বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৬
ব্যাট-বলে উজ্জ্বল ঘরের ছেলেরা
Home Page » ক্রিকেট » ব্যাট-বলে উজ্জ্বল ঘরের ছেলেরাবঙ্গনিউজঃ ঢাকা পর্ব শেষে এবার চট্টগ্রাম পর্বের পালা। কাল থেকে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গড়াবে বিপিএল চতুর্থ আসরের খেলা। চলবে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত। টানা ১১ ম্যাচ শেষে টি২০ উন্মাদনা নিয়ে ঢাকায় ফিরবে বিপিএল। বিগত তিন আসরের চেয়ে এবারের বিপিএল যেন রঙ ছড়াচ্ছে একটু ভিন্নভাবে। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে এখন পর্যন্ত কর্তৃত্ব করছে স্থানীয় ক্রিকেটাররাই।
আগে বিপিএলে জমকালো পারফরম্যান্সের জন্য তাকিয়ে থাকতে হতো বিদেশী খেলোয়াড়দের দিকে। পুরো টুর্নামেন্টের মূল আকর্ষণ থাকত টি২০ ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা- শহীদ আফ্রিদি কিংবা ক্রিস গেইলকে ঘিরে। আগের আসরগুলোয় গেইলের দলের খেলা মানেই মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ণ। এবারের আসরে এখনো পাওয়া যায়নি গেইলের দেখা। চিটাগং ভাইকিংসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লিগ পর্বের শেষ চারটি ম্যাচ খেলবেন এই ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব।
তার পরও এবারের বিপিএলে নেই কোনো হাহাকার! চার-ছক্কার উন্মাদনায় মেতে উঠছে গ্যালারিভর্তি দর্শক। আর এ উচ্ছ্বাসের রসদ জোগাচ্ছেন দেশী খেলোয়াড়রা। অসাধারণ সব পারফরম্যান্সে দেশী ক্রিকেটাররা মাতিয়ে রাখছেন চতুর্থ বিপিএল আসরটি। ঢাকা পর্ব শেষে ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগের শীর্ষস্থান রয়েছে স্থানীয়দের দখলে। ব্যাটিংয়ে সেরা শাহরিয়ার নাফীস, আর বোলিংয়ে শফিউল ইসলাম।
ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছেন নাফীস। বরিশাল বুলসের হয়ে ধারাবাহিকভাবে রান করে যাচ্ছেন এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। চার ম্যাচে তিনটি হাফ সেঞ্চুরিসহ করেছেন ১৮৪ রান। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকার দুই নম্বরে আছেন নাফীসের সতীর্থ বরিশাল অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দুই হাফ সেঞ্চুরিতে মুশফিকের সংগ্রহ ১৭৪ রান, স্ট্রাইক রেট ১৫১.৩০।
তবে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট ঢাকা ডায়নামাইটের ওপেনার মেহেদী মারুফের। স্ট্রাইট রেট ১৫৪.৫৪। সেসঙ্গে ১৭০ রান করে এ ব্যাটসম্যান আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রাহক। এর পরের দুই অবস্থানও বাংলাদেশের দখলে- সাব্বির রহমান (১৫৭) ও তামিম ইকবাল (১৪৩)। রোববার রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে ১২২ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন সাব্বির। তাতে ভেঙে যায় বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে গড়া ক্রিস গেইলের ১১৬ রানের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড।
এদিকে বোলিংয়ে শফিউলের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন আরেক পেসার মোহাম্মদ শহীদ। দুজন পেয়েছেন সমান ৮ উইকেট করে। ইকোনমিতে শহীদকে পেছনে ফেলেছেন শফিউল। তার ইকোনমি রেট ৬.৩৩, আর শহীদের ৬.৯১। তিন নম্বরে আছেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি। তিন ম্যাচে তার শিকার ৭ উইকেট। যার মধ্যে খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে তুলে নেন ৪ উইকেট।
এতে একটা বিষয় স্পষ্ট, এবার তেমন চমক দেখাতে পারছেন না বিদেশীরা। তাই ম্যাচসেরা দৌড়েও বিদেশীদের চেয়ে এগিয়ে দেশীরাই। এ পর্যন্ত ১৩ ম্যাচে সাতটিতে ম্যাচসেরা হয়েছেন দেশী ক্রিকেটাররা, বাকি ছয়টিতে বিদেশীরা। দুই ম্যাচে শেষ ওভারে ৩ উইকেট করে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে সর্বোচ্চ দুবার ম্যাচসেরা হন খুলনা টাইটানসের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
অন্যদিকে বিদেশীদের মধ্যে ভাইকিংসের বিপক্ষে ৮০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন আফগান উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ শাহজাদ। গত পরশু ৭৮ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচসেরা হন ডেভিড মালান। শ্রীলংকার থিসারা পেরেরা, আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী, পাকিস্তানের আফ্রিদি ও ইংল্যান্ডের সমিত প্যাটেল একবার করে ম্যাচসেরা হন।
স্থানীয়রা ভালো খেলায় আশাবাদী হয়ে উঠেছেন বরিশাল অধিনায়ক মুশফিক, ‘খেয়াল করে দেখবেন, এবার বিপিএলে শাহজাদের ওই ইনিংস ছাড়া আমাদের স্থানীয় খেলোয়াড়রাই কিন্তু ভালো করেছে। সেরা রান সংগ্রহকারীর প্রায় সবাই স্থানীয়। দলকে সাফল্য এনে দিতে স্থানীয়দেরই ভালো করতে হবে। প্রত্যেক দলে সাতজন দেশী থাকে। বোলিং কিংবা ব্যাটিং- স্থানীয় তিনজন যদি ভালো খেলে তবে প্রতিপক্ষ দলে যত বড় তারকাই থাকুক না কেন, সে দল ম্যাচ জিতবেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:২৬:১৪ ৩৩৬ বার পঠিত