বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৬

ও ফাঁদে পা দিতে পারে, আমি দেব না’

Home Page » জাতীয় » ও ফাঁদে পা দিতে পারে, আমি দেব না’
বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৬



240.jpgবঙ্গনিউজঃ র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘আমি যা বলেছি, তথ্যপ্রমাণ নিয়েই বলেছি। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কিছু নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমি কোনও পাল্টা মন্তব্য করব না। ও ফাঁদে পা দিতে পারে, কিন্তু আমি কোনও ফাঁদে পা দেব না। মনিরুল ইসলামকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘ও আমার জুনিয়র অফিসার। আমার স্নেহের। ওর বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাই না।’
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি ইতালির নাগরিক সিজার তাভেল্লা হত্যাকাণ্ড ও নব্য জেএমবির কথিত বাংলাদেশি প্রধান সারোয়ার জাহানকে নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দুই সংস্থা- র‌্যাব ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পক্ষে দেওয়া দুরকম বক্তব্য নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। প্রশ্ন উঠেছে কার বক্তব্য সঠিক। এরমধ্যেই নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ এ মন্তব্য করলেন।
গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশানে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন ইতালিয়ান নাগরিক সিজার তাভেল্লা। হত্যাকাণ্ডের ৯ মাস পর গত ২৭ জুন এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে মামলার তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি। অভিযোগপত্রে ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এমএ কাইয়ুমসহ সাত জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হওয়ার পর গত শুক্রবার র‌্যাবের এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘সিজার তাভেল্লা হত্যাকাণ্ডে নিও জেএমবি জড়িত।’ নিও জেএমবির বাংলাদশি প্রধান সারোয়ার জাহানই কথিত আবু ইব্রাহীম আল হানিফ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আবু হানিফ ওরফে আব্দুর রহমান ওরফে সারোয়ার জাহানের বাসা থেকে উদ্ধারকৃত নথিপত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।’

পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাবের এ বক্তব্যের পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।এর মধ্যেই গত বুধবার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান ও সিজার তাভেল্লা হত্যা মামলার অন্যতম তদারক কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ফৌজদারি মামলার তদন্ত আসলে পরিচালিত হয় সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে। এখানে রচনা বা ক্রিয়েটিভ ওয়ার্ক করার সুযোগ নেই। সিজার তাভেল্লা মামলাও ফৌজদারি কার্যবিধির সব নিয়ম মেনেই তদন্ত করা হয়েছে। অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে একদল পেশাদার অফিসার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সাহায্য করে তদন্ত সম্পন্ন করেছেন। তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে।’ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ মামলার আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার কাজও শুরু হয়েছে।’ কোনও দায়িত্বশীল ব্যক্তি বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারেন না বলেও জানান তিনি।

মনিরুলের এ বক্তব্যের পর সরকারের উচ্চ পর্যায়েও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকালে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ তার বক্তব্যের স্বপক্ষে তথ্য-প্রমাণাদি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। সচিবালয়ে কয়েকজন সাংবাদিক বেনজীর আহমেদের কাছে সম্প্রতি সৃষ্ট বিভ্রান্তি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনও পাল্টা মন্তব্য করব না। আমি এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই না। আমি কোনও ফাঁদে পা দিতে চাই না। মনিরুল ইসলামকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘ও আমার জুনিয়র অফিসার। আমার স্নেহের। ওর বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাই না।’

শুধু সিজার তাভেল্লা নয়, আব্দুর রহমান ওরফে সারোয়ার জাহান নামে যাকে র‌্যাবের পক্ষ থেকে নিও জেএমবির বাংলাদেশি প্রধান আবু ইব্রাহীম আল-হানিফ বলে দাবি করা হয়েছে, তাও নাকচ করে দিয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিট- সিটিটিসি। সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তাদের তদন্তে সারোয়ার জাহান নিও জেএমবির তৃতীয় সারির একজন নেতা বলে উঠে এসেছে। গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরীর ইমিডিয়েট পরের সারির নেতা সারোয়ার জাহান।

উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর আশুলিয়ায় র‌্যাবের এক অভিযানে পাঁচ তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আহত হয় আব্দুর রহমান। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। র‌্যাব তার প্রকৃত পরিচয় সারোয়ার জাহান এবং সে-ই কথিত আবু ইব্রাহীম আল-হানিফ বলে দাবি করে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:০০:৫৯   ৩৮৮ বার পঠিত