রবিবার, ২২ জানুয়ারী ২০১৭

পাটগ্রামে বিদ্যালয় আছে শিক্ষার্থী নেই: জাতীয়করণের পাঁয়তারা!

Home Page » বিবিধ » পাটগ্রামে বিদ্যালয় আছে শিক্ষার্থী নেই: জাতীয়করণের পাঁয়তারা!
রবিবার, ২২ জানুয়ারী ২০১৭



বঙ্গ নিউজঃ মোঃ শরিফুল ইসলাম। হাতীবান্ধা থানা প্রতিনিধি :কাগজ কলমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম থাকলেও বাস্তাবের চিত্র ভিন্ন। বিদ্যালয় আছে কিন্তু শিক্ষার্থী নেই। একটি মাত্র টিনের খোলা ঘর। ঘরে ঝোলানো আছে সাইনবোর্ড। যাতে লেখা আছে ‘রহিমা নগর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়টি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের রহিমা নগর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের ‘জাতীয়করণের’ পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আগামীতে তৃতীয় ধাপে ‘জাতীয়করণের’ সুযোগ নিতেই দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন পাটগ্রামের ওই স্কুলের সংশ্লিষ্ট পরিচালনা কমিটিসহ শিক্ষকরা।
জানা যায়, ১৯৯৩ সালের ৫ অক্টোবর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নামে প্রায় ৩৫ শতক জমি দান করেন ওই এলাকার আব্দুল হামিদ খন্দকার। এরপর একটি টিনের ঘর করে তাতে রহিমা নগর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় লেখা সম্বলিত সাইনবোর্ড টানানো হয়। নিয়োগ দেয়া চার জন শিক্ষককে। কিন্তু স্কুলের কার্যক্রম না থাকায় তাদের অনেকেই চলে যান।
পরববর্তী ওই এলাকার আব্দুল হামিদ খন্দকারের পুত্রবধূ ও এক মেয়েকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। আর স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান হামিদুল হক খন্দকারের বড় ছেলে ও জোংড়া ন্যাশনাল উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক হুমায়ুন কবির খন্দকার রাজু।
তবে হামিদুল হক খন্দকারের পুত্রবধু সেলিম আরা কে সহকারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগদানে নানা অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। কেননা নিকাহ্নামা অনুযায়ী জেলার আদিতমারী উপজেলার মকছুদ হোসেন চৌধুরীর মেয়ে সেলিম আরা কে ১৯৯৭ সালের ০৩ ডিসেম্বর বিয়ে করেন পাটগ্রামের ইসলাম নগর এলাকার আব্দুল হামিদ হক খন্দকারের মেজ ছেলে হারুন অর-রশিদ।
অথচ রহিমা নগর বেসকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহাকারী শিক্ষক হিসেবে সেলিম আরা‘র স্বামীর নাম হারুন অর রশিদ উল্লেখ করে ১৯৯৩ সালের ১৮ নভেম্বর নিয়োগ দেখানো হয়েছে। তাই বিয়ের ৪ বছর আগে স্কুলের নিয়োগপত্রে স্বামীর নাম হারুন অর রশিদ কিভাবে উঠলো ? এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি রহিমা নগর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হুমায়ুন কবির খন্দকার রাজু।
এমনকি শিক্ষার্থী বিহীন খোলা একটি টিনের ঘরে স্কুলের সাইনবোর্ড লাগিয়ে তা জাতীয়করণের পাঁয়তারা সম্পর্কে জানতে চাইলে? কোন কিছুই বলতে রাজি হয়নি ওই স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি। শুধু তাই নয়, ওই স্কুলের নামে নিয়োগ পাওয়া দু‘জন শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারাও এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কাগজে-কলমে ১৯৯৩ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলেও গত ২৪ বছরের একটি দিনেও সেখানে হয়নি কোন প্রকার পাঠদান। এরপরেও বর্তমানে অস্তিত্বহীন স্কুলটিকে জাতীয় করণের পাঁয়তারা চলছে বলেও অভিযোগ গ্রামবাসীদের।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি হুমায়ুন কবির খন্দকার রাজু কাজে অবৈধ ভাবে শিক্ষক নিয়োগ ও জাতীয়করণের পাঁয়তারা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দেননি।
পাটগ্রাম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ফিরোজুল আলম বলেন, ওই স্কুলটি আমাদের তালিকায় নেই।

বাংলাদেশ সময়: ২০:২৮:৪৯   ৩৯৬ বার পঠিত