মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০১৭

পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা দের বিশেষ সুবিধা বুড়িমারী শ্রমিকরা দিশেহারা !

Home Page » বিবিধ » পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা দের বিশেষ সুবিধা বুড়িমারী শ্রমিকরা দিশেহারা !
মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০১৭



বঙ্গ-নিউজঃ লালমনিরহাট প্রতিনিধি:  লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরে ৪ বর্গকি,মি এলাকা জুড়ে চলছে পাথর ক্রাসিংয়ের কাজ।ছোট বড় মিলে শতাধিক গ্রাইন্ডার ক্রাসিং মেশিনে প্রতিদিন শতশত মে,টন বোল্ডার পাথর ক্রাসিং করে পাথর ভাঙ্গা হচ্ছে।ধুলা,দানাদার,পি,চকলেট বিভিন্ন সাইজে পাথর গুড়া ও কাটিং করার এ কাজে গরীব অসহায় শ্রমিকরা সামান্য মজুরীতে তাদের শ্রম বিক্রি করছেন।সরজমনি দেখা গেছে,শ্রমিকদের মধ্যে মহিলা ও শিশু রয়েছে।ধুলার বস্তা প্রতি মজুরী আগে দেয়া হত ৫ / টাকা। এখন দেয়া হচ্ছে ৮/ টাকা।দিন ও রাতে দুই বেলা আলাদা কাজ করে একেকজন শ্রমিক মজুরী পাচ্ছেন আড়াই থেকে ৩০০/ টাকা।কেউ কেউ দ্বিগুন শ্রম দিয়ে ৪/৫ শ টাকা পান বলে জানা গেছে। পাথরের আগ্রাশনে শ্রমিকদের জীবন মরনাপন্ন।আকাশে বাতাসে শুধু ধুলা আর ধুলা।স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী,পথচারী কেউ ধুলার আগ্রাশন থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। নাক,মুখ, চোখ,কান দিয়ে ধুলা ঢুকে শ্রমিকরা দিনের পর দিন অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন।অনেকে কার্য ক্ষমতা হারিয়ে অতি কষ্টে জীবন যাপন করছেন।প্রায় ৫ শতাধিক শ্রমিক পাথর ক্রাসিং( গুড়া ও ভাঙ্গার) কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।এদের মধ্যে ৬৬ জন শ্রমিক সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে মারা গেছেন। আরও প্রায় ৩ শতাধিক শ্রমিক মারাত্বক অসুস্থ হয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস, বুকে ব্যথা,খাওয়ার অরুচি, বমিবমি ভাব,মাথা ব্যথা কফ কাশিতে ভোগছেন।এমন কি পাথরের ধুলা ঢুকে ফুসফুসে সিমেন্টের প্রলেপ পড়ে পচে যাচ্ছে। অকেজো হয়ে ধীরে ধীরে সারা শরীর শীতল ও অবশ হয়ে পড়ছে।স্থানীয় ভাবে এ রোগের চিকিৎসা না থাকায় প্রথমের দিকে যক্ষা মনে করে আরডিএসে ভুল চিকিৎসা দেয়া হত।২০১০ সালের দিকে ঢাকা মহাখালী বক্ষব্যধী জাতীয় ইন্সটিটিউট এ বুড়িমারী পাথর ভাঙ্গা শ্রমিক কয়েকজনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সিলিকোসিস রোগটি ধরা পড়ে।এর পরেই জানা যায় এ রোগের কারন ও লক্ষণ। পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আজ অবধি বুড়িমারী শ্রমিকদের ফাইল যেমন খোলা হয়নি তেমনি চিকিৎসা দেয়ার ব্যাপারে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ বেশ উদাসীন বলে লক্ষ্য করা গেছে।এত কিছুর পরও স্বাস্থ্য বিভাগ,উপজেলা প্রশাসন, থানা প্রশাসন এমনকি স্থানীয় সাংসদ মোতাহার হোসেন পর্যন্ত কোনদিন খবর নিচ্ছেন না। শ্রমিকরা জীবনের সাথে লড়াই করে মৃত্যু পথযাত্রী হলেও ন্যায্য অধিকার কেউ দিচ্ছে না বলে পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।বর্তমানে ৭/৮ জন শ্রমিক বেঁচে থাকার আশায় ঢাকায় মহাখালী বক্ষব্যধি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঢাকার বিলস, ভিজার্টি,সেপটি এন্ড রাইটস নামে বেসরকারী সংস্থা এগিয়ে এলেও তেমন একটা সেবা মিলছে না।প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন কলকারখানা বিভাগ শ্রম মন্ত্রণালয় বুড়িমারীতে কাজ শুরু করেছেন।অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ আহম্মেদ পাটগ্রাম ইউএনও নুর কুতুবুল আলমকে শ্রমিক তালিকা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য ব্যবস্থা নিতে বলছেন।রংপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্তারা বুড়িমারীতে মাল না খেয়ে এগিয়ে এলে তবেই ফিরবে সুস্থ্য পরিবেশ।এছাড়া পাথরের আগ্রাশনের হাত থেকে সহসাই রেহাই মিলছে না বলে সচেতন মহল দাবী করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮:২৭:০৩   ৩৫৫ বার পঠিত