শনিবার, ১৮ জুন ২০১৬

আরামবাগ ২ (৫): ২ (৪) শেখ জামাল আরামবাগে স্বপ্নভঙ্গ শেখ জামালের

Home Page » খেলা » আরামবাগ ২ (৫): ২ (৪) শেখ জামাল আরামবাগে স্বপ্নভঙ্গ শেখ জামালের
শনিবার, ১৮ জুন ২০১৬



দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত সাডেন ডেথে স্মরণীয় জয়। ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালের টিকিট হাতে পেয়ে তাই আরামবাগের ফুটবলারদের আনন্দটা হলো বাঁধভাঙা। কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে l প্রথম আলো

বঙ্গ-নিউজঃ

আরামবাগের আনন্দ দেখে মনে হচ্ছিল বিশাল কিছু করে ফেলেছে! সেটা হয়তো নয়। তবে ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে ওঠাই বা কম কী! গত দুবারের চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডির বিপক্ষে জয়ে আনন্দ তো বাড়বেই।
এমনিতে বড় দলকে হারালে মাঝারি বা ছোট দলগুলোর আনন্দের সীমা থাকে না। জয়টা যদি আসে দুই গোলে পিছিয়ে থেকে, টাইব্রেকারের প্রথম শট নষ্ট করেও…তাহলে তো কথাই নেই! এমন চিত্রনাট্যই কাল মঞ্চস্থ হলো বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে পড়ন্ত বিকেলে।
শেখ জামালের বিকেলটা গেল বিষণ্ন। তবে এ জন্য নিজেদেরই শুধু দুষতে পারে দলটি। কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক তাই ডাগ-আউটে নিথর বসে ছিলেন, শুধু বলতে পারলেন, ‘দুই গোলে এগিয়েও এভাবে হার অকল্পনীয়। এত সুযোগ নষ্ট মেনে নেওয়া কঠিন, কষ্টদায়কও।’
আরামবাগ কোচ সাইফুল বারী টিটু তখন ‘মানিক ভাই’কে হারিয়ে গর্বিত! হার না-মানা মানসিকতা, প্রতিপক্ষের ভুল কাজে লাগানো এবং টাইব্রেকারে ভাগ্যের ছোঁয়া-সবকিছুই টিটুর পক্ষে গেল। শীর্ষ ফুটবলে ফিরে তাঁর অধীনে এখন পর্যন্ত আট ম্যাচে অদম্য আরামবাগের হার মাত্র এক, পাঁচ ড্র, দুই জয়। শেখ জামালকে হারিয়ে মূল্যবান দ্বিতীয় জয়টি তুলে টিটু বলছিলেন, ‘এ ধরনের ম্যাচ জিততে ভাগ্যের সহায়তা লাগে। সেটি আমরা পেয়েছি।’
অথচ প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে আরামবাগ। ৪২ মিনিটে ফাঁকায় লক্ষ্যভেদ ডিফেন্ডার লিংকনের। তিন মিনিট পরই গত দুটি ফেডারেশন কাপের ফাইনালের সেরা ওয়েডসন করলেন ২-০। সেমিফাইনালটা দৃষ্টিসীমায় আসাতেই কিনা দুলকি চালে খেলতে থাকল জামাল। রক্ষণ ভেঙে পড়ল, যার মাশুল গুনে দুই গোল হজম।
২-২ হওয়ার পরও চার-পাঁচটি সহজ সুযোগ হেলায় হারালেন ল্যান্ডিং, ওয়েডসন, এমেকারা। কখনো বাইরে মেরে, কখনো আরামবাগ গোলরক্ষকের হাতে তুলে দিয়ে। গোলের জন্য স্ট্রাইকার তরুণ রাকিব সরকারকে নামালেন মানিক, অতিরিক্ত সময়ে ফাঁকা পোস্টেও সুযোগ নষ্ট করে রাকিব নিজেকে ক্ষমা করতে পারছিলেন না ম্যাচ শেষে।
প্রতিপক্ষের ব্যর্থতা কাজে লাগিয়ে আরামবাগ দ্রুতলয়ে, হৃদয় দিয়ে খেলেছে। এলাকার অনেকের সঙ্গে মাঠে এলেন ক্যানসারে আক্রান্ত আরামবাগের সাবেক ফুটবলার চলচ্চিত্র অভিনেতা কাবিলাও। তাঁদের উৎসাহ-উদ্দীপনা বৃথা যায়নি।
৬১ মিনিটে ২-১ করেন ইয়োকো। সেই উত্তেজনা থাকতে থাকতেই ২-২। ৬৯ মিনিটে আরামবাগের ‘নাম্বার টেন’ কেস্টার আকন জামালের দুই ডিফেন্ডারকে ছিটকে ফেলে প্লেসিং করলেন ঠান্ডা মাথায়।
এমন ম্যাচ ছোট দল টাইব্রেকারে নিয়ে যেতে চায়। আরামবাগও সেটিই করেছে। ঘটনাচক্রে গতবার ফেডারেশন কাপের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালেও স্কোরলাইন ছিল ২-২। সেবার শেখ জামালের প্রতিপক্ষ ছিল ব্রাদার্স। টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে জেতে জামালই। এবারও একই ফল! তবে পরাজিত দলটির নাম শেখ জামাল।
টাইব্রেকারে ইয়েকোর প্রথম শট ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন জামাল গোলরক্ষক মোস্তাক। এরপর ম্যাচসেরা আরামবাগের গোলরক্ষক ও অধিনায়ক মিতুল হাসান আটকে দেন জামালের এনামুলের তৃতীয় শটটি। ৪-৪ টাইব্রেকারে শেখ জামালের গোলদাতা এমেকা, ওয়েডসন, ইয়াছিন, ল্যান্ডিং। আরামবাগের ইসা, পলাশ, ভাসানী, আকন। টান টান উত্তেজনায় সাডেন ডেথে আরামবাগের মনসুর গোল করলেও বাইরে মেরেছেন জামালের ডিফেন্ডার কেষ্ট। সঙ্গে সঙ্গে আরামবাগের জয়ে ভোঁ-দৌড় দিয়ে মেতে ওঠেন উৎসবে।
আজকের খেলা: কোয়ার্টার ফাইনাল: শেখ রাসেল-রহমতগঞ্জ (বিকেল ৩-৪৫ মি., বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম)।

বাংলাদেশ সময়: ৯:৪৮:৩৯   ৩৫১ বার পঠিত