সোমবার, ১৩ জুন ২০১৬

বাংলাদেশী হিন্দুরা ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ চায়

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » বাংলাদেশী হিন্দুরা ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ চায়
সোমবার, ১৩ জুন ২০১৬



বাংলাদেশী হিন্দুরা ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ চায়

বাংলাদেশী হিন্দুরা ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ চায়

‘ঝুঁকিতে’ থাকা বাংলাদেশী হিন্দুরা তাদের নিরাপত্তার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও দেশটির সরকারের হস্তপে কামনা করেছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই। খবরটি প্রকাশিত হয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইন ও হিন্দুস্তান টাইমসে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ধারাবাহিক হামলার প্রেেিত তারা চান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ভারত সরকার যেন বিষয়টি ঢাকার কাছে তুলে ধরে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও মানবাধিকার কর্মী রানা দাসগুপ্ত পিটিআইকে বলেছেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হলো হিন্দুরা। এ সম্প্রদায়টি বাংলাদেশে ঝুঁকির মুখে। মৌলবাদী ও জামায়াতিরা বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের মূলোৎপাটনের চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে ভারত এ েেত্র কিছু করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আমাদের বড় আশা রয়েছে। তার উচিত এ বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তুলে ধরে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, ১০ জুন হিন্দুদের আশ্রমের সেবক নিত্যরঞ্জন পান্ডেকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্দেহজনক ইসলামপন্থীরা। এ নিয়ে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে ধর্মনিরপে কর্মীদের ওপর ধারাবাহিক হামলার চতুর্থ শিকার হলেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এ ব্যক্তি।
রানা দাসগুপ্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের একজন প্রসিকিউটরও। তিনি বলেছেন, ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ ও মৌলবাদী গ্রুপগুলো হিন্দু সম্প্রদায়কে সমূলে উৎপাটন করতে চায়। দুই বছর ধরে ধর্মীয় এই তৎপরতার আরো অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশকে একটি মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হতে দিয়ে স্থিতিশীল ভারত উপমহাদেশ অর্জন করা কখনো সম্ভব হবে না। তাই ভারত যদি এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা চায় তাহলে আমাদের দেশে (বাংলাদেশে) সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে বিনাশ করা বন্ধ করতে তাদের পদপে নিতে হবে।
ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে একজন পুরোহিত, একজন খ্রিষ্টান দোকানি, একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীসহ এক সপ্তাহে নিত্যরঞ্জন পান্ডেকে হত্যা করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে উগ্রপন্থীরা একটি মন্দিরের পুরোহিতকে কুপিয়ে হত্যা করে। তার সহায়তায় এগিয়ে যাওয়া এক ভক্তকে গুলি করে আহত করে। এপ্রিলে উদারপন্থী একজন প্রফেসরকে রাজশাহীতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। একই মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন দর্জিকে হত্যা করা হয় তার দোকানের ভেতর। বাংলাদেশে প্রথম এলজিবিটি সম্প্রদায়ের ম্যাগাজিনের সম্পাদক ও তার এক বন্ধুকে ইসলামপন্থীরা ঢাকায় তার বাসায় হত্যা করেছে। এ ছাড়া ২০১৫ সালে বাংলাদেশে ধর্মনিরপে ও উদারপন্থী ব্লগারদের ওপর ধারাবাহিক হামলা হয়েছে।
‘বাংলাদেশে হিন্দুদের অবস্থা ভয়াবহ। যদিও আমাদের ধর্মনিরপে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার রয়েছে, তবু তৃণমূল পর্যায়ে পরিস্থিতি নির্মম। ধর্ষণ, হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সহায় সম্পত্তির তিসাধন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।’ বাংলাদেশের সুপরিচিত অভিনেতা ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বাংলাদেশের ওপর ভারত চাপ সৃষ্টি না করলে মৌলবাদীদের থামানো যাবে না। তিনি আরো বলেন, এ অঞ্চলে ভারত একটি বড় শক্তিধর দেশ। প্রতিবেশী দেশে যখন হিন্দুদের নৃশংসভাবে জবাই করা হয় ভারত তখন অলস বসে থাকতে পারে না। পুরোহিতকে হত্যার পর বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশন তাদের কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছে নিহতের পরিবার ও আশ্রমের সহযোগীদের সাথে সাাৎ করতে। কমিশনের দ্রুত এ পদেেপর প্রশংসা করেছেন পিযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রানা দাসগুপ্ত। তারা বলেছেন, ভারতকে এর চেয়ে বেশি কিছু করতে হবে। মানবাধিকার গ্রুপ ও বাংলাদেশের হিন্দু নেতারা দাবি করছেন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের আরো নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। ধর্মীয় সংখ্যালঘু নেতারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিষয়ে ভারতের হস্তপে কামনা করার পাশাপাশি বাংলাদেশের একজন সিনিয়র মন্ত্রী মনে করছেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা আসলে ধর্মনিরপে ও উদার আওয়ামী লীগ সরকারের সামনে বাধা সৃষ্টির জন্য করা হচ্ছে। ঢাকা থেকে টেলিফোনে পিটিআইকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, প্রকৃতপে এর জন্য দায়ী মৌলবাদী ও জামায়াত চক্র। তারা বাংলাদেশের খারাপ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে চায়। এসব হামলা সংখ্যালঘুদের উদ্দেশ্য করে নয়, বরং আসল টার্গেট হলো আমাদের সরকারের তি করা এবং আমাদের দেশকে একটি মৌলবাদী দেশে পরিণত করা। আমরা কখনো তা হতে দিতে পারি না। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা এরই মধ্যে বেশ কিছু পদপে নিয়েছি।
তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, হিন্দুদের নিরাপত্তা রায় ভারত যদি পদপে নেয় তাহলে ঢাকা কী করবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের বন্ধু। যদি ভারত বিষয়টি আমাদের কাছে তুলে ধরে আমরা আলোচনা করব। এতে তির কিছু নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১২:২৬:০১   ৫০৬ বার পঠিত