বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৬
ট্রাইব্যুনাল সরছে না, চিঠির জবাব দিচ্ছে মন্ত্রণালয়
Home Page » জাতীয় » ট্রাইব্যুনাল সরছে না, চিঠির জবাব দিচ্ছে মন্ত্রণালয়বঙ্গনিউজঃ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুরনো হাইকোর্ট ভবন থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে আইন মন্ত্রণালয়কে দেওয়া চিঠির জবাব তৈরি হচ্ছে। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সুপ্রিমকোর্টে চিঠির জবাব পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তবে চিঠিতে কী আছে তা প্রকাশ না করলেও আপাতত ট্রাইব্যুনাল সরানোর পরিকল্পনা নেই বলে জানা গেছে। এদিকে প্রসিকিউশন থেকে বলা হচ্ছে, ট্রাইব্যুনাল সরছে না, আমরা নতুন করে ভবন ঠিকঠাক করার কাজে হাত দিয়েছি।
গত ২৩ আগস্ট প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আইনমন্ত্রীর মৌখিক আলোচনা হয়েছে জানিয়ে সপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার দফতর থেকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, ‘ট্রাইব্যুনাল স্থানান্তর করে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টকে পুরনো হাইকোর্ট ভবনটির (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হিসেবে ব্যবহৃত অংশ) দখল হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
সে সময় আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এধরনের চিঠির বিষয়ে আমি জানি না। এরকম প্রস্তাব কেন করা হলো, সে বিষয়েও জানি না। তবে চিঠি এলে বিবেচনা করে দেখা হবে, তারা কেন এমন প্রস্তাব দিচ্ছে।’
উল্লেখ্য, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর থেকে সুপ্রিম কোর্টের মাজারগেট-সংলগ্ন পুরনো হাইকোর্ট ভবনে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম চলছে।
আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব বরাবরে পাঠানো ওই চিঠিতে আরও বলা ছিল, ‘সুপ্রিম কোর্টে বর্তমানে পর্যাপ্ত স্থানাভাবে বিচারপতিগণের প্রয়োজনীয় চেম্বার ও এজলাসের ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া, স্থান সংকুলান না হওয়ার কারণে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক চেম্বার বা দফতরেরও ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না।’
এ বিষয়ে জানতে আজ (বৃহস্পতিবার) আইনমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চিঠির উত্তর প্রস্তুত হচ্ছে, উত্তর যাচ্ছে।’ চিঠিতে কী আছে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সেটি এখনই বলছি না, দেখতে পাবেন। চিঠি রেডি হচ্ছে।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা এখনও ট্রাইব্যুনাল সরানোর বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কোনও ইঙ্গিত পাইনি। এই জায়গাটা অনেক চিন্তাভাবনা করেই ঠিক করা হয়েছিল। এটা সুপ্রিমকোর্টের ভেতরে হলেও অনেকটা বিচ্ছিন্ন করে ফেলা যায়। আবার নিরাপদও। ফলে এখন আবার নতুন করে কোনও জায়গা নির্ধারণ করা যৌক্তিক হবে বলে মনে হয় না।’
এদিকে হাইকোর্ট মাজার সংলগ্ন ট্রাইব্যুনাল ভবনের পাশে প্রসিকিউশন অফিসে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ভবনের সংস্কারের কাজ চলছে। প্রসিকিউশন অফিসের প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘কারা কোথায় কী চিঠি দিয়েছে আমরা জানি না। মন্ত্রণালয় থেকেও আমাদের এবিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘৩১ অক্টোবরের মধ্যে এখান থেকে সরে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। কারণ, এখানে যে মূল্যবান ডক্যুমেন্টস এবং সংশ্লিষ্ট জিনিসপত্র আছে সেগুলা সংরক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা করতে একটা লম্বা সময় লাগে। তবে এখনই সে ধরনের কোনও প্রস্তুতির বিষয় নেই বলেই আমি জানি। ‘
জিয়াদ আল মালুম আরও বলেন, ‘ট্রাইব্যুনাল এই ভবন থেকে সরছে না বলে আমরা মন্ত্রণালয় সূত্রেই জেনেছি। বর্তমানে ভবনটিতে কিছু রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছি।’
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩৫:০৮ ৩৫৪ বার পঠিত