সোমবার, ১ আগস্ট ২০১৬
অলিম্পিক যাত্রায় সাঁতার ও অ্যাথলেটিকসে কোচের বদলে সঙ্গী কর্মকর্তা
Home Page » খেলা » অলিম্পিক যাত্রায় সাঁতার ও অ্যাথলেটিকসে কোচের বদলে সঙ্গী কর্মকর্তাবঙ্গ-নিউজ: রিও দে জেনেইরো অলিম্পিকে সাঁতারু ও অ্যাথলেটদের দলের সঙ্গে কোচকে না নিয়ে সঙ্গী হচ্ছেন ফেডারেশনের কর্মকর্তা। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) মহাসচিব কোচ পাঠানোর গুরুত্ব স্বীকার করে নিয়ে জানিয়েছেন, ফেডারেশনের কর্মকর্তারা অ্যাথলেটদের সঙ্গে যেতে চাইলে তাদের ‘কিছু করার থাকে না’।
অলিম্পিকগামী ১৬ জনের দলে সাত জন অ্যাথলেটের সঙ্গে কোচ ও কর্মকর্তা নয় জন। প্রশ্ন উঠেছে সাঁতার ও অ্যাথলেটিকস দলে কোচকে না নিয়ে কর্মকর্তাকে বাছাই করায়।
আগামী ৫ অগাস্ট শুরু হতে যাওয়া অলিম্পিকে ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে অংশ নেবেন বাংলাদেশের দুই সাঁতারু মাহফিজুর রহমান সাগর ও সোনিয়া আক্তার টুম্পা। থাইল্যান্ডে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়ে ফেরার পর সাগর কোচ পার্ক দে গুনের অধীনে নিয়েছেন অলিম্পিকের প্রস্তুতি। সোনিয়াও অলিম্পিকের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার এই কোচের অধীনে। তবে পার্ক দেন গুন নন, সাঁতার দলের সঙ্গে যাচ্ছেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাফিজউদ্দিন রাফিজ।
পার্ক দে গুনের হাত ধরে বেড়ে ওঠা মাহফুজা খাতুন শিলা গত দক্ষিণ এশিয়ান গেমস থেকে দেশকে এনে দেন দুটি সোনার পদক। ওই সাফল্যের পর দেশে ফিরে ফেডারেশন কর্মকর্তাদের উপেক্ষার কড়া সমালোচনা করে কোচের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন শিলা। দীর্ঘমেয়াদে দায়িত্ব পাওয়া পার্ক দে গুন বিভিন্ন সময়ে ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসাও পেয়েছেন। কিন্তু অলিম্পিক মিশনে যেতে চাওয়া কর্মকর্তাদের চাওয়ার কাছে উপেক্ষিত দক্ষিণ কোরিয়ান এই কোচের গুরুত্ব।
সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাফিজউদ্দিন সাঁতারু ছিলেন না। কোচকে বাদ দিয়ে নিজের অলিম্পিকে যাওয়ার পেছনে যুক্তি দাঁড় করালেন তিনি।
“যদিও আমার সাঁতারের এবং ট্রেনিংয়ের কোনো অভিজ্ঞতা নেই, কিন্তু গত চার বছরে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইভেন্টে যাওয়ার সুবাদে আমি সব নিয়ম জানি। রিওতে সাঁতারুদের সহযোগিতা করতে এই অভিজ্ঞতা আমাকে সাহায্য করবে।”
২০০০, ২০০৪ ও ২০০৮ সালের অলিম্পিকে খেলা সাবেক সাঁতারু ডলি আক্তার যে কোনো প্রতিযোগিতায় সাঁতারুদের সঙ্গে কোচের যাওয়ার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেন, “কোচই একজন সাঁতারুকে পুল, টাইমিং এবং অপরিচিত পরিবেশ, সব কিছুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয় এবং এটা একজন সাঁতারুর জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।”
অ্যাথলেটিকসে মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ ও শিরিন আক্তারের সঙ্গে যাচ্ছেন না তাদের কোচ আব্দুল্লাহ হেল কাফি। টিম লিডার হয়ে যাচ্ছেন সাবেক স্প্রিন্টার শাহ আলম, যিনি কোচিং ছেড়ে বর্তমানে অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সহ-সভাপতির দায়িত্বে আছেন।
মেজবাহ-শিরিনদের সঙ্গী হয়ে ব্রাজিলে যাওয়া নিয়ে শাহ আলম সাংবাদিকদের বলেন, “যদিও আমি অন্যান্য কারণে কোচিং চালিয়ে যেতে পারিনি, কিন্তু কোচ হিসেবে আমার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। আমার অভিজ্ঞতার কারণে ফেডারেশন আমাকে মনোনীত করেছে।”
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের ট্র্যাকে রোববার অনুশীলন করা মেজবাহ ও শিরিন এ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। একই বিষয়ে কথা বলতে চাননি আব্দুল্লাহ হেল কাফিও।
আর্চারি, শুটিংয়ে অবশ্য কোচ যাচ্ছেন। আর্চার শ্যামলী রায়ের সঙ্গে কোচ নিশিথ দাস, শুটার আব্দুল্লাহ হেল বাকির সঙ্গে কোচ ক্লাভস ইয়র্ন ক্রিসটেনসেন যাচ্ছেন।
দেশের প্রথম অ্যাথলেট হিসেবে সরাসরি অলিম্পিক খেলার ইতিহাস গড়া গলফার সিদ্দিকুর রহমান যাচ্ছেন তার ক্যাডি জোহারি বিন আবু বকরকে সঙ্গে নিয়ে।
সাঁতার ও অ্যাথলেটিকসের কোচ ছাড়া যাওয়া নিয়ে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়শনের মহাসচিব শাহেদ রেজা সাংবাদিকদের বলেন, “ফেডারেশনের চাওয়া অনুযায়ী আমরা কোচ-কর্মকর্তা ঠিক করেছি। তবে অ্যাথলেটদের সঙ্গে কোচ পাঠানো সব সময়ই ভালো। যখন কোনো ফেডারেশনের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক অ্যাথলেটের সঙ্গে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন, তখন আমাদের কিছু করার থাকে না।”
সেফ দ্য মিশন হিসেবে অলিম্পিকে যাচ্ছেন ফেন্সিং ফেডারেশনের সভাপতি আবু তায়েব মুহাম্মদ জহিরুল আলম। অন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে বিওএর মহাপরিচালক ফখরুদ্দিন হায়দার যাচ্ছেন অলিম্পিক অ্যাটাশে হিসেবে।
অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম চেঙ্গিস ব্রাজিলে যাচ্ছেন ন্যাশনাল অলিম্পিক কাউন্সিলের অতিথি হিসেবে। গলফ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি এ. কে. এম আব্দুল্লাহিল বাকী যাচ্ছেন দলের টিম লিডার হিসেবে।
বাংলাদেশ সময়: ৯:২৯:৪৪ ৩৭৬ বার পঠিত