শনিবার, ৮ অক্টোবর ২০১৬

কাশ্মীরে কারফিউ ৩ মাস পূর্ণ, উত্তেজনা থামছে না

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » কাশ্মীরে কারফিউ ৩ মাস পূর্ণ, উত্তেজনা থামছে না
শনিবার, ৮ অক্টোবর ২০১৬



171.jpg
বঙ্গ-নিউজঃ জুনায়েদ আখুন, ১২ বছরের কিশোর। শুক্রবার বিকালে বাড়ির ফটকে দাঁড়িয়ে দেখছিল পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ। হঠাৎ ছুটে এল শত শত ছররা গুলি। মাথা-বুক ভেসে গেল রক্তে। হাসপাতালে নেয়ার পর কয়েক ঘণ্টার চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি শিশুটিকে। শেষরাতে মৃত্যু বরণ করে জুনায়েদ।

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের সাফাকাদাল থানার সাইদাপুরাতে এ ঘটনা ঘটে। চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণার পর বিক্ষোভে ফেটে পড়ে জুনায়েদের স্বজন ও এলাকাবাসী।

শ্রীনগরের শেরে কাশ্মীর মেডিকেল সায়েন্স ইনস্টিটিউট থেকে তারা মিছিল সহকারে তার লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরে তারাপরে জনতা শ্রীনগরের বিশাল এক ঈদগাহ মাঠে জুনায়েদের নামাজে জানাজার আয়োজন করে। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ছররা গুলি ছোড়ে ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

পরে জনরোষ মোকাবেলায় শ্রীনগরের সাত থানা নওহাট্টা, খানইয়ার, রাইনাওয়ারি, সাফাকাদাল, মেহারাজ গুঞ্জ, মাইসুমা এবং বাটামালুতে সান্ধ্য আইন জারি করেছে ভারতীয় প্রশাসন।

গত ৮ জুলাই হিজবুল মুজাহেদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানি ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়। এরপর ৯২ দিন ধরে টানা বিক্ষোভ ও সহিংসতা চলছে হিমালয় উপত্যকাটিতে। এতে অন্তত ৯০ জন নিহত এবং ১০ হাজার জন আহত হয়েছে।

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু কাশ্মীরি সহিংসতা ও কারফিউ আজ তিন মাস যাবত অব্যাহত রয়েছে। দিনরাত গুলির শব্দে, সেনাবাহিনীর বুটের আওয়াজে আতঙ্কে দিন কাটছে এ উপত্যকার মানুষদের।

পাকিস্তানি মিডিয়ার মতে, ভারতীয় সেনারা তিন মাস যাবত কাশ্মীরিদের জীবনকে জাহান্নাম বানিয়ে রেখেছে। কাশ্মিরীদের কান্নার শব্দে মোদি সরকারের প্রাচীর পর্যন্ত প্রকম্পিত হচ্ছে বলে দাবি করেছে এক্সপ্রেস নিউজ উর্দু।

অনেকটা ইট পাথর দিয়েই ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়ে যাচ্ছে কাশ্মীরি তরুণরা। হাজারো কাশ্মীরি তরুণের চেহারা ক্ষত বিক্ষত। যে কোন সময় যে কোন প্রাণ উড়ে যাচ্ছে।

ভারতের একটি পত্রিকার প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, তিন মাসে একশরও বেশি কাশ্মীরি শহিদ হয়েছেন। ভারতীয় দখলদারদের ছোঁড়া গুলিতে আঠার’শর বেশি মানুষ অন্ধ হয়। এ ছাড়া আহতের সংখ্যাও অগণিত।

অপরদিকে কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত পাকিস্তানের মাঝেও চলছে চরম উত্তেজনা। যে কোন সময় যুদ্ধের ঢংকা বেজে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ইতোমধ্যে সীমান্তবর্তী মানুষরা ঘর ছাড়তে শুরু করেছেন। মুহুর্মুহু হামলা পাল্টা হামলা হচ্ছে সীমান্তে। পাক-ভারতের চলমান অস্থিরতা কমাতে বিশ্ব নেতাদেরও নজর এখন দক্ষিণ এশিয়ার দিকে।

বাংলাদেশ সময়: ২২:৩০:৩৯   ২২৩ বার পঠিত