রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৬
মামলা করা হয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে’
Home Page » প্রথমপাতা » মামলা করা হয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে’বঙ্গ-নিউজঃ‘নির্বাচন পদ্ধতির মারপ্যাঁচে যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে গেল ২০০ বছর। তথ্য-প্রযুক্তির শীর্ষে অবস্থানকারী একটি দেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মত ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বরণ করে নেয়ার মধ্যে আনন্দ দূরের কথা, স্বস্তির কিছুই নেই’-এমন মন্তব্য করেন নিউইয়র্কের প্রখ্যাত এটর্নি ম্যারি ডি সিলভার।
ম্যারি বলেন, ‘আমার কলেজগামী কন্যার প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারিনি। বলতে পারিনি যে, ট্রাম্প কোনভাবেই প্রেসিডেন্ট হবার যোগ্য নন।’
তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘এভাবেই আমরা নতুন প্রজন্মকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিচ্ছি। সত্যকে আড়াল করে প্রকারান্তরে নিজেরাই প্রতারকের পর্যায়ে যাচ্ছি।’
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কোনভাবেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে গ্রহণ করতে অনাগ্রহীরা ১০ নভেম্বর বৃহস্পতিবারও দ্বিতীয় দিনের মত তুমুল বিক্ষোভ করেন যুক্তরাষ্ট্রের শতাধিক সিটিতে। সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয় নিউইয়র্ক সিটিতে। ট্রাম্প টাওয়ারের চারপাশ ঘিরে রেখেছে শতশত পুলিশ আর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। তারপরেও শত শত আমেরিকান পোস্টার-প্ল্যাকার্ড হাতে সেখানে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। ‘নো হেইট, নো ফিয়ার-ইমিগ্র্যান্টস আর ওয়েলকাম হিয়ার’, ‘ইমপিচ ট্রাম্প’, ‘নট মাই প্রেসিডেন্ট’ লেখা এসব ব্যানার-ফেস্টুন ছাড়াও স্লোগানে উচ্চারিত হয় তীব্র নিন্দা আর ধিক্কার।
ম্যানহাটনের রাজপথ যখন ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল, এমন সময়ে প্রায় প্রতিটি রেস্টুরেন্টেই চলছিল একই আলোচনা। খেটে খাওয়া মানুষ থেকে পেশাজীবী-সকলেই আবর্তিত হচ্ছেন ট্রাম্প সম্পর্কিত ঘটনাবলিতে। হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে দেড় ঘণ্টা বৈঠক শেষে বেরিয়ে ক্যাপিটাল হিলে যাবার সময় শতাধিক আমেরিকান তাকে অনুসরণ করে নানা স্লোগান দেন। হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী ক্লাস বর্জন করে রাজপথে নামে ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, শিকাগো প্রভৃতি স্থানে।
নিউইয়র্কের একটি রেস্টুরেন্টে ডিনার করার সময় এটর্নি ম্যারির সঙ্গে ছিলেন তার স্বামী এটর্নি পেরী ডি সিলভার, ব্যাংকার র্যা হুই আর তরুণ ব্যবসায়ী আকতার হোসেন বাদল। পুরো রেস্টুরেন্টের সকলের দৃষ্টি তাদের টেবিলে। প্রচণ্ড ক্ষোভের সঙ্গে তারা ট্রাম্পের অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোকপাত করছেন।
এটর্নি পেরী বলেন, ‘বেশ কটি মামলা দায়ের করা হয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এসব মামলার বাদীরা যদি আপস না করেন তাহলে নির্ঘাত ট্রাম্পকে কারাগারে যেতে হবে। অপকর্মের দায় থেকে রেহাই পাওয়া কোনভাবেই সম্ভব হবে না-যদি মামলা দায়েরকারীরা সোচ্চার থাকেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ অবস্থাকে মেনে নেয়ার অর্থ হবে প্রেসিডেন্সিকে টাউট-বাটপাড় আর বিকৃত মানুষের হাতে সপে দেয়া।’ আকতার হোসেন বাদল বলেন, ‘নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারের বিকল্প নেই। জনসাধারণের ভোটের হিসেবেই জয়-পরাজয় নির্ধারণের বিধি তৈরি করতে হবে।’
‘এই আমেরিকা গড়ে উঠেছে অভিবাসীদের রক্ত আর ঘামে। অথচ অভিবাসনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ভাবছেন ট্রাম্প। মুসলমানদের নিষিদ্ধ করার হুমকিও দিয়েছেন। এমন লোক হোয়াইট হাউজে অধিষ্ঠিত হবার পর কী করবেন সেটি সকলকে শংকায় ঠেলে দিয়েছে’-অভিমত পোষণ করেন বাদল।
র্যা হুই বলেন, ‘যারা ভোট দিয়েছেন তারা ফলাফল দেখে হতবাক। আর এরই বহি:প্রকাশ ঘটছে রাজপথে।’
দ্বিতীয় দিনের মত বিক্ষোভ হয় লসএঞ্জেলেস, অকল্যান্ড, ফিলাডেলফিয়া, ভার্জিনিয়া, ওয়াশিংটন ডিসি, দেলওয়ার, বোস্টন, টেক্সাস, কলরাডো, বাল্টিমোর এবং নিউইয়র্কে। অংশগ্রহণকারীর সংখ্যাও বেড়েছে। দুদিনে দেড় শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতারের কথা বলেছে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৩৫:৪০ ৩৮৩ বার পঠিত