সোমবার, ১ আগস্ট ২০১৬

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নজরদারির জন্য কমিটি

Home Page » এক্সক্লুসিভ » বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নজরদারির জন্য কমিটি
সোমবার, ১ আগস্ট ২০১৬



160731142625_dhaka_ugc_presser_abdul_mannan_640x360_focusbangla_nocredit.jpg বঙ্গ-নিউজঃ বাংলাদেশে সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর জঙ্গিবাদ সম্পর্কিত বিষয়ে নজরদারির জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।
কমিশন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত আইনের সংশোধন করা উচিত বলেও মনে করছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ট্রাষ্টি বোর্ডে একজন করে সরকারি পর্যবেক্ষক রাখার বিষয়টিও চিন্তা করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।
বাংলাদেশে গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার ঘটনায় কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জড়িত থাকার অভিযোগের ওঠার পর এসব ক্যাম্পাসে সরাসরি হস্তক্ষেপের আরো ক্ষমতা চায় ইউজিসি।
কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান জানিয়েছেন, “মঞ্জুরি কমিশনে যে সক্ষমতা বা যে আইন আছে তা যদিও সীমিত তবুও শুরুতে একটি ছোট কমিটি করা হয়েছে। তা হয়ত ভবিষ্যতে আরো বড় হবে। এখন এই কমিটি যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোনো সময় পরিদর্শনে যেতে পারেন।”
“এসব ক্যাম্পাসে জঙ্গিবাদের কোন আলামত আছে কিনা বা চর্চা হয় কিনা, লাইব্রেরীতে জঙ্গিবাদ বিষয়ক বই আছে কিনা, বা কোন শিক্ষকের উগ্রবাদী কোন সংগঠনের সাথে সম্পর্ক থাকার রেকর্ড আছে কিনা সেসব বিষয়ে তারা তদন্ত করবে ও প্রতিবেদন দেবে। ক্ষমতায় থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেব, তা না-হলে আমরা মন্ত্রণালয়কে জানাবো।”
বাংলাদেশে বর্তমানে ৯৫ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন রয়েছে। তার মধ্যে ৮৫ টি চালু রয়েছে।
এসব ক্যাম্পাসে জঙ্গিবাদের কোন আলামত আছে কিনা বা চর্চা হয় কিনা, লাইব্রেরীতে জঙ্গিবাদ বিষয়ক বই আছে কিনা, বা কোন শিক্ষকের উগ্রবাদী কোন সংগঠনের সাথে সম্পর্ক থাকার রেকর্ড আছে কিনা সেসব বিষয়ে তারা তদন্ত করবে ও প্রতিবেদন দেবে
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান
বাকি গুলো অনুমোদনের অপেক্ষায়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চার লক্ষ তেষট্টি হাজারের মতো ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত ২০১০ সালের আইন অনুযায়ী কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন অনিয়মের ক্ষেত্রে সরাসরি ব্যবস্থা নেয়ার বিধান খুব সীমিত বলেই বলছিলেন মি মান্নান।
তার মতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন অনিয়ম হলে তাদের শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে কমিশনকে নির্বাহী ক্ষমতা দেয়া উচিত।
তিনি বলছেন, “একটা ব্ল্যাংকেট আইন দিয়ে সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমাদের নিজের ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা অনেক সীমিত”।
“যেমন ধরুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করতে দশ বছর লেগেছে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দেয়া হয়েছিলো ২০১০ সেটি মাত্র কয়েকদিন আগে বন্ধ করা হয়েছে তাও আবার উচ্চ আদালতের রায়ে। আমাদের এক্সিকিউটিভ ক্ষমতা দিলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারি।”
বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র রাজনীতি ও তাকে ঘিরে সহিংসতা, শিক্ষকদের রাজনীতি আর নানা অনিয়মের প্রেক্ষিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়েছিলো দুই দশকের কিছু আগে।
আর্থিকভাবে সচ্ছ্বল পরিবারগুলোই মূলত তাদের ছেলে মেয়েদের এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে থাকেন।
গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার পর হামলাকারীদের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নাম উঠে এলে সেটি ব্যাপক আলোচনার ঝড় তোলে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তার নিজস্ব ক্ষমতা থাকতে হবে। সেই স্বাধীনতা যদি অপব্যবহার করে সেটি এক জিনিস। আমার মনে হয় কমিশনের এখন যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে।
আহসানুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির ভাইস চ্যান্সেলর এএমএম শফিউল্লা
তবে কমিশনের আরো হস্তক্ষেপের ব্যাপারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের খুব একটা সায় নেই বলে মনে হচ্ছে।
আহসানুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির ভাইস চ্যান্সেলর এএমএম শফিউল্লা মনে করেন, কমিশনের এখনই যথেষ্ট ক্ষমতা আছে।
তার মতে, “বিশ্ববিদ্যালয়ের তার নিজস্ব ক্ষমতা থাকতে হবে। সেই স্বাধীনতা যদি অপব্যবহার করে সেটি এক জিনিস। আমার মনে হয় কমিশনের এখন যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এব্যাপারে পরামর্শ দিতে পারে। তারা এ্যাডভাইজরি বডি হলেই ভাল হয়।”
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত ২০১০ সালের আইন অনুযায়ী কমিশন আর্থিক ও প্রশাসনিক বিষয়ে তদন্ত করতে পারে ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করতে পারে।
মঞ্জুরি কমিশন অবশ্য তার ক্ষমতা আরো বাড়াতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত আইনের সংশোধন করা উচিত বলে মনে করছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ট্রাষ্টি বোর্ডে একজন করে সরকারি পর্যবেক্ষক রাখার বিষয়টিও চিন্তা করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।

বাংলাদেশ সময়: ০:৩১:৫৩   ৫০৮ বার পঠিত