রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০১৭

ওষধি গাছের বাগানে স্বাবলম্বী আইয়ুব-নীপা

Home Page » এক্সক্লুসিভ » ওষধি গাছের বাগানে স্বাবলম্বী আইয়ুব-নীপা
রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০১৭



58.jpgবাড়ির প্রবেশ পথের দুই পাশে সারি সারি তুলসী গাছ। একটু এগোলেই বাসক গাছ। এখানেই শেষ নয়, আরও আছে বিলুপ্ত প্রায় অশোক, চিরতা, কর্পুর, পুনর্বভা, তেজবল, নাগেশ্বর, অশ্বগন্ধা, জাতিপুষ্প, গোরখ চাকুলিয়া, কূটরাজ, রুদ্রজটা। এমন দৃশ্য দেখা গেল খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার আইয়ুব-নীপা দম্পতির বাড়ির চারপাশে। এ শুধু গাছের সারি নয়, এটা ওষধি গাছের বাগান। হারিয়ে যেতে বসা ওষধি গাছের এমন বাগান করেছেন খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার নাংগলা গ্রামের আইয়ুব-নিপা দম্পতি। এক একর জায়গায় করা এই বাগান একইসঙ্গে তাদের দেখিয়েছে উপার্জনের পথ। ওষধি গাছ বেচে এখন সাবলম্বী তারা।

সম্প্রতি আইয়ুব-নিপা দম্পতির সঙ্গে তাদের বাড়িতে কথা হয় বাংলা ট্রিবিউনের এই প্রতিনিধির। তারা জানান, ‘মাত্র এক একর জমিতে ওষধি গাছের বাগান করেছেন তারা। এর ভেতরেই তারা লাগিয়েছেন দুই হাজারেরও বেশি প্রজাতির ওষধি গাছ।’

64.jpgখুলনা মহানগর থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে বটিয়াঘাটা উপজেলার কাতিয়া নাংগলা গ্রামে থাকেন নিপা-আইয়ুব দম্পতি। ২০০০ সাল থেকে তারা ওষধি গাছের বাগান তৈরির কাজ শুরু করেন। নানা জায়গা থেকে ওষধি গুণসম্পন্ন গাছ জোগাড় করেন তারা। আর ওই গাছ থেকে কলমের চারাও তৈরি করেন। টবে টবে গাছ সাজিয়ে বাড়ির পরিত্যক্ত আঙিনাকে বাগানে রূপ দেন। একই সঙ্গে গাছের চারা বিক্রি করে চলতে থাকে জীবন-জীবিকা। ব্যক্তি পর্যায়ের উদ্যোগে গড়া এই বাগান সম্ভবত দেশের অন্যতম বৃহত্তম ওষধি বাগান।

ওষধি বৃক্ষপ্রেমী আইয়ুব আলী বলেন, ‘বাগানে দুই হাজার প্রজাতির ১০ হাজারেরও বেশি গাছ আছে। এখনও নতুন গাছ জোগাড় করছি। যেখানে নতুন গাছের খবর পাই সেখানেই ছুটে যাই।’ হারিয়ে যেতে বসা ওষধি গাছ সংরক্ষণের জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ।’

বাগানে কাজ করছেন নীপা

64.jpgতিনি আরও বলেন, আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির কাঁচামাল আমার বাগান থেকে নেওয়া হয়। আগামীতে আরও কাঁচামাল সরবরাহের স্বপ্ন দেখেন এই দম্পতি।

আইয়ুব বলেন, হারিয়ে যাওয়া অনেক ওষধি গাছের বীজ ও চারা তিনি ভারত থেকে সংগ্রহ করেছেন।

বাগানে কাজ করছেন আইয়ুব

নাজনীন আরা নিপা বলেন, ‘এক সময় আর্থিক সংকটে ছিলাম। কিন্তু এই বাগান থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে দুই মেয়ে নিয়ে এখন সুখেই আছি।’

গাছ নিয়েই বাকি জীবন কাটাতে চান এই দম্পতি। তাই বড় মেয়েকে ইউনানি বিষয়ে উচ্চ শিক্ষত করছেন তারা।

নিপা-আইয়ুব দম্পতির আশা, ওষধি গাছের গুণাবলিতে মানুষ উপকৃত হবে।

খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আব্দুল লতিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই বাগানে বহু প্রজাতির ওষধি গাছ আছে। এর মাধ্যমে হারিয়ে যেতে বসা ওষধি গাছের সুরক্ষা হচ্ছে। এই ওষধি গাছের বাগানের মাধ্যমে মানব জাতির উপকার হচ্ছে। অনেকেই ওষধি গাছসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী এখান থেকে সংগ্রহ করে থাকেন।

বাংলাদেশ সময়: ১:২১:৫৫   ৯৪৮ বার পঠিত