শনিবার, ১৮ জুন ২০১৬

মেলার নামে আমদানি করা শুল্কমুক্ত পণ্য খোলাবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত দেশি উদ্যোক্তারা, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » মেলার নামে আমদানি করা শুল্কমুক্ত পণ্য খোলাবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত দেশি উদ্যোক্তারা, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
শনিবার, ১৮ জুন ২০১৬



মেলার নামে আমদানি করা শুল্কমুক্ত পণ্য খোলাবাজারে

বঙ্গ-নিউজঃ

মেলা আয়োজনের নামে ভারত এবং পাকিস্তান থেকে কাপড় এনে বাংলাদেশের বাজারে দেদারছে বিক্রি করছে একটি অসাধু চক্র। সাধারণত নারীদের পছন্দসই থ্রি-পিস, লেহেংগা, কটি, শাড়ি, শাল, স্যান্ডেল ইত্যাদি পাওয়া যাচ্ছে এসব মেলায়। এসব পণ্য সাধারণত বিনা শুল্কে নিয়ে আসা হয়। নামী দামী হোটেল এবং কনভেনশন সেন্টারে সেগুলো প্রদর্শন করা হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিক্রেতারা মেলায় প্রদর্শিত পণ্যগুলো সাধারণ ক্রেতাদের কাছে যেমন বিক্রি করছে আবার বড় বড় শপিং মলের দোকানিদের কাছেও পাইকারি দরে বিক্রি করছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এসব অসাধু তত্পরতার জন্য সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আবার দেশের দোকানিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সবচেয়ে বড় ক্ষতি হচ্ছে দেশীয় পোশাক শিল্প মালিকদের।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বড় ধরনের মেলার আয়োজন করেছে একটি সংগঠন। প্রায় ৫০টি দোকান বসানো হয়েছে সেখানে। এসব দোকনের সব পণ্যই ভারত এবং পাকিস্তান থেকে নিয়ে আসা হয়েছে বিনা শুল্কে। এখানে স্টল দিয়েছে দ্রুপদি নামের একটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান। মূলত: এটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান হলেও তাদের স্টলে পাওয়া যাচ্ছে সব ভারতীয় কাপড়। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার লাইছুদ্দিন হায়দার জানালেন, এখনো বিক্রি তেমন জমে উঠেনি। সামনে ঈদের বেতন বোনাস হলে বিক্রি জমবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। শুল্কমুক্তভাবে পণ্য এনে তা খোলাবাজারে বিক্রি করতে পারেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সরাসরি পণ্য নিয়ে আসি না। কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তা সংগ্রহ করি। তবে শুল্কমুক্ত পণ্য খোলাবাজারে বিক্রি করা আইনসিদ্ধ নয় বলে স্বীকার করেন তিনি।

অপর প্রতিষ্ঠান কাশ্মীর স্মাইলের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শামীম আহমেদ জানান, তাদের বিক্রি ভালোই হচ্ছে। তাদের স্টলে বিভিন্ন প্রকার কাশ্মিরী শাল, বেড কভার, কুশন কভার ইত্যাদি পাওয়া যাচ্ছে। তিনি জানান, মেলা চলবে ৩০ জুন পর্যন্ত। তাদের প্রতিষ্ঠান শুল্ক দিয়ে পণ্য এনেছে কিনা তা তিনি বলতে অস্বীকৃতি জানান।

মেলায় বিভিন্ন প্রকার হারবাল পণ্যের পসরা সাজিয়েছে সিন্ধিয়া এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির মুখ্য পরিচালন কর্মকর্তা সারমাদ মানসুর বলেন, তারা এখানে ভারতীয় এবং দেশীয় বিভিন্ন হারবাল পণ্য বিক্রি করছেন। তার দাবি, ভারতীয় পণ্যগুলোর সবগুলোই তিনি শুল্ক দিয়ে এনেছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিদেশি কাপড় আনতে শুল্কের হার একশ ভাগের বেশি। এসবের মধ্যে রয়েছে আমদানি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ইত্যাদি। বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের পাশাপাশি গুলশানের হোটেল আমারিতেও এ ধরনের মেলা চলছে।

এদিকে শুল্কমুক্ত বিদেশি পণ্য দেশীয় বাজারে বিক্রি করার ফলে দেশীয় শিল্পও মার খাচ্ছে। প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান পথে বসতে চলেছে। দেশীয় প্রতিষ্ঠান ইনফিনিটির পরিচালক নাইমুল হক ইত্তেফাককে বলেন, এ ধরনের তত্পরতা বন্ধ করতে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের কঠোরভাবে নজরদারি করা উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ৯:৪১:২২   ৩৪৯ বার পঠিত