রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০১৭

অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭.৫ শতাংশ: পরিকল্পনামন্ত্রী

Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭.৫ শতাংশ: পরিকল্পনামন্ত্রী
রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০১৭



29.jpgবঙ্গ-নিউজঃ পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালপরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসের সামষ্টিক অর্থনীতি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে বছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ।’

রবিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মিট দ্যা প্রেসে তিনি এ কথা জানান। এ সময় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংক ৬ দশমিক ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে। যা সংস্থাটির জন্য একটি ভালো প্রজেকশন। কারণ সংস্থাটি অতীতে এতো ভালো প্রজেকশন দেয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কৃষি, সেবা ও শিল্প খাতের ওপর ভিত্তি করেই প্রধানত জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়ে। তবে এ ক্ষেত্রে শ্রমিকের অভাবে কৃষিতে প্রবৃদ্ধি সামান্য কমেছে। কিন্তু অমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কৃষি খাত যান্ত্রিকীকরণ করার।’

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস) আমরা আধুনিকীকরণ করবো। কারণ তারা সঠিক সময় সঠিক তথ্য দিতে পারে না। তাদের জনবল ঘাটিতি রয়েছে। সেগুলো আমরা পূরণ করবো। এছাড়া বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজকে (বিআইডিএস) বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে। এখানে আধুনিক কিছু বিষয় সংযোজন করে ছাত্র ভর্তি করা হবে। যেখানে তারা অভিজ্ঞ হবে। এটিকে আধুনিকীকরণ করতে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর ৯ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকার এডিবি বাস্তবায়ন হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগকে (আইএমইডি) আরও শক্তিশালী করা হবে। এখানে প্রশিক্ষিত জনবল দেওয়া হবে।’

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘২০১৭ সালে আমাদের পরিকল্পনা হলো একনেক সভায় যে প্রকল্পগুলো পাস হয় তা বাস্তবায়ন হয় কিনা- তা মনিটরিং করবো। আগে মনিটর করার ব্যবস্থা রাখা হতো না। ফলে এডিবি বাস্তবায়ন কম হতো।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করতে যদি প্রণোদনা দিতে হয় তা দেব। এছাড়া জ্বালানিখাতে দুর্বলতা আছে। এটা অল্প সময়ে সমাধান হয়না। এর জন্য ২/৫ বছর সময় প্রয়োজন।’

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমাদের দেশের ২৭ ট্রিলিয়ন গ্যাস মজুদ আছে। যার মধ্যে ১৪ ট্রিলিয়ন ব্যবহার হয়েছে। বাকি যা আছে তা দিয়ে আরও ১২/১৩ বছর চলতে পারবো। এ সমস্যা সমাধানে আমরা এলএনজি টার্মিনাল করছি। মোট ২/৩টা টার্মিনাল হলে আমাদের চাহিদা মেটানো সম্ভব। প্রাকৃতিক গ্রাসের বিকল্প এলপিজি গ্যাস দিয়ে গৃহস্থলী ও শিল্প কারখানা চলতে পারে। তবে এর জন্য এক বছর কষ্ট করতে হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবছর ২০ লাখ লোক চাকরির বাজারে আসছে। এ বছর আমরা ২৭ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান করতে পারবো।’

কীভাবে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বেসরকারি খাতে প্রণোদনা দিলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তাছাড়া স্থিতিশীল পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে বড় বড় কোম্পানিগুলো ব্যবসা বাড়াবে। ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এতো দিন শক্তিশালী মধ্যবিত্ত শ্রেণি তৈরি করতে পারিনি। এবার এর জন্য কাজ করবো। এটা করতে পারলে রফতানি বাণিজ্যে কোনও প্রভাব পরবে না। যদি কোনও কারণে রফতানিতে প্রভাব পরেও তবে আমরা পণ্য উৎপাদন করে চাহিদা মেটাতে পারবো।’

সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাব। এটা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বলেও জানান মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, ‘দেশে রেমিট্যান্স কমেনি। কারণ সঠিক উপায়ে রেমিট্যান্স না এসে হুন্ডির মাধ্যমে আসছে। যা রেকর্ড হচ্ছে না। আবার অনেকে ক্যাশ টাকা না এনে স্বর্ণ আনছেন। যা পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করছে। ফলে এগুলো রেকর্ড না হওয়ায় মনে হচ্ছে রেডিট্যান্স কমেছে। তবে এ খাতে প্রণোদনা দিতে পারলে অবৈধ চ্যানেলগুলো বন্ধ হবে। আমরা ইতোমধ্যেই অবৈধ চ্যানেলগুলো শনাক্ত করেছি। কিন্তু কিছু কারণে সেগুলো প্রকাশ করা হবে না।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী? প্রশ্নের জবাবো তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আমার প্রত্যাশা তারা যেন দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, মুদ্রা সরবরাহ ঠিক রাখা, জনগণ বিনিয়োগ করে যেন টাকা পায় এবং সুদহার নিম্নমুখী রাখতে কাজ করে।’

বাংলাদেশ সময়: ১৩:১৪:৫৯   ৩৪৮ বার পঠিত