মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬

নারী জঙ্গিদের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা ব্যতিক্রম: মনিরুল ইসলাম

Home Page » প্রথমপাতা » নারী জঙ্গিদের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা ব্যতিক্রম: মনিরুল ইসলাম
মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬



27.jpgবঙ্গ-নিউজঃ  মনিরুল ইসলামকাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, ‘জঙ্গি সংগঠনগুলোতে সাধারণত নারীরা সাপোর্ট করবে, সেবা দেবে এবং সন্তানদের জিহাদের শিক্ষা দেবে এমনটাই ট্রেন্ড। জঙ্গিরা সাধারণত নারীদের ঘর থেকে বের হওয়ার বিষয়টি সমর্থন করে না। নারী জঙ্গিদের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা ব্যতিক্রম। বিষয়টি আমরা অনুসন্ধান করছি।’

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘নারীরা সাধারণত স্বামীদের দ্বারা বাধ্য হয়ে জঙ্গিবাদ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আশকোনায় যে নারী জঙ্গি আত্মঘাতী হয়েছে সে মূলত হতাশা থেকে এই পথ বেছে নিয়েছিল বলে আমরা ধারণা করছি। কারণ তার স্বামী মারা যাওয়ার পর জঙ্গি সুমনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সুমনের মাধ্যমে সে জঙ্গিবাদে যুক্ত হয়েছিল। সুমনও কিছুদিন আগে গ্রেফতার হয়ে জেলে রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এখন তার আর কোনও আশ্রয় থাকবে না বলেই সে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।’

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের শীর্ষ এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এর আগে আজিমপুর থেকে গ্রেফতার হওয়া নারীরা তাদের জবানবন্দিতে স্বামীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জঙ্গিবাদে যুক্ত হয়েছে বলে স্বীকার করেছে। তানভীর কাদেরী জানিয়েছিল, জঙ্গিবাদে যুক্ত না হলে সে তাকে ছেড়ে দিতো। সামাজিক ও আত্মীয়স্বজনের কাছে লজ্জিত হওয়ার ভয়ে সে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হয়। একই রকম তথ্য জানিয়েছিল আরেক শীর্ষ জঙ্গি মারজানের স্ত্রী প্রিয়তিও।’

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আশকোনার আস্তানায় অস্ত্র ও গ্রেনেড মুজদ করার কারণ জানতে দুই নারী জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এসব কোথা থেকে আনা হয়েছিল এবং তাদের পরিকল্পনা কী ছিল তা মুসাকে না ধরা পর্যন্ত পরিষ্কার করে কিছু বলা যাবে না। প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করছি বড়দিন উপলক্ষ্যে তারা কোথাও হামলার পরিকল্পনা করেছিল। কারণ সুইসাইডাল ভেস্ট ও গ্রেনেডগুলো রেডি করে রাখা হয়েছিল।’

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানতে পেরেছে আশকোনার বাসাটি মুসা অফিস কাম বাসা হিসেবে ব্যবহার করতো। সাংগঠনিক কাজে সে বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকলেও মাঝে মধ্যে সে ওই বাসায় আসতো। তার সঙ্গে আরও কয়েক সঙ্গী সেখানে আসতো। তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

সবশেষে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জঙ্গিদের আস্তানা এবং নেতাকর্মী ও এক্টিভিস্টরা ক্রমাগত সংকুচিত হয়ে আসছে। আমরা নিয়মিত নজরদারি মাধ্যমে জঙ্গিদের দমন করার চেষ্টা করছি।’

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত ১২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের সিটিটিসি ইউনিট দক্ষিণখান থানার পূর্ব আশকোনার ৫০ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে এক নারী ও এক কিশোর জঙ্গি নিহত হয়েছে। পুলিশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে দুই নারী ও তাদের দুই সন্তান। নিহত নারী জঙ্গির আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে আহত হয় তার শিশুকন্যা। ওই শিশুকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:২৭:২০   ৩০৭ বার পঠিত