার্চ ২০১৭

৬ বিভাগে স্থাপিত হবে ৬টি পূর্ণাঙ্গ টিভি সেন্টার

Home Page » প্রথমপাতা » ৬ বিভাগে স্থাপিত হবে ৬টি পূর্ণাঙ্গ টিভি সেন্টার
বুধবার, ১৫ মার্চ ২০১৭






একনেক সভা (ফাইল ছবি) বঙ্গ-নিউজঃ  দেশের ছয়টি বিভাগীয় সদরে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ছয়টি পূর্ণাঙ্গ টিভি সেন্টার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। অনুমোদিত প্রকল্পে নবগঠিত ময়মনসিংহ বিভাগকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৯১কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে (জিওবি) দেওয়া হবে ৪০২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ও প্রকল্প সাহায্য বাবদ ধরা হয়েছে ৯৮৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবসহ একনেক সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

একেনেকের এই বৈঠকে টিভি সেন্টার স্থাপন প্রকল্পসহ ৫ হাজার ২৩৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের সাতটি নতুন ও সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জিওবি ৩ হাজার ৪শ ৪৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ও প্রকল্প সাহায্য ১ হাজার ৭শ ২৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, জনগণের মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে জাতীয় নীতিসমূহের প্রচার, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান তৈরি ও প্রচার এবং স্পনসরিং অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্যই এই টিভি সেন্টারগুলো স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে প্রণীত কার্যক্রমে তৃণমূল পর্যায়ের জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা, অশুভ, জঙ্গী, বিশৃঙ্খল কাজের বিরুদ্ধে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জাতীয় শুদ্ধাচার ও গোষ্ঠীগত ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে সন্ত্রাস ও জঙ্গী তৎপরতার বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজেও সহায়তা করবে এই টিভি সেন্টারগুলো।
এসময় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘শিশুদের পূর্ণমাত্রায় বিকশিত করতে খেলার মাঠগুলোতে শিশুদের খেলার ব্যবস্থা রাখতে একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সরকার দেশের প্রতিটি অঞ্চলে বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর ফলে কৃষি জমির অপচয় রোধ হবে।’ তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া, জাতীয় মহাসড়কগুলো পর্যায়ক্রমে চার লেনে রূপান্তরিত হবে এবং রাস্তার পাশে সার্ভিস লাইন থাকবে বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
একনেকের মঙ্গলবারের বৈঠকে ছয় বিভাগে ছয় টিভি সেন্টার স্থাপন ছাড়াও অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হলো— লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গর্ভন্যান্স (১ম সংশোধিত) প্রকল্প (প্রাক্কলিত ব্যয় ৭৫৪.২১ কোটি টাকা; জিওবি ১৫.৬০ কোটি টাকা ও প্রকল্প সাহায্য ৭৩৮.৬১ কোটি টাকা), গ্রামীণ মাটির রাস্তা টেকসই করণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ প্রকল্প (প্রাক্কলিত ব্যয় ১২৩৮.২৭ কোটি টাকা, পুরোটাই জিওবি), বৃহত্তর পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা) প্রকল্প (প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৯২.২৫ কোটি টাকা, পুরোটাই জিওবি), অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের নিমিত্ত ভূমি অধিগ্রহণ (আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল) প্রকল্প (প্রাক্কলিত ব্যয় ৭৬১.৭৪ কোটি টাকা, পুরোটাই জিওবি), যশোর-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের যশোর অংশ (পালবাড়ী হতে রাজঘাট অংশ) যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্প, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উন্মুক্ত স্থান আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও সবুজায়ন প্রকল্প (প্রাক্কলিত ব্যয় ৩২১.৫৬ কোটি টাকা, পুরোটাই জিওবি), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উন্মুক্ত স্থান আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও সবুজায়ন প্রকল্প (প্রাক্কলিত ব্যয় ২৭৯.৫১ কোটি টাকা; জিওবি ২২৩.৬১ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ৫৫.৯০ কোটি টাকা)।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ফেব্রুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩১ ভাগ হয়েছে বলে সভায় অবহিত করেন। তিনি জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ১৫ ভাগ। ফেব্রুয়ারিতে গরুর মাংস ও ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত ৪৫ হাজার ৫শ ৩২ কোটি টাকা এডিপি বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে। বাস্তবায়নের হার শতকরা ৩৭ ভাগ। গত বছর একই সময়ে এ হার ছিল শতকরা ৩৪ ভাগ এবং বাস্তবায়ন ব্যয় ছিল ৩৪ হাজার ৬শ ৭৫ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ৯:৪৫:২২   ৩৬৫ বার পঠিত