মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর ২০১৬
তিন মাসে ১৮ শতাংশ কম এসেছে রেমিটেন্স
Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » তিন মাসে ১৮ শতাংশ কম এসেছে রেমিটেন্সবঙ্গ-নিউজঃ ব্যাংক
প্রবাসী আয়ে মন্দা কাটছে না। চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্টের পর সেপ্টেম্বরেও কমে গেছে প্রবাসী আয়। সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীরা যে পরিমাণ রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন তা আগস্ট মাসের চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ কম। সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৈরি করা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে প্রবাসীরা আগের অর্থবছরের একই মাসের চেয়ে প্রায় সাড়ে ২২ শতাংশ কম পাঠিয়েছেন। এছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) হিসাবে আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়েও প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় ১৮ শতাংশ।
অব্যাহতভাবে প্রবাসী আয় কমার কারণ হিসেবে দেশের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, জনশক্তি রফতানিতে ভাটা, অবৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোর প্রবণতা বৃদ্ধি, মার্কিন ডলারের বিপরীতে বিভিন্ন মুদ্রার দরপতন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলা রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা এর অন্যতম কারণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে প্রবাসীরা ১০৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। যা গেল অর্থবছরের একই মাসের চেয়ে ৩০ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ২২ দশমিক ৬৮ শতাংশ কম। গেল অর্থবছরের সেপ্টেম্বর মাসে রেমিটেন্স আসে ১৩৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এছাড়া চলতি অর্থবছরের আগস্ট মাসে রেমিটেন্স আসে ১১৮ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। যা আগের বছরের আগস্ট মাসে ছিল ১১৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার। রেমিটেন্স প্রবাহের গতি জুলাইতে ছিল আরও করুন।
চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে রেমিটেন্স আসে মাত্র ১০০ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। অথচ গেল অর্থবছরের একই মাসে এসেছিল ১৩৮ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। সবমিলে চলতি অর্থবছরের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রথম তিন মাসে রেমিটেন্স এসেছে ৩২৩ কোটি ২১ লাখ ডলার। যা গেল অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭০ কোটি ১৫ লাখ ডলার কম। গেল অর্থবছরের জুলাই সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ৩৯৩ কোটি ৩৬ লাখ ডলার।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার মান শক্তিশালী হওয়া ছাড়াও বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমার প্রভাবে প্রবাসী আয় কমছে। তিনি বলেন, বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে প্রবাসীদের বেতন ও মজুরি কমেছে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে জনশক্তি রফতানিতে স্থবিরতা চলছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে বেসরকারী খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ৭১ কোটি ২১ লাখ ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩০ কোটি ৮৯ লাখ, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১ কোটি ১০ লাখ এবং বিদেশি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১ কোটি ৯ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে আরও দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তার আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় আড়াই শতাংশ কম প্রবাসী আয় আসে। গেল অর্থবছরের পুরো সময়ে রেমিটেন্স আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে যা ছিল এক হাজার ৫৩১ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ সময়: ৯:৫২:০৫ ৪৩৪ বার পঠিত