মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০১৬

এক টুকরো সবুজ স্বর্গ

Home Page » ফিচার » এক টুকরো সবুজ স্বর্গ
মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০১৬



image_1709_262402.jpg

এশিয়ান ইউনিভার্সিটির নয়নাভিরাম সবুজ ক্যাম্পাসউঠান জুড়ে সবুজ ঘাসের কার্পেট। ইটের রেলিংয়ের পাশ ঘেঁষে কাঁঠাল গাছের সারি। সবুজে আচ্ছাদিত চারিদিক। এ যেন সত্যিকার অর্থে এক টুকরো সবুজ স্বর্গ। সবুজ সি্নগ্ধতায় ভরপুর ক্যাম্পাসটি শিক্ষার্থীদের কাছে শুধু শিক্ষালয় নয়, অবকাশ উপভোগেরও।
ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় বঙ্গবন্ধু সড়কের গা ঘেঁষে প্রায় দশ একর সুবিশাল জমির ওপর নির্মিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর বিশাল স্থায়ী ক্যাম্পাস। দশ তলা একটি ভবনের পাঁচ তলা নির্মিত হয়েছে। চলছে নির্মাণ কাজ। স্বপ্নের নকশা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে দ্রুতই।
ইতোমধ্যেই স্বপ্নের এ ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গত বছর (২০১৫) এর ২৮ সেপ্টেম্বর থেকেই শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে ক্যাম্পাসটি। নিয়মিত ক্লাস এবং পরীক্ষা গ্রহণ চলছে এ ক্যাম্পাসে।
প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট ১৯৯২-এর অধীনে ১৯৯৬ সালের ৪ জানুয়ারি ‘শিক্ষায় এক নব দিগন্ত’ সস্নোগান নিয়ে যাত্রা শুরু করে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। দেশের কীর্তিমান শিক্ষাবিদ, স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। মূলত দেশের অনগ্রসরমান জনগোষ্ঠীর মধ্যে উচ্চ শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে মধ্যবিত্ত পরিবারের সাধ্যের মধ্যে টিউশন ফি রেখে শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের সুযোগ করে দেন ড. সাদেক।
১৯৯৬ সালে উত্তরায় নিজস্ব জমিতে নিজস্ব ক্যাম্পাসে যাত্রা শুরু করে এইউবি। কিন্তু ইটকাঠের শহরে একটি পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা সম্ভবপর ছিল না। সরকার থেকেও তাড়া ছিল স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার। সকল সঞ্চয় দিয়ে প্রফেসর ড. আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়িতে স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জমি কেনেন। অভিজ্ঞ প্রকৌশলী অাঁকেন স্বপ্নের ক্যাম্পাসের নকশা। আশুলিয়াতে স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয় ২০১৩ সালের অক্টোবরে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এই ক্যাম্পাসের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
মাত্র তিন বছরেই স্থায়ী ক্যাম্পাস কাঠামোগত রূপ লাভ করে। শুরু হয় শিক্ষা কার্যক্রম। এইউবির স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের অধ্যয়ন সহায়নে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে দেশি-বিদেশি পুস্তক সংবলিত সম্পূর্ণ নতুন একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার। সুবিশাল পরিসরের এই লাইব্রেরিতে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় পুস্তক ছাড়াও অধ্যয়ন সহায়িকা, দেশি-বিদেশি জার্নালসহ সংগ্রহে রাখা হয়েছে বিশাল বইয়ের ভা-ার। স্থায়ী ক্যাম্পাসের বিশাল কম্পিউটার ল্যাবে হাতে কলমে কম্পিউটার বিষয়ে জ্ঞান লাভ করছে শিক্ষার্থীরা। সাজানো গোছানো ল্যাবটিতে স্থান পেয়েছে অত্যাধুনিক মানের কম্পিউটার। শিক্ষার্থীদের জন্য সারাক্ষণ উন্মুক্ত থাকছে ল্যাবটি।
ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ইতোমধ্যেই স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। ক্যাম্পাসে ফ্রি ওয়াই-ফাই সুবিধা দেয়া হচ্ছে আইটি বিভাগের তত্ত্ব্বাবধানে।
এইউবির স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য ফুটবল, ক্রিকেট, বেসবল এবং ভলিবলের ভিন্ন ভিন্ন মাঠসহ খেলাধুলার সুযোগ প্রস্তুত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ইনডোর গেম-এ সংযোজিত হয়েছে টেবিল টেনিস, ক্যারাম এবং দাবা খেলার সামগ্রীসহ নানা উপকরণ।
আশুলিয়ায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাতায়াতের জন্য এইউবি ইতোমধ্যেই তিনটি বাস সংযোজিত করেছে। প্রয়োজনে আরো বাস চালু করার পরিকল্পনার কথা জানান এইউবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এইউবি) এবং নিউইয়র্ক ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (এনওয়াইআইটি) এর মধ্যে মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে গেল গত ২৭ সেপ্টেম্বর। আশুলিয়ায় এইউবির স্থায়ী ক্যাম্পাসে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এশিয়ান ইউনিভার্সিটির পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও উপাচার্য প্রফেসর ড. আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক এবং নিউইয়র্ক ইন্সটিটিউটের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রভোস্ট প্রফেসর ড. রহমত এ কোরেশী চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষর কার্যক্রম শেষে কোরেশী এইউবির স্থায়ী ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি স্বল্পব্যয়ে শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ দিতে বদ্ধপরিকর। পাবলিক ভার্সিটিতে আসন সীমিত থাকায় উচ্চশিক্ষা প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের বাধ্য হয়েই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়মুখী হতে হয়। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ টিউশিন ফির কারণে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন অনেকের কাছে অধরাই থেকে যায়। দেশের অধিকাংশ মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনা করে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ নূ্যনতম টিউশন ফি নির্ধারণ করেছে। এইউবি বিভিন্ন কো-কারিকুলাম এক্টিভিটিসের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্তা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও নৈতিক যোগ্যতা বৃদ্ধির দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে

বাংলাদেশ সময়: ০:০৩:০০   ৪৬৮ বার পঠিত