শনিবার, ১৮ জুন ২০১৬
ভালো থাকুন শিশুর যখন ইনফ্লুয়েঞ্জা
Home Page » স্বাস্থ্য ও সেবা » ভালো থাকুন শিশুর যখন ইনফ্লুয়েঞ্জাবঙ্গ-নিউজঃ
শিশুরা সব মৌসুমেই ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। তবে বয়স ভেদে উপসর্গ ভিন্ন হয়। ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণে নবজাতকের আকস্মিক জ্বর, নিস্তেজ ভাব, মায়ের দুধ খেতে অনীহা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। এগুলোকে নিউমোনিয়ার লক্ষণের মতো মনে হতে পারে। তবে ভাইরাসজনিত রোগের শুরুতে সর্দি, নাক বন্ধ ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়।
আবার খুব বেশি জ্বর, নাক থেকে সর্দি ঝরা, খিঁচুনি, বমি, ডায়রিয়া, ফুসকুড়ি বা র্যাশ-এসব লক্ষণ নিয়ে অল্পবয়সী শিশুদের ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রকাশ পেতে পারে। একটু বড় শিশুদের ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই, যেমন হঠাৎ জ্বর, চোখ-মুখ লাল, কাঁপুনি, মাথাব্যথা, সারা গায়ে ব্যথা, দুর্বলতা থাকে। জ্বরের মাত্রা ১০২ থেকে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত পৌঁছায়। পাশাপাশি শুকনো কাশি, সর্দি ভাব, গলাব্যথা, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখ জ্বলা, চোখে ব্যথা এবং ডায়রিয়াও থাকতে পারে। জ্বর সাধারণত দু-তিন দিন বা কখনো পাঁচ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। আর কাশি ৪ থেকে ১০ দিন থাকতে পারে।
ভাইরাসজনিত ইনফ্লুয়েঞ্জা কখনো কখনো বেশি জটিল হয়ে ওঠে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়ায় ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। ফলে শিশু নিউমোনিয়া, কানপাকা, সাইনোসাইটিস এবং কখনো মস্তিষ্কে সংক্রমণের সমস্যায় পড়তে পারে। ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত শিশুকে অ্যাসপিরিন-জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো হলে ‘রি-ই সিনড্রেম’ নামের সাংঘাতিক রোগ হওয়ার ঝুঁকি দেখা যায়।
কী করবেন?
শিশুর স্বাভাবিক খাবার চালু থাকবে। ছোট শিশুরা অবশ্যই মায়ের দুধ খাওয়া অব্যাহত রাখবে।
জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল সেবন করা যায়, কিন্তু শিশুকে কখনোই অ্যাসপিরিন-জাতীয় ওষুধ দেওয়া যাবে না।
শুকনো কাশি কমাতে কিছু ওষুধ, মধু মেশানো পানি, গরম লেবু-পানি ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে।
অযথা অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের দরকার নেই। তবে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সন্দেহ হলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। অসুখের প্রথম দিকে কিছু সুনির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাস ওষুধে সুফল পাওয়া যায়। নিউমোনিয়া, এনকেফালাইটিস প্রভৃতি মারাত্মক জটিলতা বাদ দিলে সাধারণভাবে ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত বেশির ভাগ শিশু সুস্থ হয়ে ওঠে। এই ভাইরাস প্রতিরোধক নিরাপদ ও কার্যকর টিকাও তৈরি হয়েছে।
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
বাংলাদেশ সময়: ৯:৪৪:৪৫ ৩১৫ বার পঠিত