মঙ্গলবার, ২১ জুন ২০১৬
ঋণের উচ্চ সুদ গার্মেন্টস সংস্কারে প্রধান বাধা
Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » ঋণের উচ্চ সুদ গার্মেন্টস সংস্কারে প্রধান বাধাবঙ্গ-নিউজঃ
গার্মেন্টস খাতে এখনো অনেক সংস্কার বাকী রয়েছে। মূলত অর্থায়ন সংকটের কারণে সংস্কার প্রক্রিয়া কাঙ্ক্ষিত গতি পাচ্ছে না। সংস্কারের জন্য ঋণের উচ্চ সুদই এর অন্যতম কারণ। এ ঋণের সুদ ক্ষেত্রবিশেষে ৯ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত হচ্ছে। ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য এ ঋণ লাভজনক হচ্ছে না। সেই সঙ্গে ছোট কারখানার উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে ঋণ এবং আর্থিক জ্ঞানের অভাবও ঋণ পেতে বাধা হিসেবে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) পরিচালিত এক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতের সংস্কার প্রক্রিয়া পিছিয়ে থাকার কারণ অনুসন্ধানের লক্ষ্যে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। গতকাল সোমবার বাংলাদেশের পোশাক খাতে সংস্কার অর্থায়ন শীর্ষক ওই প্রতিবেদন রাজধানী একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। ইমারজিং মার্কেট কনসালটিংয়ের প্রতিনিধি বেরেনারডো কনট্রি প্রতিবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানান, পোশাক খাতের সংস্কারের লক্ষ্যে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা, আইএফসিসহ কয়েকটি দাতা সংস্থা নামমাত্র সুদে ঋণ দিচ্ছে। এ ঋণের সুদ এক শতাংশেরও কম। অথচ বিভিন্ন ঘাটে ঘাটে মুনাফা নেয়ার পর উদ্যোক্তার হাতে আসতে এ ঋণের সুদর হার কয়েক গুণ হয়ে যাচ্ছে। এ থেকে মুনাফার অংশ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং ঋণদানকারী বাণিজ্যিক ব্যাংক। ফলে এ ঋণ উদ্যোক্তাদের কাছে গুরুত্ব হারিয়েছে। সেই সঙ্গে ঋণ প্রাপ্তির জটিলতাও রয়েছে। এসব কারণে জাইকা থেকে গত তিন বছরে মাত্র ১টি কারখানা ঋণ পেয়েছে। কর্মংস্থান এবং বিদেশি মুদ্রা আয়ের বড় খাতের বিবেচনায় পোশাক খাতের সংস্কার অর্থায়নকে সাধারণ বাণিজ্যিক ঋণের মত করে বিবেচনা না করার জন্য বিশেষজ্ঞরা আহ্বান জানান।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংস্কার অর্থায়নে ঋণের সুদ ৯ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১৮ শতাংশ পর্যন্ত গুণতে হয় উদ্যোক্তাদের। এছাড়া অডিটেড ব্যালেন্স সিট, লাভ-ক্ষতির আর্থিক বিবৃতি সংক্রান্ত অন্যান্য আর্থিক বিষয়ে উদ্যোক্তাদের দুর্বলতা আছে। তা সত্বেও গত দুই বছরে সংস্কারের পেছনে কারখানা মালিকরা নিজেদের অর্থায়নে প্রায় ৩০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থ ব্যয় করেছে। এসব কারখানার অ্যাকর্ড এবং অ্যালায়েন্সভুক্ত কারখানা। সংস্কারের জন্য এখনো প্রায় ৬৪ কোটি ডলার প্রয়োজন। সংস্কার অর্থায়নে আইএফসি, জাইকা, ইউএসএআইডি ও এফডি’র মত আন্তর্জাতিক দাতা সস্থার মাধ্যমে ১৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের সংস্থান করা সম্ভব হয়েছে। এখনো প্রায় ৪৫ কোটি ডলারের প্রয়োজন।
এ সময় জানানো হয়, সংস্কারের জন্য কারখানা প্রতি প্রয়োজন হচ্ছে সর্বনিম্ন ২০ হাজার ডলার থেকে ৯ লাখ ডলার পর্যন্ত। ৮০ শতাংশ কারখানার সংস্কার ব্যয় এক লাখ থেকে আড়াই লাখ ডলারের মধ্যে। সংস্কার অর্থায়নে দাতারা নামমাত্র সুদ নেয়। সংস্কার শুরুর পর গত ৩ বছরে ঋণ পাওয়া কারখানার সংখ্যা ২০টি। অবশ্য এ তথ্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান। তিনি বলেন, জাইকার তহবিল থেকে মাত্র একটি কারখানা ঋণ পেয়েছে। উচ্চ সুদ ছাড়াও ব্যাংকগুলো ছোট কারখানাকে সহযোগিতা করছে না। সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সংস্কার অর্থায়ন ঋণকে সাধারণ বাণিজ্যিক ঋণ থেকে আলাদা করে ভাবতে হবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ০:৪৮:০৫ ৩৮৮ বার পঠিত