সোমবার, ৩ অক্টোবর ২০১৬
স্থবির ৩৫ প্রকল্প, ১১টি বিদ্যুতের
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » স্থবির ৩৫ প্রকল্প, ১১টি বিদ্যুতেরবঙ্গ-নিউজঃ রবর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া বিদ্যুৎ বিভাগের ১১টিসহ ৩৫টি প্রকল্প স্থবির পড়ে রয়েছে।এর মধ্যে কিছু আছে গত চার বছর ধরে যার ৫ শতাংশও বাস্তবায়িত হয়নি। কিছু প্রকল্পের কাজে ৫ শতাংশ হয়নি ১০ বছরেও।
সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এডিপির তালিকাভুক্ত এই ৩৫টি প্রকল্পের তালিকা তৈরি করেছে।
স্থবির এসব প্রকল্পগুলোর জটিলতা কাটিয়ে চালিয়ে নেওয়া হবে, না কি প্রকল্পগুলো তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে, তা নিয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হবে মঙ্গলবার, যাতে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সভাপতিত্ব করবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা সচিব তারিক উল ইসলাম সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রকল্পগুলো এতই মন্থর গতির যে একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেতে হবে। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে প্রকল্পগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।”
আইএমইডি’র একজন কর্মকর্তা বলেন, “এরকম তালিকা আগেও করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হয়নি। তবে এবার একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।”
আইএমইডির কর্মকর্তারা জানান, গত মে মাসে মন্থর এবং মেয়াদোত্তীর্ণ স্থবির প্রকল্পগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় (এনইসি) উত্থাপন করে। তখন যাচাই-বাছাই করে সেখান থেকে বাদ দেওয়ার মতো প্রকল্পগুলো ঠিক করতে পরিকল্পনামন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আইএমইডি তালিকায় সবচেয়ে বেশি প্রকল্প বিদ্যুৎ বিভাগের। বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিতরণসহ মোট ১১ প্রকল্প এ তালিকায় রয়েছে।
রেলের প্রকল্প রয়েছে ৫টি। ৩টি করে প্রকল্প রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের। নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের রয়েছে ২টি। এছাড়া পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি করে প্রকল্প রয়েছে।
তালিকায় বিদ্যুৎ বিভাগের একটি প্রকল্প হচ্ছে ‘কনভারশন অব সিলেট ১৫০ মেগাওয়াট টু ২২৫ মেগাওয়াট’ প্রকল্প। চার বছর পরও এর বাস্তবায়নের অগ্রগতি শূন্য। ২০১৩ সালে অনুমোদন পাওয়ার পর থেকে ৭০৭ কোটি টাকার প্রকল্পটি এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হয়।
‘বাঘাবাড়ি ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রূপান্তর’ প্রকল্পটির চার বছর ধরে কাজ হয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। ৫১৪ কোটি টাকার প্রকল্পটিতে এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৪৫ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ বিভাগের স্থবির অন্য প্রকল্পগুলো হল- দুই হাজার ৪২৬ কোটি টাকার ন্যাশনাল পাওয়ার ট্রান্সমিশন নেটওয়াক ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, ১৯২ কোটি টাকার কাপ্তাইয়ে ৫ মেগাওয়াট সোলার ফটো ভোলটাইক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ৩১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিটি কর্পোরেশন সড়কে সোলার বাতি স্থাপন, ৯৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ডেসকো এলাকায় ১৩২/৩৩/১১ কেভি গ্রীড সব-স্টেশন নির্মাণ, ৩৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে শাহাজীবাজার ২*২ ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ১০৫ মেগাওয়াটে রূপান্তর, ১৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তর চট্টগ্রামে প্রি-পেমেন্ট মিটার সংযোগ প্রকল্প, ১৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রেপেইড মিটারিং প্রকল্প, ১ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে করস্ট্রকশন অব নিউ ১৩২/৩৩/১১ কেভি সাব -স্টেশন আন্ডার ডিপিডিসি এবং ১৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে কুমিল্লায় প্রি-পেমেন্ট মিটার সংযোগ প্রকল্প।
তালিকায় থাকা সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ২০ কোটি টাকা ব্যয়ের ‘টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পটি ২০১১ সালে অনুমোদন হলেও এখনও ১ শতাংশ কাজও এগোয়নি।
‘পশুর চ্যানেলের আউটার বারে নদী খনন প্রকল্পটি’ ২০০৬ সালে অনুমোদন দেওয়া হয়। ১৮৯ কোটি টাকার এ প্রকল্পের প্রতি অর্থবছরই এডিপি থেকে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। প্রায় ১১ বছরে এ প্রকল্পে মাত্র ৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। আর কাজের অগ্রগতি মাত্র দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্পটি বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে।
তালিকায় থাকা রেলের প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েল লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ (ব্যয় ১ হাজার ১০৬ কোটি টাকা), আশুগঞ্জ-আখাউড়ার ৩ স্টেশনের সিগন্যালিং ও ইন্টারলকিং ব্যবস্থার প্রতিস্থাপন ও আধুনিকীকরণ, কুলাউড়া -শাহবাজপুর সেকশন পূর্নবাসন প্রকল্প, ৭০টি মিটার গেজ, ডিজেল ইলেকট্রিক ও লোকমোটিভ সংগ্রহ এবং ঢাকা-চট্টগ্রামের রেলপথ উন্নয়ন প্রকল্প
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৩:০৭ ৩০২ বার পঠিত