শনিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৬
নাফ নদী পার হয়ে যেভাবে বাংলাদেশে আসে রোহিঙ্গারা
Home Page » এক্সক্লুসিভ » নাফ নদী পার হয়ে যেভাবে বাংলাদেশে আসে রোহিঙ্গারাবঙ্গ-নিউজঃ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশে আসছে রোহিঙ্গারা। আর এই পারাপারের জন্য পকেট ভারি হচ্ছে দালাল শ্রেণির। প্রথমে মিয়ানমার তারপর বাংলাদেশ, দালাল অপেক্ষায় থাকছে দুই সীমান্তেই। নৌকায় চেপে বসার আগে হাত পেতে দেয় মিয়ানমারের দালাল আর নৌকা থেকে নেমেই বাংলাদেশের।দুই দেশের সীমানা ভাগ করা নাফ নদী পার করে স্থানীয় জেলেরা বাড়তি কামাই নিয়ে বাড়ি ফিরছে। এ যেন রোজগারের ভরা মৌসুম।
টেকনাফের এমন দালালদের সঙ্গে কথা বলেছে সংবাদ মাধ্যম বিবিসি। তাদের সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, মোবাইলে কথা সেরে রাখা হয় আগে থেকেই। রোহিঙ্গাদের মধ্যে যারা পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে তারা ওই দেশের সীমান্তে বনের ভেতর অপেক্ষা করতে থাকে। রাত হতে হবে গাঢ়। এরপর সুবিধাজনক সময়ে দালাল এসে তাদের নিয়ে নির্দিষ্ট নৌকায় তুলে দেবে।
একজন দালাল জানান, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা মেয়েদের মধ্যে অনেকেরই মুখে ও শরীরে কালি বা কাদা মাখানো থাকে। চেহারা যেন চিহ্নিত করা না যায় এটা তারই চেষ্টা।
তিনি জানান, নৌকায় নদী পার হতে কেউ দুই হাজার, কেউ তিন হাজার আবার কেউ কেউ পাঁচ হাজার টাকা দেয়। এক একটি নৌকায় ৫ থেকে ১০ জন যাত্রী পার হতে পারে।
গত প্রায় দেড় মাসে তিনি অন্তত ৫০ জনকে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছেন। তবে তিনিই মূল নন, রয়েছে দালাল এবং দালালের মহাজন।
বাংলাদেশের দালাল আব্দুল জানান, একদল রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আনতে মিয়ানমারের দালালদের সাথে আড়াই লাখ থেকে পাঁচ লাখ কিয়েটের চুক্তি করতে হয় তাকে।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে টেকনাফ থেকে একজন জেলে রাতের অন্ধকারে রোহিঙ্গাদের আনতে নদীর ওপাশে যান। গভীর রাতে কাঁটাতারের বেড়ার পাশে লুকিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসেন তিনি। এজন্যে জনপ্রতি ২৫ থেকে ২৬ হাজার টাকা দেয় তারা।’ তিনি জানান, সীমান্তে বিজিবির কঠোর সর্তক অবস্থান ফাঁকি রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মতে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নিপীড়ন থেকে প্রাণে বাঁচতে এ পর্যন্ত ২১ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আর নিরুপায় এসব মানুষকে আর্থিকভাবে সর্বস্বান্ত করে প্রাণে বাঁচাচ্ছেন আইন ভঙ্গকারী দালাল শ্রেণি।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৭:০২ ৩৫৭ বার পঠিত