সোমবার, ১৬ মে ২০১৬
নোয়াখালীতে ইউপি সচিবকে পিটালেন চেয়ারম্যান!
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » নোয়াখালীতে ইউপি সচিবকে পিটালেন চেয়ারম্যান!
বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ
কার্ডধারী জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের সময় বাধা দেওয়ায় নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপের চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিবকে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ সময় সচিবকে প্রায় চার ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। এক পর্যায়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় কৌশলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বেরিয়ে আসেন সচিব। রবিবার দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে।
সোমবার ইউপি সচিব ছিদ্দিকুর রহমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগ নোয়াখালীর উপ-পরিচালককে বিষয়টি অবহিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, মেহরাজ নিঝুম দ্বীপে বন ধ্বংস ও হরিণ নিধনের মূল হোতা।
স্থানীয়রা জানান, এখনও বন ধ্বংস করে যাচ্ছেন মেহরাজ। এরই মধ্যে গত রবিবার ইউনিয়ন পরিষদের সচিবকে পিটিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিলেন তিনি। ওই দিন কার্ডধারী জেলেদের মধ্যে সরকারিভাবে বিনামূল্যে চাল বিতরণ করার কথা ছিল। ওয়ার্ড ভিত্তিক ইউপি সদস্যদের তালিকাভুক্ত ৩৮৯ জন কার্ডধারী জেলের মধ্যে এ চাল বিতরণ শুরু হয়। হঠাৎ দুপুরে চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন তার মনগড়া একটি তালিকা এনে সচিবকে বলেন, ওই তালিকায় টিপসই নেওয়া এবং চালগুলো তার লোকজনকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে। এতে সচিব তার পক্ষে এ অনিয়ম করা সম্ভব নয় বলার সঙ্গে সঙ্গে চেয়ারম্যান সচিবের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। সচিব অশোভন আচরণের প্রতিবাদ করায় উপস্থিত ইউপি সদস্য ও কার্ডধারী জেলেদের সামনেই তাকে বেধড়ক মারধর করেন চেয়ারম্যান মেহরাজ। তার এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথিতে সচিবের শরীরের বিভিন্ন স্থান থেতলে যায়। পরে সচিবকে তার কক্ষে প্রায় চার ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, জেলেদের ৮০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা ছিল। পরে সচিবকে আটকে রেখে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তার ক্যাডাররা ৩০ থেকে ৩৫ কেজি করে চাল বিতরণ করে বাকিটা নিজেরা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সচিব স্থানীয়দের সহযোগিতায় কৌশলে পরিষদ থেকে বের হয়ে হাতিয়া উপজেলা শহরে চলে আসেন।
ভুক্তভোগী সচিব ছিদ্দিক আহমেদ জুয়েল বলেন, চেয়ারম্যানের ভুয়া তালিকা অনুযায়ী চাল দিতে অস্বীকার করা এবং তার অশোভন আচরণের প্রতিবাদ করায় তাকে বেদম মারধর করেছেন চেয়ারম্যান। তিনি কৌশলে পরিষদ থেকে বের হয়ে রাতে উপজেলা শহরে এসে ডাক্তার দেখান এবং বিষয়টি তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। এ বিষয়ে সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দেন। একই সঙ্গে বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালককেও অবহিত করেন।
সচিবকে মারধর ও চাল বিতরণে অনিয়মের কথা অস্বীকার করেন চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন ওরফে মেহরাজ পার্টি। তিনি বলেন, কয়েকজন জেলে অভিযোগ করেন সচিব তাদের চাল দিচ্ছে না, বলেছে চাল নাকি অন্য কেউ তার নাম করে নিয়ে যায়। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সচিবের কাছে বিষয়টি জানতে চান তিনি। কিন্তু সচিব এর কোনো সদূত্তর না দিয়ে উল্টো তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং তার সামনে খাতাপত্র ছুঁড়ে ফেলে দেন। এতে সচিব ও তার মধ্যে কিছুটা কথা কাটাকাটি হয়েছে। এক পর্যায়ে তালিকাভুক্তদের মধ্যে চালগুলো তিনি উপস্থিত থেকে বিতরণ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩০:৪৯ ৫৭৯ বার পঠিত